একের পর এক হিট, ইমনের সাফল্যের রহস্যের খোঁজে

সম্প্রতি ব্লেন্ডারস চয়েস—দ্য ডেইলি স্টার ওটিটি ও ডিজিটাল কনটেন্ট অ্যাওয়ার্ড ২০২৪–এ সেরা মিউজিক কম্পোজারের পুরস্কার পেয়েছেন ইমন চৌধুরী। আগামী মাসে তাঁর গানের দল বেঙ্গল সিম্ফনি নিয়ে চীন সফর ও প্রথম অ্যালবাম প্রকাশের প্রস্তুতির পরিকল্পনা শুনেছেন নাজমুল হক

ইমন চৌধুরীছবি: শিল্পীর সৌজন্যে

ব্লেন্ডারস চয়েস—দ্য ডেইলি স্টার ওটিটি ও ডিজিটাল কনটেন্ট অ্যাওয়ার্ডে মিউজিক শাখায় শিহাব শাহীন পরিচালিত কাছের মানুষ দূরে থুইয়া চলচ্চিত্রের ‘মেঘবালিকা’ গানের জন্য সেরা মিউজিক কম্পোজারের পুরস্কার পেয়েছেন ইমন চৌধুরী। গানটির জন্য সেরা গীতিকার সাদাত হোসাইন, সেরা সংগীতশিল্পী মাহতিম শাকিব ও নন্দিতা পুরস্কার পেয়েছেন। পুরস্কার পাওয়ার অনুভূতি প্রকাশ করে প্রথম আলোকে ইমন চৌধুরী বলেন, ‘কিছু কাজ আত্মতৃপ্তি দেয়, এ গানটি তেমনই। গানটি শুধু আমার না, শিহাব শাহীন ভাই থেকে টিমের সবার প্রিয়। এখনো পরিচিত–অপরিচিত অনেকেই এ গান নিয়ে প্রশংসা করেন। পুরস্কার তো একটি স্বীকৃতি, সামনের দিনে আরও ভালো কাজ করার অনুপ্রেরণা হিসেবে এটি কাজ করে।’

ইমন ও তাঁর বন্ধুদের গানের দল ‘বেঙ্গল সিম্ফনি’
ছবি: ফেসবুক

অ্যালবাম নিয়ে ব্যস্ততা
ইমন ও তাঁর বন্ধুদের গানের দল ‘বেঙ্গল সিম্ফনি’। বলা যায়, বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় গানের দলের একটি এটি। ২০ জনের সমন্বয়ে গড়ে তোলা হয়েছে এটি। বিভিন্ন সময়ে এই সদস্যসংখ্যা কমবেশি হয়। তাঁদের ‘ফুল নেয়া ভালো নয়’ প্রশংসা কুড়িয়েছে। চলতি বছর আসছে ব্যান্ডটির প্রথম অ্যালবাম। আটটি গানের এ অ্যালবামের প্রথম গান আসতে যাচ্ছে পরের মাসে। বছরের বাকি মাসগুলোতে আরও কয়েকটি গান প্রকাশের কথা রয়েছে। ইমন বলেন, ‘এটি নিরীক্ষাধর্মী অ্যালবাম। গানগুলোর কাজ প্রায় শেষ। শেষ সময়ের প্রস্তুতি চলছে। এখানে অনেক নতুন কিছু করার চেষ্টা করেছি, তাই প্রকাশের আগে অনেক কিছু নিয়ে ভাবতে হচ্ছে। ঘষামাজার কাজ চলছে, শিগগির শ্রোতাদের কাছে পৌঁছে যাবে।’

