কার্বলিক অ্যাসিড কি আসলেই সাপ তাড়াতে পারে
‘সকালের ট্রেন এল। শঙ্কর বাকি রাতটা প্ল্যাটফর্মেই কাটিয়েছে। ট্রেনের গার্ডকে বলল সব ব্যাপার। গার্ড বলল, চলো দেখি স্টেশনঘরের মধ্যে। ঘরের মধ্যে কোথাও সাপের চিহ্নও পাওয়া গেল না।
‘গার্ড লোকটা ভালো, বলল—বলি তবে শোনো। খুব বেঁচে গিয়েছ কাল রাত্রে। এতদিন কথাটা তোমায় বলিনি, পাছে ভয় পাও। তোমার আগে যিনি স্টেশনমাস্টার এখানে ছিলেন—তিনিও সাপের উপদ্রবেই এখান থেকে পালান। তাঁর আগে দুজন স্টেশনমাস্টার এই স্টেশনের কোয়ার্টারে সাপের কামড়ে মরেছে। আফ্রিকার ব্ল্যাক মাম্বা যেখানে থাকে, তার ত্রিসীমানায় লোক আসে না।
‘শঙ্কর বলল, দরখাস্তের উত্তর আসতেও তো দেরি হবে, তুমি একটা উপকার করো। আমি এখানে একেবারে নিরস্ত্র, আমাকে একটা বন্দুক কি রিভলবার যাবার পথে দিয়ে যেয়ো। আর কিছু কার্বলিক অ্যাসিড। ফিরবার পথেই কার্বলিক অ্যাসিডটা আমায় দিয়ে যেও।’
ওপরের অনুচ্ছেদটি কি পরিচিত লাগছে? হ্যাঁ, বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘চাঁদের পাহাড়’ উপন্যাসের অংশ। কার্বলিক অ্যাসিডের ওই অংশটুকু বাংলাভাষী মানুষের মনে এতটাই গেঁথে গেছে যে আজও অনেকে বিশ্বাস করেন, এই অ্যাসিড সাপ তাড়ায়।
তাই অনেকেই ঘরের কোণে কার্বলিক অ্যাসিডের বোতল খুলে রাখেন। তাঁদের বিশ্বাস, এতে ঘরে সাপ আসতে পারবে না। অ্যাসিডের গন্ধে সাপ দূরে চলে যাবে। কিন্তু এই বিশ্বাস কতটা বিজ্ঞানসম্মত? আসলেই কি কার্বলিক অ্যাসিড সাপ তাড়াতে পারে? নাকি এটা শুধুই একটা প্রচলিত ধারণা, যা প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে চলে আসছে? চলুন, এই রহস্যের সমাধান করা যাক।
কার্বলিক অ্যাসিড আদতে কী
একেবারে গোড়া থেকে শুরু করা যাক। আমরা যাকে কার্বলিক অ্যাসিড নামে চিনি, বিজ্ঞানের খাতায় এর আসল নাম ফেনল। এটি আসলে আলকাতরা বা বেনজিন থেকে তৈরি একধরনের জৈব যৌগ। এর একটা তীব্র, ঝাঁজালো ও অস্বস্তিকর গন্ধ আছে। হাসপাতালের চৌহদ্দিতে গেলে যেমন গন্ধ পাওয়া যায়, অনেকটা তেমন। এ গন্ধই সাপ তাড়ানোর বড় বিজ্ঞাপন হিসেবে কাজ করেছে!
তবে আসল সত্য কথা হলো, এই অ্যাসিড সাপ তাড়াতে পারে না। বিজ্ঞান বলছে, কার্বলিক অ্যাসিডের গন্ধ সাপ তাড়ায়—এ ধারণার পক্ষে কোনো শক্ত প্রমাণ নেই। এটা একটা বহু পুরোনো, প্রচলিত ভ্রান্ত ধারণা বা মিথ। প্রশ্ন করতে পারেন, কীভাবে এই মিথ তৈরি হলো?
কার্বলিক অ্যাসিড কীভাবে পরিচিতি পেল
শুরুতেই বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপন্যাসের অংশবিশেষ তো পড়লেন। তিনি যেহেতু সাপ তাড়ানোর উপায় হিসেবে কার্বলিক অ্যাসিডের কথা লিখেছেন, হয়তো তিনিও এটা বিশ্বাস করতেন।
শুধু বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথা বলি কেন, হুমায়ূন আহমেদও তাঁর অনেক লেখায় ব্যাপারটি তুলে ধরেছেন। তাঁর ‘জিন–কফিল’ গল্পে সাপ তাড়াতে কার্বলিক অ্যাসিডের কথা উল্লেখ আছে এভাবে—
‘সফিক আঁতকে উঠে বলল, “মাই গড! যখন-তখন সাপ বের হলে এইখানে থাকব কীভাবে?”
