গানে, কবিতায় বর্ষাবন্দনা

‘এসেছে বরষা, এসেছে নবীনা বরষা’ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের এই কবিতা আবৃত্তির মধ্য দিয়ে বর্ষাবন্দনায় মেতে উঠেছিলেন আবৃত্তিশিল্পীরা। সমাজ সমীক্ষা সংঘের আয়োজনে ‘বর্ষামঙ্গল’ অনুষ্ঠানে দেড় ঘণ্টাব্যাপী চলল বর্ষাবন্দনা। ৫ আগস্ট নগরের থিয়েটার ইনস্টিটিউট চট্টগ্রাম (টিআইসি) মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এ আসরে ছিল বর্ষা নিয়ে কথামালা, গান, নাচ ও আবৃত্তি।
সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় শামীম সৈকতের বাঁশির সুরের সঙ্গে শুরু হয় বর্ষামঙ্গলের আয়োজন। এরপর সদারঙ্গ উচ্চাঙ্গসংগীত পরিষদের সদস্যরা পরিবেশন করেন বর্ষার রাগসংগীত। সুরের তালে বর্ষার আবাহন শেষে মঞ্চে শুরু হয় কথামালার আয়োজন।
এই পর্বে সংগঠনের সভাপতি কাজী মাহমুদ ইমামের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন কবি ও সাংবাদিক কামরুল হাসান বাদল। এ সময় তিনি বলেন, ‘বর্ষা মানে গ্রীষ্মের দাবদাহের পর প্রশান্তির অবিরাম বারিধারা। বর্ষার আগমন কৃষকের জন্য আশীর্বাদ। একসময় বর্ষায় ঘরের দেউড়িতে জমত পুঁথি পাঠের আসর। লেখনীর মাধ্যমে বর্ষাবন্দনা করেছেন বহু কবি-সাহিত্যিক। বর্ষা নিয়ে রয়েছে অসংখ্য গান-কবিতা। হাজার বছর ধরে বাঙালির জীবনে বর্ষার রূপ-প্রকৃতি ছিল এমনই। পৃথিবীর অনেক জাতির বর্ষা নেই, বাঙালির আছে।’ কথামালা পর্ব শেষে আবারও গান, নাচ ও আবৃত্তির ছন্দে মুখরিত হয় মিলনায়তন।
‘শাওন গগনে ঘোর ঘনঘটা’ এই গানের সঙ্গে সমবেত নৃত্য পরিবেশন করেন ‘নৃত্যময়ী’ নৃত্যদলের সদস্যরা। এ সময় তাঁরা আরও একটি সমবেত ও একটি একক নৃত্য পরিবেশন করে দর্শকদের মুগ্ধ করেন।
এরপর একে একে মঞ্চে আসেন তারুণ্যের উচ্ছ্বাসের আবৃত্তিশিল্পী শ্রাবণী দাশ গুপ্তা, স্বপ্নযাত্রীর আবৃত্তিশিল্পী লুবাবা ফেরদৌসী ও ত্রিতরঙ্গ আবৃত্তি দলের আবৃত্তিশিল্পী জাহিদ অয়ন। কবিতার পরিবেশনায় বর্ষাকে ফুটিয়ে তোলেন এই তিন আবৃত্তিশিল্পী।
সব শেষে ছিল ‘রবির কিরণে দিবরে পরান ঢালি’ শিরোনামে সমাজ সমীক্ষা সংঘের নিজস্ব প্রযোজনা। ৪০ মিনিট দীর্ঘ এই প্রযোজনায় দর্শকদের ভালো লেগেছে ‘মন মোর মেঘেরও সঙ্গী’, ‘তোমার খোলা হাওয়া’ ও ‘বরিষ ধরা মাঝে শান্তির বারি’ শিরোনামের গানগুলো।
সাতটি বর্ষার গানের সঙ্গে ছিল কবিতার পরিবেশনাও। এই আয়োজনে রবীন্দ্রনাথকে আরও একবার প্রাসঙ্গিকভাবে দর্শকদের সামনে হাজির করল সমাজ সমীক্ষা সংঘ। আসরে উপস্থাপনা করেন পল্লব গুপ্ত।