মোদির সঙ্গে বৈঠক সেরে কাল কলকাতায় আসছেন নোবেলজয়ী অভিজিৎ

অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়
অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়

এ বছর অর্থনীতিতে নোবেলজয়ী বাঙালি অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায় কাল মঙ্গলবার রাতে কলকাতায় আসছেন। এর আগে তিনি বৈঠক সারবেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে। আধা ঘণ্টা ধরে চলার কথা এই বৈঠক।

অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মা নির্মলা বন্দ্যোপাধ্যায় অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন ছেলের আসার জন্য। কাল রাতে ছেলেকে খাওয়াবেন পাঁঠার মাংস, মাটন কাবাব ও পোনা মাছের কালিয়া। তিনি তাঁর পুত্রবধূ এস্থার ডুফলোর জন্য শাড়িও কিনেছেন। আজ সোমবার সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় এসব জানিয়েছেন নির্মলা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি এ কথাও বলেছেন, তিনি চান না​ অভিজিতের গায়ে কোনো রাজনীতির আঁচড় লাগুক। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে যেন সেইভাবে কথা বলেন।

নির্মলা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী চাইলে নিশ্চয়ই অভিজিৎ তাঁর সঙ্গে কাজ করবেন।

যদিও অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় এর আগে বলেছিলেন, কেন্দ্রীয় সরকারের গৃহীত অনেক অর্থনৈতিক প্রকল্পে তাঁর সায় নেই।

গত শুক্রবার রাতে অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় দিল্লিতে আসেন। আজ শনিবার সকালেই তিনি ছুটে যান তাঁর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে। ঢুকেও পড়েন তাঁর স্মৃতিবাহী হোস্টেলে। সেখানে কিছুক্ষণ টেবিল টেনিস খেলেন। তারপর চায়ের কাপে মুখ দেন। এ সময় ওখানে চলে আসা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন। সেলফি তোলেন।

অভিজিতের নোবেল পাওয়ার পর যথারীতি প্রধানমন্ত্রী মোদি তাঁকে অভিনন্দন জানান। তবে মোদির ‘বিলম্বিত অভিনন্দন’ নিয়ে সমালোচনা হয়। বিজেপি নেতাদের কয়েকজন অভিজিতের নামের সঙ্গে ‘বামপন্থী অর্থনীতিবিদের’ তকমা জুড়ে দেন।

শুক্রবার ভারতের কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী পীযূষ গোয়াল বলেছেন, ‘নোবেল পাওয়ার জন্য আমরা অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়কে অভিনন্দন জানাই। আপনারা সবাই জানেন, উনি বামপন্থী মানসিকতার। কংগ্রেসের ঘোষিত ন্যায় প্রকল্পকে উনি সমর্থন দিয়েছিলেন। ন্যায় প্রকল্পের গুণগান গেয়েছেন। ভারতের মানুষ ওনার অর্থনৈতিক তত্ত্বকে খারিজ করে দিয়েছে।’

আর বিজেপির জাতীয় সম্পাদক রাহুল সিনহা এক ধাপ এগিয়ে বলেছেন, ‘বামপন্থী অর্থনীতি এ দেশে চলে না। মানুষ বামপন্থাকে প্রত্যাখ্যান করেছে। বিদেশের কোথায়ও অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের তত্ত্ব কাজে লাগতে পারে। তবে ভারতে দারিদ্র্য দূরীকরণে তাঁর তত্ত্ব কাজে আসবে না। মহাত্মা গান্ধীর নীতিতেই ভারতে আর্থিক উন্নতি সম্ভব।’

তবে অভিজিতের এই নোবেলপ্রাপ্তিতে অভিনন্দন জানিয়েছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী এবং পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতা বলেছেন, ‘তিনি আমাদের দেশের গর্ব, বাঙালিদের গর্ব, রাজ্যের গর্ব।’

রাহুল গান্ধী বলেছেন, দারিদ্র্য দূরীকরণে অভিজিতের অর্থনৈতিক তত্ত্ব ভারততে অর্থনীতির উন্নয়নের পথ দেখাতে পারে।