কীভাবে বুঝবেন আপনি বুঝদার

কথায় বলে, ‘ম্যাচিউরিটি ইজ দ্য আর্ট অব লিভিং ইন পিস’। আশপাশের অনেক কিছুই বদলে যাবে, কেননা বদলই ধ্রুবক। তবে তা আপনার মানসিক শান্তিকে স্পর্শ করতে পারবে না। পরিবর্তন মেনে নেওয়া, মানিয়ে নেওয়া, ভারসাম্য করে জীবনে এগিয়ে যাওয়াই জীবন।

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হলো নিজের মানসিক শান্তি যতটা সম্ভব নিজের কাছে রাখাছবি: প্রথম আলো

ম্যাচিউরড বা পরিণত মানুষদের কিছু বৈশিষ্ট্য জানিয়েছে অনলাইনভিত্তিক গণমাধ্যম ইনভেস্টিং টিপস। আপনার সঙ্গে কতগুলো বৈশিষ্ট্য মিলে যাবে। যেগুলো মিলবে না, সেগুলো অনুশীলন করে অর্জনের চেষ্টা করুন।


১. কম কথা আপনাকে আর টানে না। মানুষের সঙ্গে লম্বা গভীর কথোপকথনের ভেতর দিয়ে আপনি মানুষের কাছে পৌঁছান, মানুষের জীবন থেকে শেখেন। আপনি বুঝে যান যে মানুষের জীবনের চেয়ে ভালো শিক্ষামূলক ‘বই’ আর হয় না। আর লম্বা কথোপকথনের ভেতর দিয়ে আপনি সেই বইয়ের ভেতর ডুব দেন, পাতা ওলটান।


২. ছুটির রাতে রাতভর পার্টি করার চেয়ে ঘুমানো বেশি জরুরি। কেননা, ঘুম কেবল শারীরিক সুস্থতার জন্যই না, বরং মানসিকভাবে শান্তিপূর্ণ থাকার জন্যও জরুরি। এ জন্যই অনেকে দুঃখ পেলে বা হতাশাগ্রস্ত হলে ঘুমিয়ে নেন। এটা একধরনের স্বতঃস্ফূর্ত ‘ডিফেন্স মেকানিজম’। ঘুমের ভেতর কিছু বিশেষ হরমোন নিঃসরণ হয়। এর প্রভাবে আপনি কেবল শারীরিকভাবেই নয়, বরং মানসিকভাবেও সেরে ওঠেন। তাই ঘুম বিসর্জন দিয়ে পার্টি বা আড্ডা নয়।


৩. আপনি মানুষকে আগের চেয়ে এখন অনেক বেশি ক্ষমা করে দিতে পারেন। আপনি মানুষকে ক্ষমা করতে দিতে পারছেন, এর মানে হলো আপনি মানুষকে এখন আর আগের মতো ‘জাজ’ করেন না, ‘পারসোনালি’ নেন না।


৪. আপনি আগের চেয়ে আরও বেশি খোলামেলা কথা বলেন। আগে যে বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলতে পারতেন না, সেগুলো নিয়ে এখন যদি পারেন, তার মানে হলো বিষয়গুলো আপনি সহজভাবে গ্রহণ করেছেন। আর এখন আপনি আগের চেয়ে আরও বেশি আত্মবিশ্বাসী।

এখন আপনি আগের চেয়ে আরও বেশি আত্মবিশ্বাসী
ছবি: পেক্সেলস ডটকম

৫. ভিন্নতাকে সহজেই গ্রহণ করতে পারেন। ভিন্নতাই বৈচিত্র্য আর বৈচিত্র্যই শক্তি, সৌন্দর্য। ভিন্নতাকে গ্রহণ করার মাধ্যমে আপনি অন্যের রীতিনীতি, সংস্কৃতি, আচারকে সম্মান করেন। আর এটাই সভ্যতার বহিঃপ্রকাশ।


৬. ভালোবাসায় যে কোনো জোরাজুরি চলে না, তা আপনি জানেন। আপনি হয়তো একজনকে হুট করে ভালোবেসে ফেলেছেন। বিপরীতে অপর পক্ষও যে আপনাকে ভালোবাসবেই, এমন কোনো কথা নেই। আর স্বাভাবিক এ বিষয়কে স্বাভাবিকভাবে মেনে নেওয়াই বুঝদারের পরিচয়।


৭. উত্তেজনার মুহূর্তে শান্ত থাকতে জানেন। আপনি জানেন, এ সময় কথা বলার কোনো অর্থ হয় না। কেননা, কেউ আপনার কথা মন দিয়ে শুনে, বুঝে গ্রহণ করার মতো অবস্থায় নেই। তা ছাড়া, আপনি চুপ করে থাকেন, কেননা আপনি জানেন, কথা বলে কোনো লাভ নেই। যা হওয়ার তা-ই হবে। মাঝখান থেকে কথা বলে আপনিই খারাপ হবেন। তাই চুপ থাকেন। কখন বলতে হয়, আর কখন চুপ থাকতে হয়, এটা জানা নাকি জীবনের গুরুত্বপূর্ণ শিল্প!


৮. শেষ আর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হলো নিজের মানসিক শান্তি যতটা সম্ভব নিজের কাছে রাখা। বলিউড তারকা ক্যাটরিনা কাইফকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, সর্বশেষ ব্রেকআপ (আরেক বলিউড তারকা রণবীর কাপুরের সঙ্গে) থেকে তিনি কী শিখেছেন? তখন ক্যাটরিনা বলেছিলেন, ‘নিজের মানসিক শান্তির জন্য অন্য কারও ওপর নির্ভর না করা। অন্য কাউকে দায়ী না করা। নিজের মানসিক শান্তি নিজে নিয়ন্ত্রণ করতে পারাটা জীবনের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।’ আর এই ‘আন্ডারস্ট্যান্ডিং’ই নাকি সেই সম্পর্ক থেকে পাওয়া ক্যাটরিনার সবচেয়ে বড় উপহার।