আতঙ্কে কাশ্মীর ছাড়ছে মানুষ

সন্ত্রাসী হামলার আশঙ্কায় ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীর ছাড়ছেন পর্যটকেরা। এর প্রভাব পড়েছে এ উপত্যকার পর্যটনশিল্পে। পর্যটকশূন্য ডাল লেকে খালি পড়ে রয়েছে নৌকাগুলো। গতকাল কাশ্মীরের শ্রীনগরে।  ছবি: রয়টার্স
সন্ত্রাসী হামলার আশঙ্কায় ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীর ছাড়ছেন পর্যটকেরা। এর প্রভাব পড়েছে এ উপত্যকার পর্যটনশিল্পে। পর্যটকশূন্য ডাল লেকে খালি পড়ে রয়েছে নৌকাগুলো। গতকাল কাশ্মীরের শ্রীনগরে। ছবি: রয়টার্স

ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে নিরাপত্তা সতর্কতা জারির পর সন্ত্রাসী হামলার আতঙ্কে সেখান থেকে হাজার হাজার পর্যটক এবং ভিন্ন রাজ্যের পুণ্যার্থী, শিক্ষার্থী ও শ্রমিকেরা চলে যেতে শুরু করেছেন। এদিকে কাশ্মীর পরিস্থিতি নিয়ে গতকাল রোববার নিরাপত্তাসংক্রান্ত বৈঠক করছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। আর ভারতীয় বাহিনীর গুলিতে নিহত পাকিস্তানের বর্ডার অ্যাকশন টিমের (ব্যাট) নিহত পাঁচ সদস্যের মরদেহ ফেরত নিতে ইসলামাবাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে নয়াদিল্লি। তবে পাকিস্তান এই আহ্বানে সাড়া দেয়নি।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর গতকালের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল, কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাপ্রধান অরবিন্দ কুমার, রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালিটিক্যাল উইংয়ের (র) সামন্ত গোয়েল এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব রাজীব গউবা। বৈঠকের ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি সরকার। সূত্র বলেছে, কাশ্মীরের অমরনাথ তীর্থযাত্রীদের কীভাবে নিরাপদে দ্রুত ফিরিয়ে আনা যায়, সে বিষয়ে ওই বৈঠকে আলোচনা হয়।

এর আগে গত সপ্তাহে আচমকা বন্ধ করে দেওয়া হয় অমরনাথ-যাত্রা। প্রতিবছর আষাঢ়-শ্রাবণ মাসে লাখো পুণ্যার্থীর যাত্রাকে কেন্দ্র করে গোটা কাশ্মীর উপত্যকা মেতে থাকে। এ অঞ্চলের অর্থনীতির বড় অংশ এই যাত্রার ওপর নির্ভরশীল। ১৯৯০ সাল থেকে কাশ্মীরে সন্ত্রাসবাদ মাথাচাড়া দেওয়ার পর এই প্রথম অমরনাথ-যাত্রা পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হলো।

সরকারি সূত্র বলেছে, সন্ত্রাসবাদী নাশকতার আশঙ্কায় অমরনাথ-যাত্রা বন্ধ করা হয়েছে। আর নিরাপত্তার কারণে দেশি-বিদেশি পর্যটকদেরও কাশ্মীর থেকে অবিলম্বে চলে যেতে বলা হয়েছে। তবে কেন ভিন্ন রাজ্যের শিক্ষার্থীদের ওই এলাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে চলে যেতে বলা হয়েছে, এর উত্তর দিতে পারেনি প্রশাসন। এই পরিস্থিতিতে আধা সামরিক বাহিনীর আরও ১০ হাজার সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে সেখানে।

সেনা ও গোয়েন্দা সূত্র বলছে, সন্ত্রাসবাদী চক্রান্ত রুখতে এই তৎপরতা। জুলাই মাসের শেষ দিকে নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে অনুপ্রবেশের একাধিক ঘটনা ভারতীয় সেনাবাহিনী বানচাল করে দেয়। গত শনিবার ব্যাটের পাঁচ সদস্য কেরান সেক্টরে ঢুকে পড়লে ভারতীয় বাহিনীর গুলিতে নিহত হন। গতকাল তাঁদের মরদেহ ফেরত নিতে পাকিস্তানের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। তবে এতে সাড়া দেয়নি দেশটি। উল্টো ভারতের বিরুদ্ধে ‘গুচ্ছবোমা হামলার’ অভিযোগ তুলেছে পাকিস্তান। দেশটির প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান গতকাল ওই হামলার নিন্দা জানান।

আরও পড়ুন: