ময়ূরের পেখম আছে, ময়ূরীর নেই। ময়ূরের নীল-সোনালি রঙের চমৎকার মিশ্রণে সৌন্দর্যের ছটা ছড়িয়ে পড়ে। অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে থাকতে হয়। শুধু ময়ূর নয়, এ রকম অনেক পুরুষ পাখি সেই প্রজাতির মেয়ে পাখির চেয়ে বেশি সুন্দর। অথচ সাধারণ ধারণা, কোনো প্রজাতির মেয়ে সদস্যরাই বেশি সুন্দর হয়, আর পুরুষেরা হয় রুক্ষ ধরনের। কিন্তু অনেক পাখির ক্ষেত্রে এর ব্যতিক্রম দেখা যায়। কেন?
এ বিষয়টি নিয়ে বিজ্ঞানী চার্লস ডারউইন তাঁর ‘সঙ্গী বাছাই তত্ত্বে’ (থিওরি অব সেক্সুয়াল সিলেকশন) অনেক যুক্তি দিয়েছেন। তিনি বলতে চেয়েছেন, কোনো প্রজাতির বিবর্তনে সহায়ক বলেই নারী-পুরুষে কিছু পার্থক্য সৃৃষ্টি হয়। অনেক জীববিজ্ঞানী মনে করেন, এই পার্থক্যের উদ্দেশ্য হলো শত্রুর সম্ভাব্য আক্রমণ থেকে মেয়ে সঙ্গীকে রক্ষা করা।
ডিম থেকে বাচ্চা ফোটানোর জন্য মেয়ে পাখিকে সারাক্ষণ নীড়ে বসে থাকতে হয়। এ সময় তার আত্মরক্ষার ব্যবস্থা প্রায় থাকে না। তাই সাধারণত মেয়ে পাখিদের গায়ের রং সাদামাটা ধরনের হয়, যেন সহজে চিল-শকুনের নজরে না পড়ে। বিপরীতে তাদের পুরুষ সঙ্গীদের থাকে আকর্ষণীয় রং ও সাজ।
কিন্তু এই পুরুষ আবার বেশ শক্তিশালী। তাদের রয়েছে তীক্ষ্ণ ঠোঁট ও নখ। তাদের রংচঙে আকৃষ্ট হয়ে কোনো শত্রু আক্রমণ করতে গেলে তাড়া খেতে হয়।
তাই অন্য কোনো শত্রু তাদের সহজে ঘাঁটায় না। ফলে নারী পাখিরা নির্বিঘ্নে বাচ্চা ফোটাতে পারে। এভাবে কম সুন্দর নারী পাখিরা তাদের বংশবিস্তারে বিশেষ সুবিধা পায়।