‘আমরা তরুণ বলে হয়তো কিছুটা উপেক্ষিত’

ওয়েব ফিল্ম নেটওয়ার্কের বাইরে দিয়ে আলোচনায় আসেন। মাঝখানে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে অনেক দিন অভিনয়ের বাইরে ছিলেন। সম্প্রতি শেষ করেছেন ওয়েব সিরিজ মির্জার কাজ, মুক্তি পেয়েছে নাটক এক মিনিট। মনজুরুল আলমকে সাম্প্রতিক কাজের বিস্তারিত জানালেন তরুণ অভিনেতা জোনায়েদ বোগদাদী

জোনায়েদ বোগদাদী। অভিনেতার সৌাজন্যে

চয়নিকা চৌধুরীর একটি কাজের শুটিং করলাম, নাম ‘বিসর্জনে অর্জন’। আমার সহশিল্পী তানিয়া বৃষ্টি। একসঙ্গে এটা আমাদের দ্বিতীয় কাজ। দুই মাসের বেশি সময় ধরে দেশের পরিস্থিতির কারণে শুটিংয়ে ব্যাঘাত ঘটছে। পরিস্থিতি এখন কিছুটা স্বাভাবিক হয়েছে। কিন্তু মানসিকভাবে ভালো নেই। প্রতিদিনই কিছু না কিছু লেগেই আছে। এসব ঘটনার জন্য স্বাভাবিকভাবে শুটিংও করতে পারছি না। এটা সবার ওপরেই প্রভাব ফেলছে।

‘হুমায়ূন আহমেদের নায়িকার চেয়েও সুন্দরী’
কিছু প্রেম প্রথম দেখাতেই হয়ে যায়। গত সপ্তাহে মুক্তি পাওয়া ‘এক মিনিট’ নামের নাটকের শুরুতেই আমার চরিত্রটি জুঁই নামের একটা মেয়ের প্রেমে পড়ে যায়। আমার সংলাপ ছিল, ‘মেয়েটা হুমায়ূন আহমেদের নায়িকার চেয়েও সুন্দরী।’ হুমায়ূন আহমেদের এই সুন্দরী নায়িকার প্রেমে পড়লেও সেদিনই ছিল মেয়েটির বিয়ের দিন। টান টান একটা জায়গা থেকে গল্পটা শুরু হয়। দর্শক এটি পছন্দ করবেন, এটা বলতে পারি। গল্প বৈচিত্র্যপূর্ণ মনে হলেই নাম লেখাই। এটি তেমন একটি গল্পের নাটক।

জোনায়েদ বোগদাদী। অভিনেতার সৌাজন্যে

আমার টার্নিং পয়েন্ট আসেনি
নাটক, ওয়েব ফিল্ম দিয়ে দর্শকের প্রশংসা পেয়েছি। পরিচালকেরা ডাকেন। হয়তো দর্শক কাজগুলো দিয়ে আমাকে চিনছেন। কিন্তু আমি এখনো মনে করি না আমার ক্যারিয়ারের টার্নিং পয়েন্ট এসেছে। আরও ভালো কাজ দিয়ে নিজেকে যেভাবে যে জায়গায় নিয়ে যেতে চাই, সেখানে এখনো যেতে পারিনি। আমার টার্নিং পয়েন্ট আসেনি। আমাকে এ জন্য আরও পরিশ্রম করতে হবে। সাড়ে চার বছর মহাকাল থিয়েটারে ছিলাম। এখনো শিখছি। শেখার বা পরিশ্রমের বিকল্প নেই।

মোশাররফ-অভিজ্ঞতা
সমসাময়িক অভিনয়শিল্পী যাঁদের সঙ্গে কাজ হয়, তাঁরা সবাই ভালো করছেন। সিনিয়র যাঁরা আছেন, তাঁদের সবার কাছ থেকে শেখার আছে। সম্প্রতি মোশাররফ করিম ভাইয়ের সঙ্গে ‘মির্জা’ সিরিজে কাজ করা হলো। তিনি আমার পছন্দের অভিনেতা। কাজ দিয়েই আগে তাঁকে চিনতাম। একসঙ্গে কাজ করলাম, এবার তাঁকে মানুষ হিসেবে চিনলাম। শুটিংয়ে দেখা হলেই নানা বিষয়ে কথা হতো। তাঁর কাছ থেকে অনেক কিছু শিখেছি। ব্যক্তিত্বই তাঁকে অন্যদের চেয়ে আলাদা করেছে।

আরও পড়ুন

দর্শকদের মন বোঝা কঠিন
দর্শকদের এখনো যে খুব বেশি বুঝি, তা নয়। দর্শক কোন কাজটি পছন্দ করবেন, আর কোনটি করবেন না, বোঝা কঠিন। শুরু থেকেই পরিচালক যেভাবে উপস্থাপন করতে চান, সেভাবেই কাজ করি। অনেক সময় কমফোর্ট জোনের বাইরে গিয়ে করি। আবার কমফোর্ট জোনের মধ্যেও কাজ করেছি কিন্তু দর্শক সেভাবে সাড়া দেয়নি।

জোনায়েদ বোগদাদী। অভিনেতার সৌাজন্যে

সেই কারণে আমার মধ্যে এটা কাজ করে না, দর্শক এটা পছন্দ করবে কিনা। পরিচালকের কথা কতটুকু বুঝলাম, সেটাই খেয়াল রাখি। সেভাবে অভিনয় করি। কাজ নিয়ে নিজের ভেতর আলাদা চিন্তা, পরিকল্পনা থাকে। হয়তো কখনো বলি, কিন্তু সেই সাড়াটা পাই না। কারণ, অনেকেই অনেক অভিজ্ঞ।

তরুণ বলে...
শুটিংয়ে তরুণ অভিনেতারা চাইলেই কিন্তু সবকিছু বলতে পারে না। তরুণদের জন্য কথা বলার জায়গাটা আরও বেশি উন্মুক্ত হওয়া উচিত। টিমওয়ার্ক আরও বেশি ওপেন হলে আউটপুট ভালো হয়। আমার জায়গা থেকে বলব, প্রতিটি টিম মেম্বারই গুরুত্বপূর্ণ। কে নতুন কে পুরান, এটা বিচার না করে যদি সবাই সহযোদ্ধা হয়ে মতামতের ভিত্তিতে কাজ করা যায়, তাহলে ভালো ফল পাওয়া যায়। কিন্তু আমরা তরুণ বলে হয়তো কিছুটা উপেক্ষিত থাকি। আবার আমরাও কিছু বলতে পারি না। বলা উচিত। এই নিয়ে মন খারাপ হয় না। একজন অভিনেতা ও একজন পরিচালক একটি গল্প নিয়ে ভিন্নভাবে ভাবতেই পারেন। সেখানে যুক্তিতর্ক থাকবেই। কিন্তু পরিচালক গল্পের সঙ্গে যায় সেই দৃশ্যই দৃশ্যধারণ করবেন।