কানাডায় আবার গুলি! পাঞ্জাবি গায়কের বাসায় হামলার দায় নিল লরেন্স বিষ্ণোই চক্র
কানাডায় বসবাসরত এক পাঞ্জাবি সংগীতশিল্পীর বাসায় আবার গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। সাম্প্রতিক সময়ে পাঞ্জাবি শিল্পীদের লক্ষ্য করে এমন একাধিক হামলার পর এবার নিশানায় এসেছেন জনপ্রিয় গায়ক চন্নি নট্টন। তাঁর বাসায় গুলি চালানোর ঘটনার দায় স্বীকার করেছে কুখ্যাত গ্যাংস্টার লরেন্স বিষ্ণোইয়ের সহযোগী গোল্ডি ধিল্লোঁ। গত মঙ্গলবার গভীর রাতে কানাডায় তাঁর বাসায় গুলি চালানো হয়। পুলিশের প্রাথমিক ধারণা, শিল্পীদের ভয় দেখানো ও হুমকি দেওয়ার উদ্দেশ্যেই এই হামলা চালানো হয়েছে। এ ঘটনায় স্তব্ধ ভারতের সংগীত অঙ্গন।
ক্রমাগত হামলার শিকার শিল্পীরা
কানাডায় বসবাসরত পাঞ্জাবি গায়ক ও উদ্যোক্তাদের ওপর গ্যাংস্টারদের হামলা বেড়েই চলেছে। একের পর এক গুলিবর্ষণের ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে সংগীতজগতে। কিছুদিন আগেই জনপ্রিয় গায়ক তেজি কহলোঁর বাসায় একদল অস্ত্রধারী হামলা চালায়। তারও আগে কমেডিয়ান ও অভিনেতা কপিল শর্মার ‘ক্যাপস ক্যাফে’ তিন দফা গুলিবর্ষণের মুখে পড়ে। এবার সেই আতঙ্কের তালিকায় যুক্ত হলো চন্নি নট্টনের নাম।
দায়ভার নিলেন গোল্ডি ধিল্লোঁ
ঘটনার পরপরই লরেন্স বিষ্ণোই চক্রের সদস্য গোল্ডি ধিল্লোঁ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করে হামলার দায় স্বীকার করেন। তিনি লেখেন, ‘চন্নি নট্টনকে আঘাত করার কোনো উদ্দেশ্য ছিল না, কেবল সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছিল।’ গোল্ডির দাবি, চন্নি নট্টন সম্প্রতি গায়ক সরদার খেহরার ঘনিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন, আর সেই কারণেই তাঁকে ‘শিক্ষা’ দিতে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ধিল্লোঁ আরও সতর্ক করেন, ভবিষ্যতে কোনো শিল্পী যদি খেহরার সঙ্গে কাজ করেন বা সম্পর্ক রাখেন, তাঁদের পরিণামও ভয়াবহ হবে।
ব্যক্তিগত শত্রুতা নয়
বিষ্ণোই গ্যাংয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, চন্নি নট্টনের সঙ্গে তাঁদের কোনো ব্যক্তিগত শত্রুতা নেই। এই গুলিবর্ষণ ছিল কেবল একটি ‘ওয়ার্নিং শট’। তাঁদের মূল লক্ষ্য সরদার খেহরা। তাঁকে আগেও একাধিকবার হুমকি দেওয়া হয়েছিল। গ্যাংয়ের বক্তব্য অনুযায়ী, ‘যদি খেহরা সীমা অতিক্রম করেন, তাহলে এবার ক্ষতি হবে গুরুতর।’
আতঙ্কে সংগীত অঙ্গন
ক্রমবর্ধমান এসব হামলার ঘটনায় কানাডা ও ভারতের পাঞ্জাবি সংগীতমহলে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। অনেক শিল্পীই নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত, কেউ কেউ কানাডা ছাড়ার বা ঠিকানা বদলের চিন্তাভাবনা করছেন। কানাডার পুলিশের পক্ষ থেকে নিরাপত্তা জোরদারের আশ্বাস দেওয়া হলেও, একের পর এক হামলার ঘটনায় তাঁদের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। স্থানীয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর উঠেছে তীব্র সমালোচনার ঝড়—গ্যাংস্টাররা কীভাবে এমন নির্ভয়ে শিল্পীদের টার্গেট করছে?
গ্যাং যুদ্ধের নতুন অধ্যায়
এই ঘটনার মাত্র ছয় দিন আগেই তেজি কহলোঁর বাসায় গুলি চালানো হয়েছিল, যার দায় নিয়েছিল রোহিত গোদারা গ্যাং। এখন লরেন্স বিষ্ণোই গোষ্ঠীর নাম উঠে আসায় স্পষ্ট হচ্ছে—কানাডা ও ভারতের পাঞ্জাবি গ্যাংগুলোর মধ্যে আধিপত্যের লড়াই নতুন মাত্রায় পৌঁছেছে। সংগীতজগতের তারকাদের ওপর এই গ্যাং দমনপীড়নের ফলে প্রশ্ন উঠছে—শিল্প, সংস্কৃতি ও সহিংসতার মাঝখানে পাঞ্জাবি সংগীতজগৎ কি এক নতুন সংকটের মুখে দাঁড়িয়ে?