সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজেকে অপচয় করছেন না তো?
এক দশক আগেও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম কী, সে প্রশ্নের উত্তর জানত না পৃথিবীর ৬০ শতাংশ মানুষ। কিন্তু এক দশকের মধ্যে বদলে গেছে সব কিছু। ইন্টারনেটের সহজলভ্যতায় ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, টুইটার কিংবা টিকটক এখন মানুষের হাতে হাতে। এসব ছাড়া সমাজব্যবস্থা কল্পনাই করা যায় না! প্রাত্যহিক জীবনে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের গুরুত্ব অস্বীকার করার উপায় নেই। কেবল যোগাযোগ নয়, এর প্রভাব আরও নানা ক্ষেত্রে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এখন শুধু নামেই যোগাযোগ, শিক্ষা থেকে শুরু করে উপার্জন—সবই সম্ভব একই প্ল্যাটফর্মে। কিন্তু সেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ঠিকমতো ব্যবহার করতে পারছেন কি সবাই? দেখে নেওয়া যাক কিছু পরামর্শ।অ
অহেতুক স্ক্রলিং বন্ধ করুন
ফেসবুক, টুইটার কিংবা ইন্সটাগ্রাম—সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম মানেই স্ক্রলিং। একের পর এক পোস্ট, বন্ধুবান্ধবের নানা আপডেট, সব মিলিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম যেন এক অন্তহীন কূপ। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের একজন সাধারণ ব্যবহারকারী প্রতি বছর প্রায় ৮৩ কিলোমিটার স্ক্রল করেন। যা চোখ ও আঙ্গুলের ওপরেই চাপ ফেলে ক্ষান্ত হয় না, প্রভাব ফেলে মনোযোগ ধরে রাখায়।
নিউজ ফিড সাফ করুন
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেশির ভাগ সময়ই থাকে বন্ধুবান্ধব কিংবা প্রিয় ব্যক্তিত্বদের আনাগোনা। তাঁরা বাদেও কিছু মানুষ কিংবা পেজ থাকে, যাদের অহেতুক ফলো করি আমরা। কাজেই আপনার প্রয়োজনের সঙ্গে মেলে না, এমন অ্যাকাউন্ট, পেজ বা গ্রুপ আনফলো করুন। এসব আপনাকে আপনার লক্ষ্যে পৌঁছাতে সাহায্য তো করবেই না, বরং আরও ‘লাইনচ্যুত’ করতে পারে। তেমন অ্যাকাউন্ট বা পেজই ফলো করুন, যা আপনাকে আপনার লক্ষ্যে পৌঁছাতে সাহায্য করবে। এতে যেমন নিয়মিত অনুপ্রাণিত হবেন, তেমনই লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য যা যা করা প্রয়োজন, সেগুলো নিয়েও ভাবনা খেলবে মাথায়।
প্রয়োজনীয় কন্টেন্ট ফলো করুন
ফেসবুক, ইনস্টাগ্রামের হাজারো পোস্টের ভিড়ে লুকিয়ে থাকে নানারকম শিক্ষামূলক কনটেন্ট। ছাইয়ের মধ্য থেকে অমূল্য রতন বের করার দায়িত্ব আপনার নিজের। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শিক্ষামূলক দীর্ঘমেয়াদি কনটেন্ট, যেমন ব্লগ, পডকাস্ট, ভিডিও আপনাকে আপনার লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে আরও এক ধাপ।
একই ধ্যান-ধারণার মানুষের সঙ্গে থাকুন
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন মতের মানুষের আনাগোনা। প্রত্যেকের মতের প্রতি সহনশীল থাকাই নৈতিকতা। কিন্তু দিনশেষে চোখের সামনে হাজারো মতামত হতে পারে সময় নষ্টের কারণ। নিজের লক্ষ্য ও প্রস্তুতির সঙ্গে মিল আছে এমন মানুষকেই সামনে রাখুন। এতে প্রত্যেকের সঙ্গে যেমন যোগাযোগ বৃদ্ধি হবে, তেমনই নিজের লক্ষ্যের প্রতিও অটুট থাকা যাবে।
সময় নির্ধারণ করুন
প্রতিদিন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের জন্য নির্দিষ্ট একটা সময় বরাদ্দ রাখুন। এর থেকে বেশি সময় যাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের পেছনে খরচ না হয়। বোপরের সব পরামর্শ মেনেও যদি দিনে তিন-চার ঘণ্টা সময় এখানেই অপচয় করেন, তবে তা কোনো উপকারেই আসবে না।
সূত্র: উইনার স্পিরিট