পোশাক নিয়ে তাঁদের পড়ালেখা, নিজেরাই করছেন নকশা

স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে এই পোশাকের নকশা করেছেন শিক্ষার্থীরা
ছবি: সংগৃহীত

কুয়াশার মতো ধুলা ও ইট–কংক্রিটের জঙ্গল পেরিয়ে একটু বুকভরে শ্বাস নেওয়ার সুযোগ হলো নিটার ক্যাম্পাসে পৌঁছে। সাভারের জাতীয় বস্ত্র প্রকৌশল ও গবেষণা ইনস্টিটিউটটিই পরিচিত নিটার (ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড রিসার্চ) নামে।

নিটারে ‘ফ্যাশন ডিজাইন অ্যান্ড অ্যাপারেল ইঞ্জিনিয়ারিং’ বিভাগটি যাত্রা শুরু করে ২০১৮ সালে। এখানে আছে প্যাটার্ন ল্যাব, অ্যাপারেল ম্যানুফ্যাকচারিং ল্যাব, কম্পিউটার ল্যাবে হাতে-কলমে কাজ শেখার সুযোগ। ফ্যাশন–সম্পর্কিত আধুনিক সফটওয়্যারের দীক্ষাও নিচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। নকশার পাশাপাশি প্রকৌশলের বিষয়টিও এই প্রতিষ্ঠানের পড়ালেখায় গুরুত্ব পায়। তাই ফ্যাশন ও পোশাক নির্মাণের কারিগরি দিক—দুটিই মাথায় রাখেন শিক্ষার্থীরা।

আরও পড়ুন

প্রতিবছরই বিশেষ দিবস, যেমন ২১ ফেব্রুয়ারি, ২৬ মার্চ, পয়লা বৈশাখ, ১৬ ডিসেম্বর উপলক্ষে থিমভিত্তিক পোশাকের নকশা করেন শিক্ষার্থীরা। সেই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি তাঁরা পোশাক বানিয়েছেন স্বাধীনতা দিবস মাথায় রেখে। শাড়ি-পাঞ্জাবির ওপর ফুটে উঠেছে মানচিত্র, পতাকা, স্বাধীনতার সংগ্রাম। নকশায় ফিউশনের মাধ্যমে পার্বত্য অঞ্চলের পাহাড়ি নারীদের জন্য থামিও তৈরি করেছেন শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সংগঠনের সহযোগিতায় এসব পোশাক নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রদর্শনী ও ফ্যাশন শোর আয়োজনও করা হয়েছে। নিজ উদ্যোগে নিজেদের পোশাক পরে ফটোসেশন করছেন শিক্ষার্থীরা।

নিজ উদ্যোগে নিজেদের পোশাক পরে ফটোসেশন করছেন শিক্ষার্থীরা
ছবি: সংগৃহীত

নিজের করা ডিজাইন নিয়ে বেশ আশাবাদী বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ফারিয়া ইসলাম। তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন থিম থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে আমরা পোশাকে ডিজাইন তৈরি করি। ডিজাইন থেকে শুরু করে ফটোশুট, ভিডিও ও পোস্টার তৈরির সঙ্গে আমরা যুক্ত থাকি। ফলে প্রোডাক্ট ডিজাইন থেকে শুরু করে মার্কেটিং পর্যন্ত পুরো বিষয়টি সম্পর্কেই ধারণা পাই।’

ফ্যাশন ডিজাইনের সঙ্গে অ্যাপারেল ইঞ্জিনিয়ারিং যোগ হওয়ায় বেশ সুবিধা হচ্ছে বলে জানালেন চতুর্থ বর্ষের দীপংকর ভদ্র। বলছিলেন, ‘ফ্যাশনের পাশাপাশি প্রকৌশলের বিষয়গুলোও শিখতে পারছি, এটা আমার কাছে সবচেয়ে ভালো লেগেছে। আশা করি, এর ফলে আমরা ফ্যাশন ডিজাইনের পাশাপাশি টেক্সটাইল খাতেও ক্যারিয়ার গড়তে পারব।’

বিভাগের প্রভাষক ইয়াসমিন আক্তার বলেন, ‘বর্তমানে বাংলাদেশের টেক্সটাইল খাতে দক্ষ প্রকৌশলীর বেশ চাহিদা আছে। চাহিদা পূরণে কর্মমুখী শিক্ষার বিকল্প নেই। আশা করছি, এ ক্ষেত্রে আমাদের শিক্ষার্থীরা বড় ভূমিকা রাখতে পারবে।’

নিটারের পরিচালক মোহাম্মদ জোনায়েবুর রশিদ জানালেন, তিনি মনে করেন, বিভিন্ন দিবস সামনে রেখে জাতীয় পর্যায়ে পোশাকের নকশা প্রতিযোগিতার আয়োজন করা উচিত। এতে শিক্ষার্থীরা উদ্বুদ্ধ হবে। মেধাবী শিক্ষার্থীদের বাছাই করে তাঁদের মেধা যথাযথ কাজে লাগানোর একটা সুযোগও তৈরি হবে।