“ভয়ের কিছু নাই। কার্বলিক এসিড ছড়ায়ে দিব।”
“কার্বলিক এসিড আছে?”
“জি। নেত্রকোণার ফার্মেসি থেকে তিন বোতল নিয়ে আসছি। আমার স্ত্রীরও খুব সাপের ভয়। এই অঞ্চলে সাপখোপ একটু বেশি।”’
‘আমিই মিসির আলি’ উপন্যাসেও আছে একই ব্যাপার। এমনকি মুহম্মদ জাফর ইকবালও তাঁর ‘দীপু নাম্বার টু’ বইয়ে সাপ তাড়াতে কার্বলিক অ্যাসিড ব্যবহারের কথা বলেছেন।
তাঁরা সবাই কি এই মিথ বিশ্বাস করতেন বলে লিখেছেন? নিশ্চিত করে তা বলার উপায় নেই! কিন্তু যদি তাঁরা এটাই বিশ্বাস করেন, তাহলে প্রশ্ন ওঠে, তাঁরা এমন বিশ্বাস পেলেন কোথা থেকে? আদতে এর পেছনে বেশ কিছু জোরালো মনস্তাত্ত্বিক ও ঐতিহাসিক কারণ আছে।
প্রথমত
কার্বলিক অ্যাসিডের তীব্র গন্ধ। আমরা ভাবি, যে জিনিসের গন্ধ এত তীব্র, তা নিশ্চয়ই ক্ষতিকর পোকামাকড় বা প্রাণীকে দূরে রাখবে। অবশ্য এমন ধারণা হওয়াই স্বাভাবিক। যেহেতু কার্বলিক অ্যাসিড জীবাণু মারে, তাই আমরা ধরে নিই, এটা সাপও মারবে!
কিন্তু আসল ঘটনাটা ঘটে অন্য জায়গায়। ধরুন, আপনি বাড়ির চারপাশে কার্বলিক অ্যাসিড ঢেলে রেখেছেন। একটা সাপ যদি সেই তরলের ওপর দিয়ে যায়, তবে এর বিষক্রিয়ায় সাপের ত্বক পুড়ে যাবে এবং সে ছটফট করতে করতে মারা যাবে।
এবার আপনি সকালে উঠে কী দেখবেন? একটা মরা সাপ, আর পাশেই কার্বলিক অ্যাসিডের চিহ্ন। আপনি কী ভাববেন? আরে বাহ্! গন্ধে সাপ মরে গেছে! আদতে সাপটা মরেছে গন্ধের জন্য নয়, কার্বলিক অ্যাসিডের স্পর্শের জন্য।
দ্বিতীয়ত
ব্রিটিশ আমলে ভারতবর্ষে হাসপাতাল, পয়ঃপ্রণালি ও সরকারি দপ্তরে জীবাণুনাশক হিসেবে কার্বলিক অ্যাসিডের ব্যাপক ব্যবহার শুরু হয়। এই তীব্র গন্ধ পরিচ্ছন্নতার প্রতীক হয়ে ওঠে। সাধারণ মানুষ ভাবতে শুরু করে, সাহেবদের এই শক্তিশালী ওষুধ নিশ্চয়ই সব ধরনের উপদ্রব কমাতে পারবে। যেহেতু এটা জীবাণু মারতে পারে, নিশ্চয়ই সাপও মারতে পারবে।
তৃতীয়ত
সাপুড়েদের চালাকি। অনেক সাপুড়ে তাঁদের কারসাজির অংশ হিসেবে এই অ্যাসিড ব্যবহার করতেন। হয়তো তাঁরা একটা ম্যাজিক দেখানোর জন্য বা এর ঝাঁজে সাপকে কিছুটা উত্তেজিত করে খেলা দেখানোর জন্য এটা ব্যবহার করতেন।
সেই ম্যাজিক দেখে সাধারণ মানুষের বিশ্বাস আরও পোক্ত হয়। সঙ্গে জনপ্রিয় লেখকদের গল্পে এই অ্যাসিডের কথা উল্লেখ থাকায় সাধারণ মানুষের বিশ্বাস আরও পোক্ত হয়।
কার্বলিক অ্যাসিড কেন সাপ তাড়াতে পারে না
এতক্ষণে নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন, সাপ তাড়াতে কার্বলিক অ্যাসিডের কোনো ভূমিকা নেই। কিন্তু যেটা এখনো হয়তো বুঝতে পারেননি, সেটা হলো, কার্বলিক অ্যাসিড কেন সাপ তাড়াতে পারে না?
