যে ১১ অভ্যাস আপনাকে অন্যের কাছে আকর্ষণীয় করে তোলে

আমরা প্রায়ই মনে করি, আকর্ষণীয় হওয়ার মানে নিখুঁত চেহারা বা চমৎকার স্টাইল। আদতে কি তা কেবলই চেহারা ও বাহিক্যতা? বাস্তবে মানুষকে সবচেয়ে বেশি আকর্ষণীয় করে তোলে তাঁর মনোভাব, আচরণ, ব্যবহার আর জীবনযাপনের অভ্যাস। চলুন জেনে নেওয়া যাক এমনই ১১টি অভ্যাস, যেসব আপনার ব্যক্তিত্বকে আরও উজ্জ্বল ও আকর্ষণীয় করে তুলতে পারে।

মানুষকে সবচেয়ে বেশি আকর্ষণীয় করে তোলে তাঁর মনোভাব, আচরণ, ব্যবহার আর জীবনযাপনের অভ্যাসছবি: কবির হোসেন

১. মুখে বলার চেয়ে কাজে প্রমাণ দিন

হয়তো আপনার মাথায় কোনো পরিকল্পনা আছে বা ভবিষ্যতে ভালো কোনো কাজ করবেন বলে ভাবছেন; আগেই ঢাকঢোল পিটিয়ে সব বলতে যাবেন না। কাউকে আগেই ‘আমি এটা করব, ওটা করব’ বলার চেয়ে কাজটি করে দেখানো অনেক বেশি অর্থবহ।

২. মন থেকে ‘না’ বলতে শিখুন

কখনো কখনো না চাইতেও কাজে ‘হ্যাঁ’ বলে ফেলেন? চেষ্টা করেও অতিরিক্ত কাজের চাপ সামাল দিতে পারছেন না? মনে রাখবেন, এতে দিন শেষে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন আপনিই। সব সময় ‘হ্যাঁ’ বলা ব্যক্তিকে সম্মান এনে দেয় না; বরং নিজের সীমা ও অগ্রাধিকার জানাতে পারাটাই আত্মসম্মানের পরিচয়। শুরুর দিকে ‘না’ বলতে অস্বস্তি হতে পারে, কিন্তু ধীরে ধীরে তা রপ্ত করুন। এতে আপনিও নিজেকে সম্মান দিতে শিখবেন।

আরও পড়ুন

৩. অচেনা মানুষের জন্যও ভালো কিছু করুন

কারও হাতে ভারী কিছু থাকলে সাহায্য করা, কারও জন্য দরজাটা মেলে রাখা কিংবা পড়ে যাওয়া কিছু তুলে দেওয়া—এমন ছোট ছোট কাজ খুবই সাধারণ, কিন্তু ভেবে দেখেছেন কি, এসব কাজ আপনাকে অন্যের মনে জায়গা দিতে কতটা ভূমিকা রাখে। এমন ছোট ছোট মানবিক আচরণ আপনাকে অন্যের থেকে আলাদা করে তোলে।

উন্নতি করতে হলে সেরাদের কাছ থেকেই শিখতে হবে
মডেল: আমিন ও দীপিকা, প্রথম আলো

৪. অহংকার পাশে রেখে চলতে শিখুন

নিজের চেয়ে এগিয়ে থাকা মানুষদের দেখে হিংসা নয়, শেখার মনোভাব রাখুন। যাঁরা ভালো করছেন, তাঁরা কীভাবে করছেন, তা পর্যবেক্ষণ করুন। প্রয়োজনে প্রশ্ন করুন। উন্নতি করতে হলে সেরাদের কাছ থেকেই শিখতে হবে।

৫. সবকিছু নিয়ে কৌতূহলী হোন

কথোপকথন তখনই বিরক্তিকর হয়ে ওঠে, যখন বলার মতো আর কিছু থাকে না। যদি আপনি নিজেই পৃথিবী, মানুষ, বিভিন্ন ঘটনা, আশপাশের মানুষের আচরণ নিয়ে কৌতূহলী হন, তাহলে আপনার শোনার মতো বা বলার মতো গল্প কখনোই ফুরোবে না। শুধু কি তা-ই? আশপাশের রসদ থেকে শেখার বস্তুও আহরণ করে নিতে পারবেন আপনি। কৌতূহলই মানুষকে বুদ্ধিদীপ্ত ও আকর্ষণীয় করে তোলে।