আরও পড়ুন

জাপান থেকে চীন
ভারতের কলকাতা ও আগরতলার শো দিয়ে বিদেশ যাত্রা শুরু হয় বেঙ্গল সিম্ফনির। এরপর বাংলা গানে জাপান মাতিয়ে আসে ব্যান্ডটি। সামনের মাসে চীন যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে তাঁদের। এর বাইরে আরও কয়েকটি দেশে প্রাথমিক আলাপ এগিয়েছে। ইমন বলেন, ‘বাইরের কয়েকটি দেশেই কথা এগিয়েছে, তবে ভিসা থেকে আরও আনুষঙ্গিক আরও কিছু বিষয়ের কারণে ঘোষণা দিতে পারছি না। তবে সব ঠিক থাকলে চীন যাচ্ছি আগামী মাসে। সেখানে একটা বড় পরিকল্পনা নিয়ে যাচ্ছি। দেশ ছাড়ার আগেই সবাইকে তা জানিয়ে যাব।’ চলতি বছর দেশে-বিদেশে বেশ কিছু কনসার্টে অংশ নেবে বেঙ্গল সিম্ফনি। সব৴শেষ সাভারের আশুলিয়ার ফ্যান্টাসি কিংডমে শিখো-প্রথম আলো আয়োজিত এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পাওয়া কৃতী শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠান মাতিয়েছেন তাঁরা।

ইমন চৌধুরী ও তাঁর দল বেঙ্গল সিম্ফোনির পরিবেশনা

নতুন গান
বড় পর্দা ও ওটিটির জন্য নতুন কিছু কাজ করছেন ইমন। তবে প্রযোজকদের কাছ থেকে এখন বলতে বারণ, তাই মুখে কুলুপ এঁটেছেন। সঙ্গে এ–ও জানিয়েছেন, এসব কাজের পাশাপাশি তাঁর নতুন কিছু কাজও চলছে। ইমন বলেন, ‘প্রযোজকদের পক্ষ থেকে শর্ত দেওয়া থাকে, বলা যাবে না। সে কারণে নাম ধরে কাজ নিয়ে বলতে পারব না। তবে আমি বুঝতে পারি, আমার প্রতি কিছু মানুষের আস্থা ও ভালোবাসা তৈরি হয়েছে, আশা করি কাজগুলো তারা পছন্দ করবেন, আমাকে দোয়া দেবেন। আর সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নিজের মাঝে চ্যালেঞ্জ অনুভব করি, তাই বেছে বেছেই কাজ করছি।’

ইমন চৌধুরী
ছবি : ইমন চৌধুরীর সৌজন্যে

এক সুরে বাংলাদেশ
বাংলাদেশের নানা অঞ্চলের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে একসুতায় বাঁধার স্বপ্ন দেখেন ইমন চৌধুরী। এর আগে কোক স্টুডিও বাংলায় ‘কথা কইয়ো না’ আর ‘বারো মাসে বারো ফুল রে’ মিলিয়ে প্রশংসিত হয়েছিলেন তিনি। তবে তাঁর স্বপ্ন ছিল আরও বড়—সমতল, পাহাড় ও সাগরের বৈচিত্র্যময় সংগীতকে একত্রে তুলে ধরা। সেই ভাবনা থেকেই জন্ম নেয় সর্বশেষ প্রকাশ পাওয়া গান ‘বাজি’। গানে উঠে এসেছে প্রেমের গল্পের পাশাপাশি লোকজ সংগীত, ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর বাদ্যযন্ত্র আর লোকশিল্পের বৈচিত্র্য। হাশিম মাহমুদের ‘বাজি’ গানের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে শতবর্ষী ‘ধুয়া’ গান। ‘গান আমার কাছে একটি থালার মতো। এর মধ্যে বিভিন্ন তরকারি সাজিয়ে রাখি। প্রতিটিই আলাদা, একজন খাদক প্রতিটির স্বাদ আলাদা করেই পাবেন। ফিউশন বলতে আমার কাছে তা-ই, আমি সব মিশিয়ে খিচুড়ি বানাতে চাই না কখনো। “বাজি” গানটিও তেমন, সবকিছুই আলাদা আলাদা রাখতে চেয়েছি।’ বলেন ইমন চৌধুরী।