এর মূল কারণ সাপের ঘ্রাণশক্তির ধরন। সাপ ঠিক আমাদের মতো নাক দিয়ে শোঁকে না। ওরা চেরা জিব বারবার বের করে বাতাসের কণা সংগ্রহ করে। এরপর সেই জিব মুখের তালুতে থাকা ‘জ্যাকবসনস অরগ্যান’ বা ‘ভোমারোন্যাজাল অরগ্যান’ নামের এক বিশেষ অঙ্গে স্পর্শ করায়। এই অঙ্গই ওকে বলে দেয় আশপাশে শিকার, শত্রু, নাকি সঙ্গী আছে।
কার্বলিক অ্যাসিডের মতো তীব্র গন্ধ হয়তো সাপকে কিছুটা বিরক্ত করতে পারে, কিন্তু এটা এমন কোনো জাদুর বর্ম নয়, যা সাপ ভেদ করে আসতেই পারবে না। সাপের যদি খিদে পায় বা ভয় পায়, তাহলে ওরা ওই গন্ধকে উপেক্ষা করেই আপনার ঘরে ঢুকতে পারে।
সাপ থেকে দূরে থাকার উপায়
এতটা পড়ার পরে নিশ্চয়ই আপনার মন খারাপ হয়েছে! সাপ তাড়ানোর যা-ও একটা উপায় জানতেন, এই লেখা তা-ও বাতিলের খাতায় ফেলে দিচ্ছে। তবে আপনার মন ভালো করার একটা কথা বলি। সাপ তাড়ানোর কিছু উপায় আছে। কিন্তু কোনো তরল বা পাউডার দিয়ে তা হবে না।
বাজারে ন্যাপথলিন বা সালফারযুক্ত যেসব স্নেক রিপেলেন্ট পাওয়া যায়, সেসবও খুব একটা কার্যকর নয়। যদিও লবঙ্গ তেল, দারুচিনি তেল বা ইউজেনলের মতো কিছু তীব্র তেল সাপকে সাময়িকভাবে বিরক্ত করতে পারে, কিন্তু এসবও কোনো স্থায়ী সমাধান নয়। এ ছাড়া ওগুলো মানুষ বা পোষা প্রাণীর জন্যও ক্ষতিকর হতে পারে।
সাপ তাড়ানোর সবচেয়ে কার্যকর ও বৈজ্ঞানিক উপায় হলো পরিবেশগত নিয়ন্ত্রণ। মানে সাপকে দূরে রাখার ব্যবস্থা করুন। সাপ আপনার আঙিনার কাছে আসবে, তারপর ওকে ধরাশায়ী করবেন—এ ধারণা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। সাপ তাড়াতে কয়েকটি উপায় অবলম্বন করতে পারেন।
এক. সাপের প্রধান খাবার ইঁদুর বা ব্যাঙ। আপনার বাড়ি যদি ইঁদুরমুক্ত হয়, তবে সাপ খাবারের লোভে আপনার বাড়িতে আসবে না। প্রথম কাজ হলো ইঁদুর নিয়ন্ত্রণ করা।
দুই. সাপ থাকার জন্য অন্ধকার, স্যাঁতসেঁতে আর লুকানোর জায়গা পছন্দ করে। বাড়ির আশপাশে থাকা আবর্জনার স্তূপ, ইটের পাঁজা, কাঠের গাদা, ঘন জঙ্গল পরিষ্কার রাখুন। সাপ লুকানোর জায়গা না পেলে সেখানে থাকবে না।
তিন. বাড়ির দেয়াল, মেঝে বা দরজার আশপাশে কোনো ফাটল বা গর্ত থাকলে তা সিমেন্ট দিয়ে ভালোভাবে বন্ধ করে দিন। এসব ঠিকভাবে মেনে চললে আপনার সীমানায় সাপ আসার কথা নয়।
কার্বলিক অ্যাসিড যখন নায়ক
অনেক কথাই তো হলো, কিন্তু কার্বলিক অ্যাসিডের ব্যবহার সম্পর্কেই জানা হলো না। কার্বলিক অ্যাসিডের কিন্তু একটা গৌরবময় ইতিহাস আছে। সাপ তাড়ানোর জন্য নয়, বরং মানুষের প্রাণ বাঁচানোর জন্য!
সে গল্পের শুরু ১৮৬০-এর দশকে। তখন হাসপাতাল ছিল এক বিভীষিকার নাম। বড় বড় সার্জন অপারেশন তো করতেন, কিন্তু রোগীরা অপারেশনের পর ইনফেকশনে ভুগে মারা যেতেন। বলা হতো, ‘অপারেশন সফল, কিন্তু রোগী মৃত।’ তখন অপারেশনের পরে মৃত্যুর হার ছিল প্রায় ৪৫ শতাংশ!
