শিশুর জন্য ডায়াপার

শিশুকে ডায়পার পরালে তার আরামের কথা ভাবতে হবে। মডেল: জুয়াইফির, ছবি: অধুনা
শিশুকে ডায়পার পরালে তার আরামের কথা ভাবতে হবে। মডেল: জুয়াইফির, ছবি: অধুনা

ঘর আলো করে আসে নতুন শিশু। বাবা-মা থেকে শুরু করে আত্মীয়স্বজন—সবাই খুশি হন নতুন অতিথির আগমনে। তবে নবজাতকের যত্নের জন্য প্রয়োজন অনেক কিছুই। এর মধ্যে ডায়াপার অন্যতম।

আরাম সবার আগে

ডায়াপারের বেলায় সবার আগে মায়েরা শিশুদের আরামের দিকটা খেয়াল রাখে। শিশুদের আরামের কথা চিন্তার এসএমসি নিয়ে এসেছে আদর্শ বেবি ডায়াপার ‘স্মাইল’। স্মাইল বেবি ডায়াপার আরামদায়ক বলে জানা গেল এর প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান এসএমসির কাছ থেকে। এতে আছে সুপার জেল টেকনোলজি, যা সাধারণ ডায়াপারের চেয়ে অধিক শোষণক্ষমতাসম্পন্ন হওয়ায় লিক হওয়ার কোনো ভয় নেই। এটিতে শিশুরা থাকে র‌্যাশমুক্ত, ১২ ঘণ্টা পর্যন্ত সুরক্ষিত।

পছন্দের ডায়াপার

বেশি গুরুত্বপূর্ণ হলো ভালো মানের ডায়াপার পছন্দ করা। নিম্নমানের ডায়াপার বাচ্চার জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারে। ডায়াপার বেছে নেওয়ার সময় তার শোষণক্ষমতা, আরামদায়ক এবং লিকপ্রুফ কি না, তা দেখে নেবেন। ডায়াপার বেশি আঁটসাঁট করে পরানো যাবে না, তাহলে শিশুরা খুব অস্বস্তিতে থাকবে। ডায়াপার বদলানোর সময় শিশুকে খুব যত্ন করে পরিষ্কার করতে হবে। এর জন্য ভেজা কাপড়, তুলার তৈরি বল অথবা বেবি ওয়াইপস ব্যবহার করে পরিষ্কার করতে হবে। শক্ত ডায়াপার পরালে অনেক সময় শিশুর পায়ের ও কোমরের আশপাশে দাগ হয়ে যেতে পারে। তাই ঢিলেঢালা ডায়াপার পরালে শিশুরা আরাম পেতে পারে। জীবাণু যাতে ছড়াতে না পারে, সে জন্য শিশুর ডায়াপার বদলাবার পর ভালো করে হাত ধুয়ে নিতে হবে।

উপযোগী ডায়াপার

নতুন মা-বাবা তাঁদের সন্তানের জন্য ডায়াপার ব্যবহার করতে পারেন। একেক বয়সের শিশুর ডায়াপার একেক ধরনের। ফলে মাকে বাচ্চার বয়সের উপযোগী ডায়াপারের দিকে মনোযোগী হতে হবে। গরম, শীত, বর্ষা ঋতুভেদেও সন্তানের জন্য ডায়াপার ব্যবহারের সময় ও প্রয়োজনীয়তা ঠিক করা উচিত।

ডায়াপারের ব্যবহার

নাগরিক জীবনে ডায়াপারের ব্যবহার বেড়েছে। শিশুর বয়স আড়াই বছর পূর্ণ হওয়া পর্যন্ত ডায়াপার পরানোর প্রচলন রয়েছে। ডিসপোজেবল ও সুতি—দুই ধরনের ডায়াপার শিশুকে পরানো যেতে পারে। আধুনিক মা-বাবা এ রকম পোশাকে নানা রকম সুবিধা দেখতে পান। বিশেষত, বাচ্চাকে নিয়ে কোথাও বেরোনোর সময়। বেশি দামি ব্র্যান্ডের দরকার নেই। খেয়াল রাখতে হবে ভেতরের প্ল্যাস্টিক আবরণ যেন শিশুর ত্বক স্পর্শ না করে। অনর্থক বা বেশি ডায়াপার ব্যবহারে শিশুর মলমূত্র একসঙ্গে মিলে ডায়াপার র‌্যাশ সৃষ্টি হয়। শিশুকে ডায়াপার পরালে অবশ্যই নিয়মিত তা বদলানোর কাজটি মনোযোগ দিয়ে করতে হবে। যাতে মলমূত্র ত্যাগের পর তা দীর্ঘক্ষণ শিশুর গায়ে লেগে না থাকে। বাচ্চা একবার প্রস্রাব করলেই ডায়াপার পরিবর্তন করে দিতে হবে। ডায়াপারটি ওজনের দিকে লক্ষ রাখতে হবে। ডায়াপার যেন বেশি ভারী না হয়। বিষয়টি বাচ্চার জন্য খুবই অস্বস্তিকর। এমনকি অনেক সময় পায়খানা করার পর এটার ওপর বাচ্চাকে দীর্ঘ সময় রেখে দেওয়া হচ্ছে। একবার প্রস্রাব অথবা পায়খানা করলেই ডায়াপার পরিবর্তন করা উচিত।

