মূর্খদের তালিকায় প্রথম নাম

বীরবল কোনো কল্পিত নয়, ঐতিহাসিক চরিত্র। সম্রাট আকবর ও বীরবল ছিলেন হরিহর আত্মা। আবার কোনো কোনো বিষয় নিয়ে দুজনের মধ্যে যে কখনো মনোমালিন্য হয়নি, এমন নয়। হয়েছে। কিন্তু সে শুধু সাময়িকসময়ের জন্য। কারণ, রাজকাজ পরিচালনায় সম্রাট আকবরের কাছে বীরবল ছিলেন এক অনিবার্য মন্ত্রণাদাতা।

বাদশাহ আকবরের সভায় একদিন কয়েকজন ঘোড়ার ব্যবসায়ী এল। তাদের কাছ থেকে বাদশাহ একটি ভালো জাতের আরবি ঘোড়া কিনলেন। সেই সঙ্গে ওই ঘোড়ার জন্য একই জাতের একটি মাদি ঘোড়া এনে দিতে বললেন তাদের।

বণিকেরা দুঃখ প্রকাশ করে বলল, এ বছর তারা কোনো উৎকৃষ্ট জাতের মাদি ঘোড়া সংগ্রহ করতে পারেনি। তবে যদি অগ্রিম ১৫ হাজার মোহর দেওয়া হয়, তাহলে হয়তো শিগগিরই একটি ভালো মাদি ঘোড়া এনে দেওয়া সম্ভব হবে।

বাদশাহ তাদের দাবিমতো অর্থ দিয়ে দিলেন।

এক বছর কেটে গেল, তাদের আর কোনো খোঁজই পাওয়া গেল না।

এই সময় বাদশাহ বীরবলকে এক অভিনব আদেশ দিলেন, ‘আমার রাজ্যের মূর্খ ব্যক্তিদের একটি তালিকা তৈরি করো।’

দুসপ্তাহ বাদে বীরবল তাঁর তৈরি করা তালিকা রাজার কাছে পেশ করলেন। কিন্তু অদ্ভুত ব্যাপার, তালিকায় আকবরের নামই সবার ওপরে।

আকবর চমকে উঠে বললেন, ‘বীরবল, এটা কী?’

বীরবল শান্তভাবে বললেন, ‘এ রকম লোককে মূর্খ ছাড়া আর কী বলা যাবে, যে নাকি বিদেশি লোকদের অবলীলায় অগ্রিম টাকা দিতে পারে তাদের নামধাম, ঠিকানা, পরিচয় না জেনেই।’

‘কিন্তু মূর্খ, বণিকেরা তো ফিরে আসতে পারে! ঘোড়া নিয়ে যদি তারা আমার কাছে ফিরে আসে!’

‘জাহাঁপনা, তা যদি হয়, তখন আমি আপনার নাম বাদ দিয়ে সে জায়গায় তাদের নাম বসিয়ে দেব!’ রসিক চূড়ামণি বীরবল হাসতে হাসতে উত্তর দিলেন।

আরও পড়ুন