গায়িকা থেকে বিধায়ক, মৈথিলীর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনুসারী চমকে ওঠার মতো
মাত্র ২৫ বছর বয়সেই গায়িকা হিসেবে তুমুল সাড়া জাগিয়েছিলেন মৈথিলী ঠাকুর। সেই গায়িকা পেশার সঙ্গে এবার যোগ হলো নতুন পরিচয়। এখন তিনি পুরোদস্তুর শুধু গায়িকাই নন, একজন রাজনীতিক। সম্প্রতি ভারতের বিহার বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির টিকিটে বিধায়ক নির্বাচিত হয়েছেন। এত অল্প বয়সে কীভাবে তিনি আলোচিত হলেন, সে প্রশ্নই ঘুরেফিরে আসছে।
২০১৭ সালের কথা। সেবার ‘রাইজিং স্টার’ প্রতিযোগিতায় শীর্ষ ৪–এ জায়গা পান। সেই থেকেই মৈথিলীকে আগামীর তারকা ধরা হয়। তারপর আর থেমে থাকেননি। একের পর এক গান দিয়ে দর্শকদের মন জয় করে নিয়েছেন। বিহারের আলোচিত এই গায়িকা ২০২১ সালের দিকে বিহারের ঐতিহ্য নিয়ে কাজ করতে থাকেন। সে বছর তিনি বিহারের ঐতিহ্যকে তুলে ধরার জন্য ওস্তাদ বিসমিল্লাহ খান যুব পুরস্কারে ভূষিত হন।
মৈথিলী মূলত ভারতীয় ধ্রুপদি ও লোকসংগীতের ওপর বেশি দক্ষ। বিহারের ভাষা ছাড়াও তিনি হিন্দি, ভোজপুরিসহ বেশ কয়েকটি ভাষায় গান করতে পারেন। তবে তিনি সবচেয়ে বেশি পরিচিতি লোকসংগীত দিয়ে। যে কারণে অল্প সময়েই তিনি ভারতের আলোচিত তরুণ সংগীতশিল্পীদের একজন হয়ে ওঠেন।
মৈথিলী শুরু থেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সরব। ফেসবুকে তাঁর বহু গান ভাইরালও হয়েছে। তাঁর গান শুনতে শুধু ফেসবুকেই অনুসারী ১৫ মিলিয়ন। এ ছাড়া ইনস্টাগ্রামে ৭ দশমিক ১ মিলিয়ন অনুসারী রয়েছেন। অন্যদিকে বেশির ভাগ সময় তিনি গান প্রকাশ করেন নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেলে। সেখানেও তাঁর ৫২ লাখ অনুসারী রয়েছেন। টিকটক ও অন্যান্য প্ল্যাটফর্ম মিলিয়ে এই সংখ্যা প্রায় তিন কোটি, যা বলিউডের জনপ্রিয় অনেক তারকার চেয়ে বেশি।
মৈথিলী এর আগে ভারতীয় গণমাধ্যমে জানিয়েছিলেন, তিনি তাঁর বাবা ও দাদার তত্ত্বাবধানে হিন্দুস্তানি শাস্ত্রীয় ও লোকসংগীতে প্রথম শিক্ষা নেন। পাশাপাশি হারমোনিয়াম ও তবলা শিখেছেন। ‘ইন্ডিয়ান আইডল জুনিয়র’ ও ‘সারেগামাপা লিটল চ্যাম্পস’–এ অংশগ্রহণ তাঁর মধ্যে সংগীতে টিকে থাকতে আগ্রহ জন্মিয়েছে। তিনি সব সময় গানকে আঁকড়ে ধরে এগিয়েছেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মৈথিলীর গান প্রায়ই ভাইরাল হয়। এর মধ্যে অনেক হিন্দি গান ছিল। তবে ২০২০ সালে বলিউড অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যুর পর মৈথিলী অভিমানে হিন্দি চলচ্চিত্রে গান করা থেকে সরে আসার কথা জানিয়েছিলেন। তবে সেই অভিমান বেশি দিন থাকেনি। বলিউড সিনেমাতেও তিনি প্লেব্যাক করেছেন।
২০০০ সালের ২৫ জুলাই বিহারের মধুবনীতে জন্ম মৈথিলী ঠাকুরের। সংগীতসমৃদ্ধ পরিবারে বড় হয়ে ওঠা। মৈথিলীর সঙ্গে তাঁর ভাইয়েরা নিয়মিত গান করেন। নির্বাচনী প্রচারেও একসঙ্গে গাইতে দেখা গেছে তাঁদের। বছরখানেক আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির থেকে ক্রিয়েটার্স অ্যাওয়ার্ড গ্রহণ করেছিলেন মৈথিলী। সেদিন তাঁর শিবস্তোত্রম শুনে মুগ্ধ হন প্রধানমন্ত্রী। কদিন আগে মোদির সঙ্গে একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করেন, সেই ছবিও ভাইরাল হয়।