বন্ধুরা বলেছিল, ‘তুই-ই প্রথম হবি’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় প্রথম হয়েছেন নটর ডেম কলেজের প্রতীক রসুল। তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন তানভীর রহমান।

প্রথম আলো:

১ লাখ ৯ হাজার ৩৬৩ পরীক্ষার্থীর মধ্যে প্রথম। কেমন লাগছে?

প্রতীক রসুল: ধন্যবাদ, নিশ্চয়ই ভালো লাগছে।

প্রথম আলো:

এ ধরনের সাফল্যের জন্য সবচেয়ে বেশি কী প্রয়োজন?

প্রতীক রসুল: অবশ্যই কঠোর পরিশ্রম। সঙ্গে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনাও জরুরি। আরেকটা জিনিস খুবই দরকার, সেটা হলো ভাগ্য।

প্রথম আলো:

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য বিশেষ কোনো প্রস্তুতি নিয়েছিলেন?

প্রতীক রসুল: বিগত বছরের প্রশ্নগুলো সমাধান করে প্রশ্নের ধরন সম্পর্কে যথেষ্ট ধারণা রেখেছিলাম।

আরও পড়ুন
প্রথম আলো:

লিখিত নাকি বহুনির্বাচনী (এমসিকিউ)—কোন অংশটা কঠিন মনে হয়েছে?

প্রতীক রসুল: দুটোই স্ট্যান্ডার্ড ছিল। একটি থেকে আরেকটি কঠিন বা সহজ বলা যাবে না। এমসিকিউতে ৬০ নম্বরের মধ্যে ৫৫ দশমিক ৫০ এবং লিখিত পরীক্ষায় ৪০–এ ৩৫ দশমিক ৭৫ নম্বর পেয়েছি। অর্থাৎ ১০০ নম্বরের মধ্যে আমার নম্বর ৯১ দশমিক ২৫।

প্রথম আলো:

প্রশ্ন হাতে নিয়ে কী মনে হয়েছিল?

প্রতীক রসুল: মজার ব্যাপার হলো, জীববিজ্ঞানের জন্য আমার বিশেষ কোনো প্রস্তুতি ছিল না। অথচ প্রশ্ন হাতে নিয়ে দেখলাম, জীববিজ্ঞানের প্রায় সবই পারব।

আরও পড়ুন
প্রথম আলো:

পরীক্ষা দেওয়ার পর কি মনে হয়েছিল, এত ভালো নম্বর পাবেন?

প্রতীক রসুল: প্রথম হব ভাবিনি। কিন্তু শীর্ষে (টপ) থাকার সম্ভাবনা বেশ ভালোই ছিল।

প্রথম আলো:

পড়াশোনার পাশাপাশি আপনার আগ্রহ কিসে?

প্রতীক রসুল: গণিত অলিম্পিয়াড ও জুনিয়র সায়েন্স অলিম্পিয়াডে অংশগ্রহণের অভিজ্ঞতা আছে। একাডেমিকের পাশাপাশি অন্যান্য বই পড়ার অভ্যাস আছে। আমি একদম প্রথম সংখ্যা থেকে কিশোর আলো ও বিজ্ঞানচিন্তার নিয়মিত পাঠক ছিলাম। কিশোর আলোর ছোটগল্প, ‘আমরা সবাই রাজা’, উপন্যাস পড়ার জন্য অপেক্ষা করে থাকতাম। বিজ্ঞানচিন্তাতে যা আলোচনা করা হতো—অনেক কিছু বুঝতাম, আবার অনেক কিছু বুঝতাম না। সেই না-বোঝা বিষয় আমার জানার আগ্রহ বাড়িয়ে দিত। আমি মনে করি, আমার চিন্তাধারা ও শেখার ইচ্ছার পেছনে এই ম্যাগাজিন দুটির আলাদা গুরুত্ব আছে।

প্রথম আলো:

ভর্তি পরীক্ষা প্রস্তুতির কোন অংশটা সবচেয়ে কঠিন মনে হয়েছে?

প্রতীক রসুল: পড়ালেখা করতে করতে একসময় কিছুই ভালো লাগত না। ওই সময় লেগে থাকাটাই স্ট্রাগলের একটা বড় অংশ ছিল।

প্রথম আলো:

আপনার সাফল্যের পেছনে নিশ্চয়ই অনেকের অবদান আছে...

প্রতীক রসুল: মা-বাবার অবদান নিঃসন্দেহে সবচেয়ে বেশি। এ ছাড়া আমার কিছু বন্ধুবান্ধব সব সময় আমার ওপর আস্থা রেখেছিল। আমি যদি কখনো বলতাম, ‘চান্স পেলেই খুশি।’ ওরা বলত, ‘তুই–ই প্রথম হবি।’

প্রথম আলো:

আর কোথাও ভর্তি পরীক্ষা দিয়েছিলেন?

প্রতীক রসুল: গুচ্ছ প্রকৌশলে দ্বিতীয় হয়েছি। মিলিটারি ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজিতে পঞ্চম। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার অবস্থান ৬৬তম। সেখানেই ভর্তি হয়ে গেছি। কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগে।

প্রথম আলো:

ভবিষ্যৎ লক্ষ্য সম্পর্কে জানতে চাই।

প্রতীক রসুল: ভবিষ্যতে কী হতে চাই—এটা নিয়ে এখনই ভাবতে চাচ্ছি না। আপাতত লেখাপড়া চালিয়ে যেতে চাই।