চীনে পড়ালেখার অভিজ্ঞতা যেমন

উচ্চমাধ্যমিকের পরপরই বৃত্তি নিয়ে অনেকে উচ্চশিক্ষার জন্য দেশের বাইরে যান। পড়ুন এমন এক শিক্ষার্থীর অভিজ্ঞতা। নাম কামরুজ্জামান। চীনে অবস্থিত চায়না থ্রি গর্জেস বিশ্ববিদ্যালয়ে পুরকৌশল বিভাগে পড়েন এই তরুণ।

কামরুজ্জামান
ছবি: সংগৃহীত

চীনের সরকারি বৃত্তি নিয়ে আমি পড়ছি চায়না থ্রি গর্জেস ইউনিভার্সিটিতে। বিষয় পুরকৌশল। স্নাতক পর্যায়ে এই বৃত্তি পেতে হলে ভালো একাডেমিক ফলের পাশাপাশি চীনা ভাষাগত দক্ষতার পরীক্ষা ‘এইচএসকে ৩-৫’–এ উত্তীর্ণ হতে হয়। বৃত্তি পাওয়ার ক্ষেত্রে সহশিক্ষা কার্যক্রমের অভিজ্ঞতা আর দক্ষতা খুব কাজে দেয়, অনেকটা বোনাস পয়েন্টের মতো!

আমি যখন এই বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করি, সিভিতেই বলা ছিল আমি গান গাই, ভিডিও সম্পাদনা, চিত্রনাট্য লেখাসহ নানা কাজ করি। এসব দেখে চীনা সোশ্যাল মিডিয়া উইচ্যাটের মাধ্যমে ব্যক্তিগতভাবে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রধান ভর্তি কর্মকর্তা। আলাপ করে তিনি বেশ খুশি হয়েছিলেন। বলেছিলেন, ‘তোমার এসব দক্ষতা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক বিভাগে বেশ কাজে দেবে।’

আরও পড়ুন

প্রতিটি দেশের সরকারি বৃত্তির জন্য আবেদন করতে হলে কিছু প্রস্তুতি নিতে হয়। কী কী কাগজপত্র দরকার, সেসবের একটা তালিকা আমি করে নিয়েছিলাম। যেমন আইইএলটিএস সনদ, চীনা ভাষা দক্ষতার সনদ, সহশিক্ষামূলক কাজে অভিজ্ঞতার সনদ ইত্যাদি। আমি একাধারে আইইএলটিএস ও এইচএসকে কোর্স করেছিলাম। চীনা ভাষা শেখার কোর্স করেছি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কনফুসিয়াস ইনস্টিটিউট থেকে। সেখান থেকেই এইচএসকে লেভেল ৪ পাস করেছি। এই প্রস্তুতি নিতেই আমার প্রায় দেড় বছর লেগেছে।

জানিয়ে রাখি, চীনা বৃত্তি মূলত দুই প্রকার। বাংলাদেশে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে আবেদন করা যায়। অথবা সরাসরি চীনা সরকারের দেওয়া বৃত্তির জন্যও আবেদন করা যায়। দুটির ক্ষেত্রেই প্রক্রিয়া মোটামুটি এক। তবে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে আবেদন করলে সব সনদের হার্ড কপি জমা দিতে হয়। প্রাথমিকভাবে উত্তীর্ণদের ভাইভার জন্য ডাকা হয়।

চীনে পড়ালেখার অভিজ্ঞতা অসাধারণ। বিদেশি বন্ধুদের সঙ্গে মিশে তাদের সংস্কৃতি বোঝার সুযোগ হচ্ছে। বিভিন্ন প্রদেশ ঘুরছি। কিছু কিছু দেশের শিক্ষার্থীদের দেখি, তাঁরা খুবই পরিশ্রমী। বাংলাদেশিদেরও এখানে মেধাবী হিসেবে আলাদা সুনাম আছে।

সরকারি বৃত্তির একটা বড় সুবিধা হলো—অর্থ সংস্থান নিয়ে ভাবতে হয় না। টিউশন ফি লাগে না। বাসাভাড়াসহ আনুষঙ্গিক খরচও চীনা সরকার বহন করে। যাঁরা এই বছর বৃত্তি নিয়ে চীনে আসতে চান, ধৈর্য ধরে প্রস্তুতি নিতে থাকুন। আবেদন প্রক্রিয়াটা একটু জটিল, তবে লেগে থাকলে নিশ্চয়ই হবে।

আরও পড়ুন