‘দ্য স্যাকরিড বন্ডস’: চাদে সিঙ্গেল মায়ের অন্য রকম লড়াই

সিনেমায় মা ও মেয়ে
ছবি: আইএমডিবি

১৫ বছরের স্কুলছাত্রী মারিয়াকে নিয়ে আমিনার সংসার। সিঙ্গেল মাদার হিসেবে মেয়েকে মানুষের মতো করে গড়ে তুলতে কঠোর পরিশ্রম করে আমিনা। কিন্তু হঠাৎ অস্বাভাবিক আচরণ করতে শুরু করে মেয়েটি। স্কুল থেকে তার নাম কাটা গেছে। মায়ের সঙ্গে দূরত্ব বাড়তে থাকে। এমন নানা মানসিক দ্বন্দ্বে এগিয়ে যেতে থাকে চাদের সিনেমা ‘লিঙ্গুই’। সিনেমাটির ইংরেজি নাম ‘দ্য স্যাকরিড বন্ডস’।

মা ও মেয়ের প্রতিবাদ নিয়েই সিনেমা
ছবি: আইএমডিবি

সিনেমাটি কান চলচ্চিত্র উৎসবে স্বর্ণপাম পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন পেয়েছিল। কানে কোনো পুরস্কার না পেলেও প্রশংসা পেয়েছিলেন পরিচালক মাহমাত-সালে হারুন। সিনেমায় প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন আসুয়াক আকবার (আমিনা)। এটা ছিল তাঁর ক্যারিয়ারে প্রথম বড় কোনো চরিত্রে অভিনয়। নিখুঁতভাবে তিনি ফুটিয়ে তুলেছেন চরিত্রটি। মানসিকভাবে যখন ভেঙে পড়েছেন, ঠিক তেমন একদিন মেয়ের পিছু নেন। কিন্তু মেয়ে স্কুলে যায় না। আমিনা স্কুলের শিক্ষকদের কাছে জানতে পারেন, অল্প বয়সে অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার কারণে তাকে স্কুল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। কারণ, এমন ঘটনায় স্কুলের শিক্ষার্থীদের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। বিদ্যালয়ের সুনাম নষ্ট হয়।

সিনেমায় প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি
ছবি: আইএমডিবি

প্রশ্ন ওঠে, জীবন কি বিদ্যালয়ের সুনামের চেয়ে তুচ্ছ? ঘটনাটি আমিনাকে অতীতে ফিরিয়ে নিয়ে যায়। সেও একদিন এভাবেই গর্ভধারণ করেছিল। প্রেমিক তাকে মেনে নেয়নি। সমাজবিচ্ছিন্ন করেছিল। কিন্তু সে চায় না, তার মেয়েও একই পরিস্থিতির মুখোমুখি হোক। এমন সময় মারিয়া মাকে উদ্দেশ করে বলে, ‘মা, সবাই তোমাকে যেভাবে ছোট করে, অপমান করে, অসম্মান করে, সেই পথে আমি কখনোই যেতে চাইনি। আমি ওই জীবন চাইনি। আমি তোমার মতো হতে চাইনি।’ এরপর মা-মেয়ের একটা নতুন সংগ্রাম শুরু হয়।

‘লিঙ্গুই’ সিনেমার পোস্টার
ছবি: আইএমডিবি

চিকিৎসকদের দ্বারে দ্বারে ঘুরতে থাকে মা–মেয়ে। কিন্তু আফ্রিকার দেশ চাদে গর্ভপাত নিষিদ্ধ। অবশেষে এক চিকিৎসক বাড়তি টাকায় রাজি হয়। এখানেও ঘটে বিপত্তি। দেড় ঘণ্টার এই সিনেমায় প্রায় এক ঘণ্টা পর প্রশ্ন ওঠে, এই সন্তানের পিতা কে? সেখানে রয়েছে একটা বড় চমক। চাদের সমাজব্যবস্থায় সিঙ্গেল মায়েদের সংগ্রাম, আইন, বিচারসহ অনেক অসামঞ্জস্যের চিত্র উঠে এসেছে এই সিনেমায়। ‘লিঙ্গুই’ সিনেমাটি ২০২১ সালে মুক্তি পায়। সিনেমাটির গতি কিছুটা মন্থর হলেও পুরো গল্প দর্শককে ভাবাবে।