পানিতে গুঁড়া হলুদ মেশানোর ট্রেন্ডিং ভিডিওর ব্যাপারটা আসলে কী
একে বলা হচ্ছে ‘টিংকারবেল টারমারিক ট্রেন্ড’। ফলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম আপাতত হলুদময়। কেউ কেউ বলছেন, এভাবে চলতে থাকলে বাজারে যে গুঁড়া হলুদের দাম বেড়ে যাবে!
কয়েক দিন ধরে টিকটক, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম কিংবা ইউটিউব খুললেই চোখে পড়ছে পানিতে গুঁড়া হলুদ মেশানোর অদ্ভুত সব ভিডিও। অন্ধকার ঘরে পানিভর্তি স্বচ্ছ গ্লাসে লোকজন গুঁড়া হলুদ ঢেলে দিচ্ছে, গ্লাসের নিচে জ্বলছে মুঠোফোনের ফ্ল্যাশলাইট। ঢেলে দেওয়া গুঁড়া হলুদ ধীরে ধীরে পানিতে মিশছে আর ফ্ল্যাশলাইটের আলোয় ছড়িয়ে পড়ছে চোখজুড়ানো হলুদ আভা। অন্ধকার ঘরে যেন হচ্ছে সূর্যোদয়।
এখানেই শেষ নয়, ট্রেন্ডিং ভিডিওগুলোর আবহসংগীত হিসেবে বাজছে শাহরুখ খানের সিনেমা ‘ওম শান্তি ওম’–এর জনপ্রিয় গান ‘ম্যায় আগার কাহু’র সুর। একে বলা হচ্ছে ‘টিংকারবেল টারমারিক ট্রেন্ড’। ফলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম আপাতত হলুদময়। কেউ কেউ বলছেন, এভাবে চলতে থাকলে বাজারে যে গুঁড়া হলুদের দাম বেড়ে যাবে!
ট্রেন্ডিং ভিডিওটির শুরু যেখানে
১৪ জুন মালয়েশীয় কনটেন্ট ক্রিয়েটর পুষ্পা গোমেন টিকটকে একটা ভিডিও ছাড়েন। যেখানে দেখা যাচ্ছে, প্রায় অন্ধকার ঘরে পুষ্পা গোমেন গ্লাসের পানিতে গুঁড়া হলুদ ঢালছেন। গ্লাসের নিচে জ্বলছে ফ্ল্যাশলাইট। পুষ্পার আশপাশে আরও কয়েকজন মালয়েশীয় কনটেন্ট ক্রিয়েটর। পানিতে গুঁড়া হলুদ পড়তেই ছড়িয়ে পড়ছে হলুদ আভা, সঙ্গে সঙ্গে বাজতে লাগল ‘ম্যায় আগার কাহু’র সুর। আর তাতে বিস্মিত পুষ্পার সঙ্গীরা। ব্যস, সেই থেকে ভিডিওটি ভাইরাল। টিকটকে পুষ্পা গোমেনের ভেরিফায়েড অ্যাকাউন্টে ভিডিওটির ভিউ সাড়ে তিন কোটি (২২ জুন রাত ১১টা পর্যন্ত)!
কেন ভাইরাল হলো
বিষয়টা মোটেও অভিনব কিছু নয় এবং এর পেছনে আপাতত জটিল কোনো রহস্য নেই বলেই মনে হচ্ছে। তবে পানিতে গুঁড়া হলুদ মিশে ফ্ল্যাশলাইটের কারণে যে হলুদ আভা সৃষ্টি করে, তা দেখতে সুন্দর নিঃসন্দেহে। এটাই হয়তো মানুষকে আকৃষ্ট করেছে। পাশাপাশি অন্ধকার ঘরে ‘ম্যায় আগার কাহু’র সুরটাও যোগ করেছে আলাদা মাত্রা। সব মিলিয়ে ট্রেন্ডটা নির্দোষ আনন্দময়। ফলে ছেলে–বুড়ো সবাইকে আকৃষ্ট করছে।
ভিডিও বানানোর প্রক্রিয়া
বাংলাদেশি টিকটকার ‘আর্টফুল শতাব্দী’ একটি ভিডিও টিউটরিয়াল বানিয়েছেন। তাঁর এই টিউটরিয়ালটির ভিউও কম নয়—ছয় লাখের বেশি! টিউটরিয়ালে শতাব্দী দেখিয়েছেন, কীভাবে অন্ধকার ঘরে একটা স্বচ্ছ গ্লাস, পানি, মুঠোফোনের ফ্ল্যাশলাইট, গুঁড়া হলুদ এবং অবশ্যই ‘ম্যায় আগার কাহু’র সুর যোগ করে বানাতে হয় ট্রেন্ডিং ভিডিওটি।
কতটা ভাইরাল এই ট্রেন্ড
টিকটকে তো বটেই, ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামেও হাজারো মানুষ এ ধরনের ভিডিও আপলোড করছেন। ইউটিউবে ভ্লগাররা বানাচ্ছেন ট্রেন্ডটির প্রতিক্রিয়া, টিউটরিয়ালসহ নানান ধরনের ভিডিও।
মালয়েশিয়া থেকে শুরু, ফলে সে দেশে তো বটেই, ভিডিও ট্রেন্ডটি ভাইরাল বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তানসহ ইন্দোনেশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতেও।
ফেসবুকে কোনো কোনো ভিডিও এরই মধ্যে পেয়েছে লাখ লাখ ভিউ। এই ট্রেন্ডের হাস্যকর কিছু সংস্করণও দেখা গেছে এরই মধ্যে। ‘তাথৈ’ নামের একটি পেজের ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, হলুদ আবহ সৃষ্টি হওয়ার পর এক শিশু গুঁড়া হলুদ মেশানো পানি খেয়ে ফেলে। এই ভিডিওর ভিউ হয়েছে ২ কোটি ৪০ লাখ!