ছায়ানটে গান-কবিতায় নজরুল-স্মরণ

নজরুলপ্রয়াণবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে ছায়ানটের শিল্পীরা সমবেত কণ্ঠে গান করেছেন
নজরুলপ্রয়াণবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে ছায়ানটের শিল্পীরা সমবেত কণ্ঠে গান করেছেন

দ্রোহ, প্রেম আর চেতনার কবি কাজী নজরুল ইসলাম নিজের অসংখ্য সৃষ্টিকর্ম দিয়ে বাংলা সাহিত্যকে করেছেন সমুন্নত। প্রেম ও প্রতিবাদের ভাষা হিসেবে কবি যেমন গানকে বেছে নিয়েছিলেন, তেমনি কবিতায় উঠে এসেছে মানুষের কথা। গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় সেসব গান ও কবিতা নিয়েই কবিকে স্মরণ করেছে ছায়ানট। কবির ৪৩তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

সন্ধ্যায় ছায়ানটের শিল্পীদের সম্মেলক কণ্ঠে ‘জাগো অমৃত–পিয়াসী চিত’ গানের মধ্য দিয়ে শুরু হয় এ আয়োজন। রাজধানীর ধানমন্ডিতে ছায়ানট ভবন মিলনায়তনে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে নজরুলের বৈচিত্র্যময় সুর-ঐশ্বর্যের সম্মোহন আর অসাম্প্রদায়িক মানবতার বাণী উচ্চারণের মধ্য দিয়ে স্মরণ করা হলো জাতীয় কবিকে। সাম্যবাদী ও দ্রোহী চেতনার ধারক বাংলাদেশের জাতীয় কবির জীবনবোধ শিল্পীরা গানে ও কবিতায় ফুটিয়ে তোলেন।

অনুষ্ঠানে ছিল একক গানের পরিবেশনা
অনুষ্ঠানে ছিল একক গানের পরিবেশনা

অনুষ্ঠানে মৌমিতা সরকার ‘হে প্রিয় আমারে দেব না ভুলিতে’, শুক্লা পাল ‘বল রে জবা বল’, কানিজ হুসনা আহম্মাদী ‘কেন আন ফুল-ডোর’, অর্পিতা চক্রবর্তী ‘ওগো অন্তর্যামী ভক্তের তব’, তমা সরকার ‘ঘুমিয়ে গেছে শ্রান্ত হয়ে’, পপি আক্তার ‘পরান-প্রিয়! কেন এলে অবেলায়’, সুস্মিতা দেবনাথ শুচি ‘মনে পড়ে আজ’, শেখর মণ্ডল ‘মেঘে মেঘে অন্ধ অসীম’, সুদীপ্ত শুভ ‘সাঁঝের পাখিরা ফিরিল’, সুস্মিতা দাস ‘তোমার বীণার মূর্ছনাতে’ গেয়ে শোনান।

সম্মেলক কণ্ঠে শিল্পীরা আরও গেয়ে শোনান ‘বেদনার সিন্ধু মন্থন শেষ’ ও ‘নীরন্ধ্র মেঘে মেঘে’। নজরুলের কবিতা পাঠ করেন কৃষ্টি হেফাজ ও জাহীদ রেজা নূর। সবশেষে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে শেষ হয় অনুষ্ঠান।

ছিল নজরুলের কবিতা পাঠ
ছিল নজরুলের কবিতা পাঠ

১২ ভাদ্র ছিল বাংলাদেশের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের প্রয়াণদিবস। ১৯৭৬ সালের এই দিনে (১৩৮৩ বঙ্গাব্দের ১২ ভাদ্র) ঢাকায় তদানীন্তন পিজি হাসপাতালে (বর্তমানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়) শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। উপমহাদেশের স্বাধীনতা ও নবজাগরণের অন্যতম অগ্রনায়ক কাজী নজরুল ইসলামের জন্ম ১৩০৬ বঙ্গাব্দের ১১ জ্যৈষ্ঠ (১৮৯৯ খ্রিষ্টাব্দের ১৪ মে) পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার আসানসোল মহকুমার চুরুলিয়া গ্রামে। বাবা কাজী ফকির আহমেদ, মা জাহেদা খাতুন। ১৯৭২ সালের ২৪ মে তৎকালীন সরকার তাঁকে জাতীয় কবির মর্যাদা দিয়ে সপরিবারে ভারত থেকে বাংলাদেশে নিয়ে আসে।