শেষবারের মতো আসামে ফিরলেন জুবিন
শনিবার রাত থেকেই অপেক্ষায় ছিলেন আসামবাসী। শেষবারের মতো ফিরবেন তাঁদের গর্ব জুবিন গার্গ। ভোর থেকেই বিমানবন্দরে ভিড় বাড়তে থাকে। রোববার সকালে গুয়াহাটি লোকপ্রিয় গোপীনাথ বরদলই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছায় তাঁর মরদেহ। স্ত্রী গরিমা গার্গ এবং আসাম সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বিমানবন্দরে উপস্থিত থেকে মরদেহ গ্রহণ করেন। এরপর ফুলে সাজানো অ্যাম্বুলেন্সে মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় ভিআইপি গেট দিয়ে।
শোকযাত্রায় অ্যাম্বুলেন্সের ঠিক সামনে ছিলেন আসামের ডিরেক্টর জেনারেল অব পুলিশ হারমিত সিং ও গুয়াহাটি পুলিশ কমিশনার পার্থসারথি মহান্ত। জুবিনের প্রিয় খোলা জিপ গাড়িও এর অংশ ছিল, যেটি দিয়ে গায়ক প্রায়ই কনসার্টে যেতেন। সামনে লাগানো ছিল বিশাল প্রতিকৃতি। জুবিনের সংগীতশিল্পীদের দলও গাড়িটিতে ছিল।
পুরো যাত্রায় গান গেয়ে, স্লোগানে চিৎকার করছিলেন ভক্তরা ‘জয় জুবিনদা’। অশ্রুসিক্ত চোখে অনেকেই চিৎকার করে বলছিলেন, ‘কেন জুবিনদা, এত তাড়াতাড়ি কেন চলে গেলে’। তাঁদের হাতে ছিল গায়কের কাটআউট।
আসামজুড়ে মানুষ গুয়াহাটিতে ছুটে এসেছেন প্রিয় শিল্পীর প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানাতে। শনিবার রাত থেকেই অনেকে জড়ো হতে শুরু করেন অর্জুন ভোগেশ্বর বরুয়া ক্রীড়া কমপ্লেক্সের সামনে। যেখানে সকাল ৯টা থেকে সাধারণ মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য রাখা হয়েছে তাঁর মরদেহ, সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত সেখানেই চলবে শ্রদ্ধা নিবেদন।
এর আগে মরদেহ প্রথমে নেওয়া হয় কাহিলিপাড়ায় গায়কের বাড়িতে। সেখানে প্রায় দেড় ঘণ্টা মরদেহ রাখা হয়। সেখানে তাঁর ৮৫ বছর বয়সী বাবা থেকে পরিবারের সদস্যরা কান্নায় ভেঙে পড়েন।
জুবিনের শেষকৃত্যের স্থান নিয়ে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি। রোববার সন্ধ্যায় আসাম মন্ত্রিসভা বৈঠকে বিষয়টি নির্ধারণ করা হবে জানিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা।
শনিবার মধ্যরাতে সিঙ্গাপুর থেকে দিল্লিতে পৌঁছায় জুবিনের মরদেহ। মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা বিমানবন্দরে মরদেহ গ্রহণ করে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী পবিত্র মার্ঘেরিটা ও দিল্লিতে নিযুক্ত আসাম সরকারের শীর্ষ কর্মকর্তারা। সেখান থেকে ভোর ৪টা ৩০ মিনিটে বিমানে গুয়াহাটি আনা হয়।
শুক্রবার সিঙ্গাপুরে এক স্কুবা ডাইভিং দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে জুবিনের। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের বরাতে ইন্ডিয়া টুডে জানিয়েছে, দুর্ঘটনার পর সিঙ্গাপুর পুলিশ তাঁকে সমুদ্র থেকে উদ্ধার করে দ্রুত নিকটবর্তী হাসপাতালে নিয়ে যায়। নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে রাখলেও চিকিৎসকেরা তাঁকে আর বাঁচাতে পারেননি। তাঁর বয়স হয়েছিল ৫২ বছর।
তথ্যসূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস