ঝরে যাক মেদ

পেটের মেদ কমাতে ব্যায়ামের পাশাপাশি খাদ্যাভ্যাসেও পরিবর্তন আনতে হবে। ছবি: অধুনা
পেটের মেদ কমাতে ব্যায়ামের পাশাপাশি খাদ্যাভ্যাসেও পরিবর্তন আনতে হবে। ছবি: অধুনা

বেশি খেলে পেটে মেদ বা চর্বি জমে। কিন্তু মেদ জমার ভয়ে কি আপনি কম খেয়ে থাকবেন? পছন্দের খাবার খাবেন আবার পেটে মেদও জমবে না—এ দুটি যদি একসঙ্গে সম্ভব হয়, তাহলে তো কথাই নেই। সেটাও সম্ভব কিছু নিয়ম মানলে।

নিজেকে ভালো রাখুন
নিজেকে সুস্থ ও সুন্দর রাখতে পেটের মেদ কমাতেই হবে। এ জন্য সময় একটু বেশি লাগলেও সঠিক নিয়মে নিয়মিত ব্যায়াম করলে পেটের মেদ দূর করা সম্ভব। পাশাপাশি খাদ্যাভ্যাসে কিছু পরিবর্তনও আনতে হবে। খাবার খাওয়ার আধা ঘণ্টা পরে পানি পান করা শরীরের জন্য উপকারী। রাতের খাবার খেতে হবে ঘুমানোর দুই ঘণ্টা আগে। এসবের পাশাপাশি নিয়মিত ব্যায়াম করলে পেটের মেদ নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। ভোগ লাইফস্টাইল লাউঞ্জের প্রশিক্ষক এ সুফিয়ার জানান, পেটের মেদ কমাতে নিয়মিত ব্যায়ামের বিকল্প নেই। সকালে খালি পেটে ৩০ মিনিট থেকে এক ঘণ্টা সময় ব্যায়ামের জন্য দিন। সকালে সম্ভব না হলে সন্ধ্যা বা রাতের দিকেও করতে পারেন। একই সঙ্গে সুষম খাবার গ্রহণ করতে হবে। এখানে একটি জিনিস মনে রাখতে হবে, না খেয়ে থাকা মানে ডায়েট নয়। সম্ভব হলে দুই থেকে তিন ঘণ্টা পরপর খান। এটা ভালো। ব্যায়াম করার পাশাপাশি শর্করা, আমিষ, চর্বিজাতীয় খাবারও খেতে হবে। একই সঙ্গে ভিটামিনযুক্ত খাবার এবং পরিমাণমতো পানি পান করা উচিত।

মেদ কমানোর ব্যাপারে ভালো ফল পেতে দিনে দুই বেলা এ সুফিয়ারের দেওয়া ব্যায়ামগুলো করতে পারেন। নিয়মিত এ ব্যায়াম করলে তিন মাসের মধ্যে আপনার পেটের মেদ কমার সুফল পাবেন।

পেট ও পুরো শরীর
পেট তো বটেই, পাশাপাশি পুরো শরীরের মেদ কমানোর দিকে নজর দেওয়া উচিত। তাহলে পুরো শরীর সুন্দর কাঠামো পাবে। শরীরের প্রতিটি অঙ্গের জন্য যে ব্যায়ামটি করলে আপনি সবচেয়ে বেশি উপকার পান, তার ওপর জোর দেওয়া উচিত। যেমন আপনি সাঁতার কাটতে পারেন। আবার সাইক্লিং করতে পারেন। পুরো শরীরের মেদ কমানোর লক্ষ্য মাথায় রাখলে পেটের মেদও কমে আসবে। পেটের মেদ কমানোর জন্য ভারোত্তোলনও করতে পারেন। শরীরের মেদ কমার পাশাপাশি শক্তিশালী পেশি গঠিত হয়। এতে যেমন ডাম্বেল ব্যবহার করা হয়, তেমনি শরীরের ওজনটাকেও কাজে লাগানো হয়। পেশি শক্তিশালী করার কারণে ভবিষ্যতেও আপনার শরীর সহজেই মেদ ঝরাতে (ফ্যাট বার্ন) পারবে।

খাদ্যাভ্যাস
পেটের মেদ কমাতে ভাজাপোড়া কম খাওয়া উচিত। চেষ্টা করুন কম তেলে রান্না করা বা সেদ্ধ করা খাবার খেতে। কোনোভাবেই ফাস্ট ফুড খাওয়া উচিত নয়। মেয়নেজ, পনির, সস, তেল, মাখন এসব আপনার পেটে চর্বি জমতে বড় ভূমিকা রাখে। দিনে তিন বেলা ভারী খাবার খাওয়ার চেয়ে পাঁচ বেলা খান পরিমাণে কম করে। একেবারে না খেয়ে থাকা ঠিক নয়। ভাত খাওয়ার চেয়ে ফল বা সবজি বেশি করে খান। পেট ভরবে কিন্তু ভুঁড়ি বাড়বে না। কোমল পানীয় কিছুক্ষণের জন্য প্রশান্তি দিতে পারে কিন্তু এটা পেটে চর্বি জমানোর পেছনে দায়ী। একইভাবে বাজারের ফ্রুট জুসে থাকা প্রচুর চিনি ও অন্যান্য উপাদান ভুঁড়ি বাড়াতে সহায়ক। তাই প্রচুর পানি, বাসায় বানানো ফলের রস, ফলের সালাদ হতে পারে খুব ভালো বিকল্প।

অভ্যাস বদলান
পেটের মেদ কমানোর জন্য নিয়মিত হাঁটুন। পেটে মেদ জমার অন্যতম কারণ খাবার ঠিকভাবে হজম না হওয়া। ঘুমানোর অন্তত দুই ঘণ্টা আগে রাতের খাবার খেয়ে কিছুক্ষণ হাঁটুন। এতে খাবার ভালোভাবে হজম হবে। পেটে মেদ জমবে না। অফিস বা বাসায় যতটা সম্ভব লিফটের বদলে সিঁড়ি ব্যবহার করুন। এটা পেটের জমে থাকা চর্বি অপসারণের খুব ভালো উপায়। সিঁড়ি বাওয়ার ফলে পেটের ওপর চাপ পড়ে এবং ধীরে ধীরে চর্বি কমতে থাকে।

চেষ্টা করুন সব সময় সোজা হয়ে দাঁড়াতে, বসতে ও হাঁটতে। কুঁজো হয়ে হাঁটবেন না বা বসবেন না। দীর্ঘ সময় কুঁজো হয়ে এক স্থানে বসে থাকা, কম্পিউটারে কাজ করা, এসবের কারণে ভুঁড়ি বেড়ে যায়। প্রতি এক ঘণ্টা অন্তর একবার উঠে দাঁড়ান ও সোজা হয়ে বসুন।