মা-বাবা করোনা সংক্রমিত হলে শিশুসন্তানের যত্ন

মা-বাবার কেউ কিংবা দুজনেই করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলে সন্তানকেও অবশ্যই পরীক্ষা করাতে হবে। পরীক্ষার ফল নেগেটিভ এলে তাকে আলাদা রাখার ব্যবস্থা করতে হবে। এ ক্ষেত্রে মা-বাবার যেকোনো একজন আক্রান্ত হলে বিষয়টি সহজ। কিন্তু দুজনেই আক্রান্ত হলে পরিবারের অন্য সদস্যদের এগিয়ে আসতে হবে।

শিশুদের কাছে মা-বাবার করোনায় আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি গোপন করা যাবে না। তবে এমনভাবে বুঝিয়ে বলতে হবে, যেন তারা আতঙ্কিত হয়ে না পড়ে। আক্রান্ত মা কিংবা বাবা সম্পূর্ণ আলাদা থাকবেন। তাঁদের বাথরুম, খাবার, বিছানা, তৈজসপত্র, সব আলাদা থাকবে। আক্রান্ত ব্যক্তির ঘরের জানালা খোলা থাকবে, তবে দরজা থাকবে বন্ধ।

এ সময় বাসার সবাইকে মাস্ক পরতে হবে। এক বছরের কম বয়সী শিশুদের মাস্ক পরার দরকার নেই। তবে তারা যে ঘরে থাকছে, সেই ঘরের বাইরে যেন না যায়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। আক্রান্ত ব্যক্তি কোনো কারণে নিজের ঘর থেকে বের হলে অন্যদের থেকে অবশ্যই ছয় ফুট দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। কিছু স্পর্শ করার পর সাবান-পানি দিয়ে হাত ধুয়ে ফেলতে হবে। বাড়ির সবাইকে কিছুক্ষণ পরপরই সাবান-পানি দিয়ে হাত ধোয়ার অনুশীলন করতে হবে। শিশুদেরও এটা শেখাতে হবে। রোগীসহ বাড়ির সবাই হাঁচি-কাশির শিষ্টাচার মেনে চলবেন, ব্যবহার করা টিস্যু ঢাকনাযুক্ত বিনে ফেলবেন।

বুকের দুধের মাধ্যমে করোনাভাইরাস ছড়ানোর তথ্যপ্রমাণ এখনো পাওয়া যায়নি। কাজেই মায়ের করোনা হলেও সন্তানকে বুকের দুধ দেওয়া অব্যাহত রাখতে হবে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও একই পরামর্শ দিয়েছে। তবে সন্তানকে দুধ পান করানোর আগে মা সাবান-পানি দিয়ে হাত ধুয়ে নেবেন এবং মাস্ক পরবেন। শিশুদের হাতও সাবান-পানি দিয়ে ধুতে হবে। খুব ছোট শিশুদের হাত জীবাণুমুক্ত করার ক্ষেত্রে অ্যালকোহলজাতীয় তরল ব্যবহার করা উচিত নয়। কারণ, তারা প্রায়ই মুখে হাত দেয়।

শিশুদের এ সময় সুষম খাবার অর্থাৎ পর্যাপ্ত ভাত, মাছ, মাংস কিংবা খিচুড়ি দিন। পাশাপাশি রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে জিংক ও ভিটামিন সি–যুক্ত খাবার যেমন লাল মাংস, শিম, শাকসবজি, সামুদ্রিক মাছ, লেবু, টকজাতীয় ফল খাওয়াতে হবে। সেটি সম্ভব না হলে জিংক, ভিটামিন সি ও ডি সিরাপ বয়স অনুযায়ী খাওয়াতে পারেন।

লেখক: শিশুস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