ঠিক তখন আলো হাতে সামনে আসেন এক ব্রিটিশ সার্জন, নাম জোসেফ লিস্টার। লুই পাস্তুরের জীবাণুতত্ত্বে তিনি দারুণভাবে প্রভাবিত হয়েছিলেন। তিনি বুঝতে পেরেছিলেন, এই ইনফেকশনের কারণ জীবাণু।
লিস্টার এক যুগান্তকারী সমাধান বের করলেন। তিনি জানতেন, কার্বলিক অ্যাসিড দিয়ে পয়ঃপ্রণালি বা মাঠ জীবাণুমুক্ত করা যায়। তিনি এই অ্যাসিডকে সার্জারিতে ব্যবহার করতে চাইলেন।
১৮৬৫ সালে লিস্টার প্রথমবার সার্জারির আগে তাঁর যন্ত্রপাতি, ঘর, এমনকি রোগীর কাটা জায়গাও কার্বলিক অ্যাসিডের দ্রবণ দিয়ে ধুয়ে জীবাণুমুক্ত করলেন। একটি যন্ত্র দিয়ে বাতাসেও কার্বলিক অ্যাসিড স্প্রে করা শুরু করলেন, যাতে বাতাস থেকেও কোনো জীবাণু ক্ষতে ঢুকতে না পারে।
ফলাফল ছিল জাদুর মতো! তাঁর ওয়ার্ডে ইনফেকশনে মৃত্যুর হার ৪৫ শতাংশ থেকে কমে ১৫ শতাংশে নেমে এল! এই আবিষ্কারের ফলেই তিনি হয়ে উঠলেন অ্যান্টিসেপটিক সার্জারির জনক।
কার্বলিক অ্যাসিড আপনার কী কী ক্ষতি করতে পারে
এত উপকার থাকা সত্ত্বেও নায়ক থেকে সরাসরি খলনায়কে পরিণত হতে পারে এই অ্যাসিড। মনে রাখবেন, কার্বলিক দুর্বল অ্যাসিড হলেও অ্যাসিড। এর থেকে ভয়ংকর বিপদ হতে পারে। এটি কোনো নিরীহ জিনিস নয়। এর বিপদগুলোর ব্যাপারে জানলে আপনি হয়তো বাড়ির কোণে ওই বোতল রাখার আগে দুবার ভাববেন।
কার্বলিক অ্যাসিডে বিপদ হওয়ার জন্য গিলে ফেলার দরকার নেই, এর তীব্র গন্ধেই নাক ও গলায় জ্বালা হতে পারে।
কাশি ও শ্বাসকষ্ট হতে পারে।
ত্বকে লাগলে পুড়ে যেতে পারে।
সবচেয়ে ভয়ের কথা হলো, এটি প্রথমে ত্বকে একধরনের অবশ ভাব তৈরি করে। তাই আপনি হয়তো শুরুতে ব্যথাটাই টের পাবেন না, কিন্তু ভেতরে–ভেতরে আপনার কোষগুলো ধ্বংস হয়ে যাবে!
দীর্ঘদিন এই গন্ধ শুঁকলে ফুসফুস, কিডনি, লিভার ও কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে।
ভারতের একটি মেডিকেল জার্নালের রিপোর্ট অনুযায়ী, বর্ষাকালে ভারতে সাপ তাড়ানোর জন্য রাখা কার্বলিক অ্যাসিড থেকেই শিশুরা মারাত্মকভাবে বিষক্রিয়ার শিকার হয়েছে। অর্থাৎ যে জিনিস সাপ থেকে বাঁচাতে রাখা হয়েছে, সেই জিনিসই মানুষের জন্য কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সুতরাং বিভূতিভূষণের শঙ্করের হাতে কার্বলিক অ্যাসিড ছিল তাঁর সাহসের প্রতীক, তাঁর গল্পের অংশ। কিন্তু একুশ শতকের বাস্তব পৃথিবীতে আমাদের ভরসা রাখতে হবে বিজ্ঞানের ওপর। আর বিজ্ঞান বলছে, সাপ থেকে বাঁচার জন্য বিষাক্ত উপাদানে ভর্তি কোনো বোতলের দরকার নেই, দরকার শুধু পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন পরিবেশ ও সচেতনতা।
সূত্র: ১. ন্যাশনাল পেস্টিসাইড ইনফরমেশন সেন্টার; ২. ন্যাশনাল লাইব্রেরি অব মেডিসিন; ৩. ইউনিভার্সিটি অব ম্যাসাচুসেটস, যুক্তরাষ্ট্র; ৪. ইউনিভার্সিটি অব ফ্লোরিডা, যুক্তরাষ্ট্র; ৫. সায়েন্স মিউজিয়াম, লন্ডন, যুক্তরাজ্য; ৬. আমেরিকান কেমিস্ট্রি কাউন্সিল; ৭. টাইমস অব ইন্ডিয়া