যাবজ্জীবন দণ্ড নিয়ে কানাডায় পালালেন!

সাইদ মালেকপোর। ছবি: টুইটার থেকে নেওয়া
সাইদ মালেকপোর। ছবি: টুইটার থেকে নেওয়া

২০০৮ সালে অসুস্থ বাবাকে দেখতে দেশে গিয়েছিলেন সাইদ মালেকপোর। ইরানি বংশোদ্ভূত কানাডার নাগরিক সাইদ পেশায় ওয়েব প্রোগ্রামার। দেশে যাওয়ামাত্রই গ্রেপ্তার হন তিনি। পর্নোগ্রাফির ওয়েবসাইটসংক্রান্ত অভিযোগে ১১ বছর জেল খাটার পর সম্প্রতি অল্প সময়ের জন্য মুক্তি পেয়েছিলেন তিনি। আর ছাড়া পেয়েই কানাডায় পালিয়ে গেছেন।

বিবিসি অনলাইনের প্রতিবেদনে বলা হয়, গত শুক্রবার সাইদের কানাডায় ফেরা নিয়ে তাঁর বোন একটি ভিডিও প্রকাশ করেছেন।

দ্বৈত জাতীয়তা বা বিদেশে স্থায়ীভাবে বসবাসকারী ইরানিদের নিয়ে বেশ কয়েকটি উল্লেখযোগ্য মামলার একটি ছিল সাইদ মালেকপোরের মামলাটি।

২০০৮ সালের অক্টোবরে ইরানি কর্তৃপক্ষের হাতে গ্রেপ্তার হন সাইদ। ওয়েবসাইটে ছবি আপলোডের জন্য তাঁর তৈরি প্রোগ্রামটি পার্সিয়ান ভাষায় পর্নোগ্রাফি ওয়েবসাইট হিসেবে ব্যবহৃত হতো বলে অভিযোগ করে ইরানের কর্তৃপক্ষ। এ দায়ে তাঁকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

ইরানের বিচার বিভাগের সরকারি বার্তা সংস্থা মিজান অনলাইনের মুখপাত্র গুলাম হোসেন ইসমাইলি এক বিবৃতিতে বলেন, ‘সাইদ মালেকপোরকে তিন দিনের জন্য কারামুক্তি দেওয়া হয়েছিল। এ সময়ে ইরান ত্যাগে নিষেধাজ্ঞা ছিল তাঁর ওপর। তাই স্পষ্টতই তিনি দেশ ছাড়ার জন্য অবৈধ উপায় ব্যবহার করেছেন।’

সাইদের মামলাটির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন আন্তর্জাতিক আইনের অধ্যাপক পায়াম আখাভান। তিনি কানাডার গণমাধ্যমকে বলেন, জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থাগুলোর চাপে সাইদ মালেকপোরকে সাময়িকভাবে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল। তাঁকে আবার কারা কর্তৃপক্ষের কাছে এসে হাজিরা দিতে বলা হয়েছিল। এর পরিবর্তে তিনি তৃতীয় আরেকটি দেশ দিয়ে কানাডায় চলে গেছেন।

সাইদের ফিরে আসা নিয়ে তাঁর বোন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ভিডিও পোস্ট করে লেখেন, ‘অবশেষে দুঃস্বপ্নের শেষ হলো। সে বাড়ি ফিরে এসেছে। আমার সঙ্গে তার দেখা হয়েছে। ধন্যবাদ কানাডাকে এই নেতৃত্বের জন্য। যাঁরা এ সময়ে আমাদের সহায়তা করেছেন, তাঁদের প্রত্যেককে ধন্যবাদ। আমরা এক হয়ে জয়ী হয়েছি।’

এদিকে পর্নোগ্রাফি ওয়েবসাইটসংক্রান্ত অভিযোগের ব্যাপারে সাইদ দাবি করেছেন, তাঁর তৈরি ওয়েবসাইটটি উন্মুক্ত ছিল। অন্য ওয়েবসাইটগুলো তাঁর অজান্তেই সেটি ব্যবহার করেছে।

সাইদকে শুরুতে ‘বিশ্বে দুর্নীতি ছড়ানোর দায়ে’ মৃত্যুদণ্ড দেয় ইরান। তবে তিনি বারবার অনুশোচনা প্রকাশ করলে তাঁর সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল জানায়, কারাবাসের সময় সাইদের ওপর মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন চলে। এক বছরেরও বেশি সময় তাঁকে একা নির্জন কক্ষে রাখা হয়েছিল।