‘ওরা বড় হয়, তবু মনে হয়, ওরা বড় নয়’

বলিউডের সবচেয়ে জনপ্রিয় বাবাদের ভেতর একেবারে প্রথম সারিতে জ্বলজ্বল করবে অমিতাভ বচ্চনের নাম। চূড়ান্ত ব্যস্ততার ভেতরেও তিনি ‘বাবা’ হতে ভোলেননি। সুপারস্টার হয়েও সময় পেলেই ছোট্ট সন্তানদের নিজ হাতে গোসল করাতেন। শুটিং থেকে ফিরেই দৌড়ে যেতেন শ্বেতা বচ্চন আর অভিষেক বচ্চনের কাছে। তাঁরা বাবাকে ঘোড়া বানিয়ে পিঠে চড়তেন। আর তাতেই কেটে যেত শুটিংয়ের কঠোর পরিশ্রম আর ঝক্কির সব ক্লান্তি। পুরোনো সেসব ছবি শেয়ার করে অমিতাভ নিজেই লিখেছেন এ রকম অসংখ্য স্মৃতির কথা। সে রকমই কয়েকটি ছবি নিয়ে এই আয়োজন।
সিনেমার সেটে অমিতাভের সঙ্গে শ্বেতা
ছবি: ইনস্টাগ্রাম

ইনস্টাগ্রামে এই ছবি পোস্ট করে অমিতাভ লিখেছেন, ‘ছবিটি ১৯৭৬ সালে “আলাদিন” সিনেমার সেট থেকে তোলা। শ্বেতা বাবাকে দেখতে এসেছিল। আমি আর ওয়াহিদা রেহমান ওকে নিয়ে খেতে বসলাম। খাবার দেখে ভ্রু কুঁচকে গেল শ্বেতার। এই কাঁটাচামচ আর খাবার নিয়ে কী করবে, বুঝে উঠতে পারছিল না। আমি আমার এই ছোট্ট শ্বেতাকে আবার ফিরে পেতে চাই।’

ছোট্ট শ্বেতা ও অভিষেক
ছবি: ইনস্টাগ্রাম

ছোট্ট শ্বেতা ও অভিষেক। অমিতাভের চোখে তারা এখনো অতটুকুই আছেন।

অমিতাভের সঙ্গে অভিষেক ও শ্বেতা
ছবি: ইনস্টাগ্রাম

এই ছবি পোস্ট করে অমিতাভ বচ্চন লিখেছেন, ‘কী অবিশ্বাস্য দ্রুততায় ওরা বড় হয়ে যায়, চারপাশটা বদলে যায়। হঠাৎ মনে হয়, তবে কি অনেকটা পথ পেরোলাম! অবুঝ, সরল, ছোট্ট ওরা হয়ে ওঠে বুদ্ধিমান। এরা বড় হয়, তবু মনে হয়, ওরা আসলে বড় হয়নি। ওরা অবুঝ, সরল আর ছোট্ট।’

মেয়ের সঙ্গে অমিতাভ
ছবি: ইনস্টাগ্রাম


অমিতাভ বচ্চন প্রায়ই নস্টালজিক হয়ে ওঠেন। এই যেমন এই ছবি পোস্ট করে লিখেছেন, ‘আমি তখনো শ্বেতার হাত ধরে থাকতাম। এখনো ওর হাত ধরে থাকি। তাহলে কোথায় বড় হলো আমার প্রথম সন্তান?’

বাবা ও মেয়ে
ছবি: ইনস্টাগ্রাম

শ্বেতার ছোটবেলার আর বড়বেলার এই ছবি মানতেই পারেন না অমিতাভ। তাই পোস্টে জানিয়েছেন যে, কবে কখন অলক্ষ্যে শ্বেতা বড় হয়ে গেল, তিনি টেরই পেলেন না। এই ছবির দিকে তাকিয়ে তাঁর নাকি তাই–ই মনে হচ্ছে।

ছোট্ট শ্বেতা ও অমিতাভ
ছবি: ইনস্টাগ্রাম

এই যে শ্বেতাকে গোসল করিয়ে দিচ্ছেন অমিতাভ।

ছোট্ট মেয়ে ও ছেলের সঙ্গে অমিতাভ
ছবি: ইনস্টাগ্রাম

অমর-আকবর-অ্যান্থনির সেট থেকে তোলা এই ছবি। আরও স্পষ্ট করে বললে হয়, ‘মাই নেম ইজ অ্যান্থনি গঞ্জালভেস’ গানের শুটিংয়ে তোলা। হলিডে ইন বলরুমে, সাগরপাড়ে। ৪৪ বছরের পুরোনো এই ছবি যেন স্মৃতির ভান্ডারে মাঝরাতের ডাকাতের মতো হানা দেয়। অমিতাভের মনে পড়ে, তিনি শুরুতে ছবিটি করতেই চাননি। কেননা, যে ধরনের ছবি তখন হিট হচ্ছিল, এটা ছিল সেই ছকের একেবারেই বাইরে। তবু কী মনে করে করলেন। আর সেই সময় ছবিটি বক্স অফিসে বিপ্লব ঘটিয়ে আয় করেছিল সাড়ে সাত কোটি রুপি। মুম্বাইয়ের ২৫টা হলে টানা ২৫ সপ্তাহ একাই রাজত্ব করেছিল এই ছবি। সত্তরের দশকের সেই টাকার অঙ্ককে এই সময়ের সঙ্গে মেলালে তা ‘বাহুবলি টু’কেও ছাড়িয়ে যাবে। অমিতাভের মনে হয়, এই সব ঘটনা ঘটেছিল। কারণ, তাঁর দুই সন্তান সেদিন সেটে এসেছিল।

বাবা-মেয়ে: শ্বেতা ও অমিতাভ বচ্চন
ছবি: ইনস্টাগ্রাম

অমিতাভ এই ছবি পোস্ট করে জানিয়েছেন, অভিষেক বচ্চন আর তাঁর সন্তান নেই, তিনি এখন তাঁর বন্ধু। লিখেছেন, ‘যখন আপনার সন্তান আপনার জুতা পরবে আর আপনাকে শেখাবে কোনটা ঠিক, কোনটা ভুল, তখন বুঝবেন, সে আর আপনার সন্তান নেই। সে এখন আপনার বন্ধু, পরামর্শক।’

স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে অমিতাভ
ছবি: ইনস্টাগ্রাম