যে কারণে আজ মিথ্যা বলবেন না

হুমায়ূন আহমেদের ‘দীঘির জলে কার ছায়া গো’ উপন্যাসের নায়ক মুহিবের একটা বিশেষ দিবস আছে—মিথ্যা দিবস। সপ্তাহে এক দিন সে দিনটি পালন করে। ‘বুধবার হলো মুহিবের মিথ্যা দিবস। মিথ্যা দিবসে রাত ১১টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত সে মিথ্যা কথা বলে।’ অবশ্য জগতের সবাই কমবেশি মিথ্যা বলে। ছোট মিথ্যা, বড় মিথ্যা, সাদা মিথ্যা, ডাহা মিথ্যা; নানা রকম মিথ্যা আছে। কেউ মিথ্যা বলে বাধ্য হয়ে, বিপদে পড়ে, পরিস্থিতি সামলাতে। কেউ বলে নেহাত অন্যকে খুশি করার জন্য। শখের মিথ্যাবাদীও আছে। কোনো কারণ ছাড়াই মিথ্যা বলে তারা। মনোবিজ্ঞানী রিচার্ড ওয়াইজম্যান দাবি করেছেন, প্রতিদিন জনসংখ্যার প্রায় এক-তৃতীয়াংশ গুরুতর মিথ্যা বলে। সত্য-মিথ্যার প্রসঙ্গ বলতে গেলে রাজনীতিবিদদের কথা এসেই যায়। এ ক্ষেত্রে সদ্য সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রীতিমতো ‘মিথ্যারাজ’–এর স্বীকৃতি পেতেই পারেন। ‘ওয়াশিংটন পোস্ট’ পত্রিকার ‘ফ্যাক্ট চেক’ জানিয়েছিল, প্রেসিডেন্ট হিসেবে চার বছরে ট্রাম্প ৩০ হাজার ৫৭৩টি মিথ্যা কথা বলেন। অবশ্য বিশ্বজুড়ে অন্য সব রাজনীতিবিদদের মিথ্যার হিসাব করলে কে যে চ্যাম্পিয়ন হয়ে যায় বলা মুশকিল।

তবে আজ কিন্তু সত্য দিবস, সততার দিন। প্রতিবছর ৩০ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্রে এটি পালিত হয়। ‘দ্য বুক অব লাইস’ বইয়ের লেখক এম হিরশ গোল্ডবার্গ নব্বই দশকের গোড়ার দিকে দিবসটির প্রচলন করেন। এপ্রিল ফুলের বোকামো দিয়ে শুরু হলেও মাসটি যেন সত্য দিয়ে শেষ হয়, এই ভাবনা থেকেই ম্যারিল্যান্ড সরকারের প্রেসসচিব এ মাসের শেষ দিনটি ‘সত্য দিবস’ হিসেবে নির্বাচন করেন। সত্যবাদী কিংবা মিথ্যাবাদী সবার জন্যই এই দিন গুরুত্বপূর্ণ।

এমন দারুণ একটি দিবস উদ্‌যাপন করা যেতেই পারে। আজ প্রতিজ্ঞা করুন, পরিস্থিতি যা-ই হোক, সারা দিনে একটি মিথ্যাও বলবেন না। এরপর এই একটি দিনের অনুশীলনকে সপ্তাহ, মাস, বছর, যুগ-যুগান্তর-সারা জীবনের অভ্যাস বানিয়ে ফেলতে পারলে কিন্তু বেশ হয়। জীবন কাটবে সত্য-সুন্দরে।

ডেজ অব দ্য ইয়ার অবলম্বনে