সতর্কতা

ডায়াপার পরিয়ে আপনি নবজাতককে বাইরে নিয়ে যেতে পারবেন। অনেকে ঘরের ভেতরও দীর্ঘ সময় ডায়াপার পরিয়ে রাখেন। যদিও তা উচিত নয়। এতে ডায়াপার র‌্যাশ হওয়ার ভয় থাকে। অবশ্য র‌্যাশ হওয়ার প্রধান কারণ অতিরিক্ত আর্দ্রতা। এ ছাড়া শক্ত করে শিশুকে ডায়াপার পরালেও শিশুর ক্ষতি হতে পারে। ভেজা জলবায়ু এবং ঠিকভাবে শিশুকে পরিষ্কার না করে ডায়াপার পরালে সমস্যা হতে পারে। শিশু ডায়াপার নষ্ট করার সঙ্গে সঙ্গে পরিবর্তন করা উচিত। যতবার নষ্ট করবে ততবারেই পরিবর্তন করা উচিত। এতে তার নিতম্ব পরিষ্কার ও শুকনা থাকবে। সম্ভব হলে শিশুকে কিছুক্ষণ ডায়াপার ছাড়া উন্মুক্ত অবস্থায় রাখুন। ডায়াপারের র‌্যাশ দূর করতে পেট্রোলিয়াম জেলি বেশ কার্যকর ভূমিকা পালন করে।

পরিষ্কার থাকতে ও সময় বাঁচাতে

বাচ্চাদের ডায়াপার পরানো খুবই সচরাচর আর সাধারণ একটি ব্যাপার। এটি কর্মজীবী মায়ের সময় যেমন বাঁচায়, তেমনই বাড়িঘর বা কাপড় নোংরা করা থেকেও মুক্তি দেয়। প্রথমদিকে ডায়াপার পরানো বা পরিবর্তন করা একটু কঠিন লাগতে পারে, কিন্তু ধীরে ধীরে একেবারে সহজ হয়ে যাবে। ডায়াপার পরাতে বাবা–মাকে কিছু বিষয়ের দিকে নজর রাখতে হয়। অথবা বাচ্চাদের যারা দেখাশোনা করে, তাদের এ ব্যাপারে যথেষ্ট জ্ঞান থাকা প্রয়োজন।

আকারে ভিন্নতা

দেশের বাজারে বেশ কয়েক ধরনের ডায়াপার পাওয়া যায়। স্মাইলের আছে কয়েকটি আকারের ডায়াপার। পাশাপাশি প্যাকেটের মধ্যে রয়েছে ভিন্নতা। রয়েছে মিনি ও স্ট্যান্ডার্ড প্যাকেট। মিনি প্যাকেটে ৪-৫টা ও বড় প্যাকেটে ২০ থেকে ২৮টা ডায়াপার থাকে। এ ছাড়া অন্য ব্র্যান্ডের ডায়াপার এক প্যাকেটে ১২ থেকে ৫০টি পর্যন্ত।

দরদাম

মান ও আকারের ওপর শিশুদের ডায়াপারের দাম নির্ভর করে। পিস হিসেবে প্রতিটি ডায়াপারের দাম ১০ থেকে ৫৫ টাকার মধ্যে। দেশের প্রতিটি ওষুধের দোকানে শিশুদের ডায়াপার পাওয়া যায়। এ ছাড়া বসুন্ধরা শপিং মল, যমুনা ফিউচার পার্ক, সীমান্ত স্কয়ার, এলিফ্যান্ট রোড, নিউমার্কেটেও শিশুপণ্য পাওয়া যায় এমন দোকানেও ডায়াপার মিলবে।