চে গুয়েভারাকে বুঝতে দেখতে পারেন এই ৫ সিনেমা

চে গুয়েভারাকে বুঝতে দেখতে পারেন সিনেমাগুলো। ছবি: কোলাজ

আর্নেস্তো চে গুয়েভারার জন্ম আর্জেন্টিনায়। আজন্ম বিপ্লবী এই মানুষকে নিয়ে এখনো আগ্রহের কমতি নেই। মৃত্যুর পর তাঁকে নিয়ে দক্ষিণ আমেরিকাতে নয়, হলিউডসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে একাধিক সিনেমা ও তথ্যচিত্র নির্মিত হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে তাঁর রোমাঞ্চকর জীবনের নানা প্রসঙ্গ উঠে এসেছে। এর মধ্য দিয়েই চে গুয়েভারার জীবনের জানা–অজানা অনেক কিছুর খোঁজ পাওয়া যেতে পারে। আজ এই বিপ্লবীর জন্মদিন। দেখে নিতে পারেন তাঁকে নিয়ে নির্মিত সেরা পাঁচ সিনেমা ও তথ্যচিত্র।

২০০৪ সালে নির্মিত হয় ‘দ্য মোটরসাইকেল ডায়েরি’
ছবি:আইএমডিবি

২০০৪ সালে নির্মিত ‘দ্য মোটরসাইকেল ডায়েরি’কে চে গুয়েভারাকে নিয়ে নির্মিত সিনেমার মধ্যে সেরা হিসেবে ধরা হয়। মোটরসাইকেল নিয়ে চে–এর ভ্রমণ শুরুর গল্পটি এখনো সমান জনপ্রিয়। সিনেমাটিতে আর্জেন্টিনার রাজধানী থেকে ৬০০ কিলোমিটার ভ্রমণ ও এর সধ্যে চে–এর বিপ্লবী হওয়ার গল্প দারুণভাবে দর্শকদের আলোড়িত করে। অ্যাডভেঞ্চারধর্মী এ সিনেমায় বন্ধুকে নিয়ে চে–এর ভ্রমণ, প্রেম, সুবিধাবঞ্চিত দরিদ্র মানুষের পাশে দাঁড়ানো ও রাজনীতির বিভিন্ন দিক ফুটে উঠেছে। সিনেমাটি অস্কার বাফটাসহ একাধিক পুরস্কার জিতেছিল।

‘চে’ সিনেমার পোস্টার
ছবি:আইএমডিবি

২০০৮ সালে চে–কে নিয়ে নির্মিত হয় দুই পর্বে ‘চে’ নামের সিনেমা। দক্ষিণ আমেরিকার বলিভিয়ার গল্প বিস্তারিত তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন পরিচালক। লাতিন আমেরিকায় কমিউনিস্টদের প্রভাব দিন দিন বাড়তে থাকে। এ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের মাথাব্যথার কারণ হয়েছিলেন চে। তাঁকে থামাতে মার্কিন গুপ্তচর সংস্থা সিআইএর সাহায্য নিয়ে বলিভিয়ায় এক সামরিক অভিযান চালানো হয় চে গুয়েভারার নেতৃত্বাধীন কমিউনিস্ট গেরিলা দলের বিরুদ্ধে। সে সময় বলিভিয়ায় ক্ষমতায় ছিল দক্ষিণপন্থী সামরিক সরকার। যুক্তরাষ্ট্র ও সোভিয়েত ইউনিয়নের মধ্যে স্নায়ুযুদ্ধের উত্তেজনা তখন চরমে। এসব ঘটনা উঠে এসেছে ‘চে’ সিনেমার প্রথম ও দ্বিতীয় পর্বে।

মৃত্যুর দুই বছর পর চে গুয়েভারাকে নিয়ে হলিউডে নির্মিত হয় ‘চে’ নামের আরেকটি সিনেমা
ছবি:আইএমডিবি

১৯৬৭ সালের ৯ অক্টোবর মারা যান চে গুয়েভারা। তাঁর মৃত্যুর দুই বছর পর চে গুয়েভারাকে নিয়ে হলিউডে নির্মিত হয় ‘চে’ নামের আরেকটি সিনেমা। আত্মজীবনীমূলক এই সিনেমাতে বিপ্লবী চে–কে ভিন্নভাবে দেখা গেছে। সেই সময় চে–এর চরিত্রে অভিনয় করে সাড়া জাগিয়েছিলেন ওমর শরীফ। সিনেমায় উঠে এসেছে কিউবার যুদ্ধে অংশগ্রহণ ও মোটরসাইকেল ভ্রমণে গিয়ে কীভাবে মানুষের চিকিৎসক থেকে রাজনীতিতে প্রবেশ করেন—সেসব বিষয়। সিনেমায় বেশ কিছু জায়গায় আক্রমণাত্মকভাবে দেখানো হয়েছিল, যা নিয়ে চিলি ও আর্জেন্টিনার দর্শক ভিন্নমত পোষণ করেছিলেন। সমালোচকেরা সে সময় লিখেছিলেন, ‘সিনেমার প্রতিটি দৃশ্য সেন্সর হওয়া উচিত ছিল।’

ছবি:আইএমডিবি

ডেনমার্কের চলচ্চিত্র নির্মাতা পিটার ডি কুক ২০০৫ সালে চে–এর জীবনের অজানা ঘটনা নিয়ে তৈরি করেন তথ্যচিত্র ‘দ্য হ্যান্ড অব চে গুয়েভারা’। সেই তথ্যচিত্রে অনেক কিছু উঠে এসেছে। পরিচালক দেখিয়েছেন, সমাহিত করার পরে ১৯৯৭ সালে চে–এর শরীর দ্বিতীয়বার কবর থেকে তোলা হয়। লাশ তোলার পরে দেখা যায়, এই বিপ্লবীর মৃতদেহের হাত নেই। এ নিয়ে রহস্য দানা বাঁধতে থাকে। পরিচালক পিটার ক্যামেরা নিয়ে নিখোঁজ হাতের খোঁজ করতে শুরু করেন। তারপর কীভাবে সেই হাত সরানো হয়, সেই গল্প এই তথ্যচিত্রে দেখে নিতে পারেন।

‘দ্য ট্রু স্টোরি অব চে গুয়েভারা’র পোস্টার
ছবি:আইএমডিবি

রাজনৈতিক জীবনে যখন প্রবেশ করেন, তখন কী মনোভাব পোষণ করতেন তরুণ চে? তাঁকে সবচেয়ে প্রেরণা জুগিয়েছিল কোন বিষয়? তাঁর জীবনের শেষ মুহূর্তে কী ঘটেছিল? সেসব প্রসঙ্গ উঠে এসেছে তথ্যচিত্র ‘দ্য ট্রু স্টোরি অব চে গুয়েভারা’য়। এই তথ্যচিত্রে চে সম্পর্কে সাক্ষাৎকার, ছবিসহ ঐতিহাসিক অনেক কিছুর দেখা পাওয়া যাবে।