আরও পড়ুন

৬. কেউ রাগ করলে শান্ত থাকুন

রাগের জবাবে রাগ পরিস্থিতিকে আরও খারাপ করে। বরং আপনি যদি শান্ত থাকতে পারেন, সেটাই আপনার মানসিক শক্তি ও পরিপক্বতার পরিচয়। এ নিয়ন্ত্রণক্ষমতাই আপনাকে অন্যের থেকে আলাদা করে তোলে।

৭. নতুন মানুষের সঙ্গে নিজে থেকেই কথা শুরু করুন

সব সময় চেষ্টা করুন নতুন কিছু শিখতে
ছবি: পেক্সেলস

বিষয়টা অন্তর্মুখী মানুষদের ক্ষেত্রে কিছুটা কঠিন। তবে একবার রপ্ত করে ফেলতে পারলে তা আপনার মূল্য বাড়াবে বহুগুণে। ‘কমফোর্ট জোন’-এর বাইরে গিয়ে নতুন কারও সঙ্গে কথা বলা সহজ নয়, কিন্তু যাঁরা এটা পারেন, তাঁদের আত্মবিশ্বাসী বলে মনে হয়। আগ বাড়িয়ে কথা বলার এ পদক্ষেপই আপনার আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দেয়।

৮. শিখতে চাওয়া বিষয়ের তালিকা করুন

সব সময় চেষ্টা করুন নতুন কিছু শিখতে। শেখার আগ্রহই আপনাকে আকর্ষণীয় করবে। আপনি যা জানেন না বা কম জানেন, তার একটি তালিকা বানান। সময় পেলে সেসব সম্পর্কে পড়ুন, জানুন। জ্ঞানই দীর্ঘ মেয়াদে আপনাকে অন্যের কাছে মূল্যবান হিসেবে তুলে ধরবে।

আরও পড়ুন

৯. ধন্যবাদ জানাতে ভুলবেন না

একটি আন্তরিক ধন্যবাদও কারও পুরো দিন বদলে দিতে পারে। তবে কেবল বলার জন্যই নয়। মন থেকে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করুন। তাহলেই এর মূল্য থাকে।

১০. নিজের জন্য সময় রাখুন

কিছুটা সময় হলেও নিজের জন্য বরাদ্দ রাখুন প্রতিদিন।
মডেল: হীরা, সাজ: রেড বিউটি পারলার, ছবি: কবির হোসেন

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এটি। সময় জীবনের একমাত্র সম্পদ, যা আর ফিরে আসে না। যাঁরা নিজের সময়কে সম্মান করেন, নিজের উন্নতিতে ব্যয় করেন, তাঁরাই জীবনে এগিয়ে যান। নিজের যত্ন নেওয়া মানেই স্বার্থপর হওয়া নয়; বরং সচেতন হওয়া, যা দিন শেষে আপনাকে অন্যের কাছে আকর্ষণীয় করে তুলবে।

১১. শারীরিক ভঙ্গি ঠিক করুন

সোজা হয়ে দাঁড়ান, বুক কিছুটা উঁচু করুন। মাথাটা রাখুন সমুন্নত, যাতে মনে হয় আপনার মাথাটা সুতা দিয়ে ছাদের সঙ্গে যুক্ত। এ অবস্থায় ১০ সেকেন্ড থাকুন। এ অভ্যাস শরীরকে মনে করিয়ে দেয় কুঁজো না হওয়ার জন্য। সোজা ভঙ্গি আপনার আত্মবিশ্বাস ফুটিয়ে তোলে কথা শুরু করার আগে থেকেই।

সূত্র: লাইফ হ্যাক

আরও পড়ুন