ছুটির দিন সত্যিই উপভোগ করছেন তো?
ছুটি কাটাতে আকর্ষণীয় কোনো জায়গায় ঘুরতে যাওয়া, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সেই ভ্রমণের ছবি বা স্টোরি ভাগ করে নিতে থাকা আর নইলে শুয়ে-বসে সময় পার করা। বহু মানুষের কাছে ছুটির ধারণাটাই এখন এমন। অথচ এমন ছুটিতে না-ই মিলতে পারে স্বস্তি আর প্রশান্তি। দিন শেষে স্মৃতি হয়ে থাকে মুঠোফোনে কাটানো মুহূর্তগুলোই। তাহলে ছুটি বা অবসর উপভোগ করে দেহ-মনকে সতেজ করে তোলার উপায় আদতে কী? এ প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন শিশু-কিশোর ও পারিবারিক মনোরোগবিদ্যার সহকারী অধ্যাপক এবং যুক্তরাজ্যের সিনিয়র ক্লিনিক্যাল ফেলো ডা. টুম্পা ইন্দ্রানী ঘোষ। তাঁর সঙ্গে কথা বলে লিখেছেন রাফিয়া আলম।
মুহূর্তকে উপভোগ করুন
প্রশান্তিদায়ক, আয়েশি সময় কাটান। মনকে বিশ্রাম দিন। কাউকে দেখানোর জন্য নয়, নিজের আনন্দের জন্য অবসরযাপন করুন। মনে রাখবেন, সবকিছুর ছবি তুলে রাখা জরুরি নয়, সব অভিজ্ঞতা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাগ করে নেওয়াও আবশ্যক নয়। শুধু মুঠোফোনে নয়, বরং সুন্দর স্মৃতি জমা হোক মস্তিষ্কে, যা আপনার অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে। তাই বাঁচুন বর্তমানে।
যা করতে পারেন
আপনার যা ভালো লাগে, সেটাই করুন। কী কী করতে চান, সেটার পরিকল্পনা করতে পারেন। কম খরচেও আপনি ঘোরাঘুরি করতে পারবেন। ঘরের কাছে দেখার মতো জায়গা থাকলে সেখানে যান।
প্রকৃতির মাঝে সময় কাটাতে পারেন। ছবি আঁকতে পারেন। অন্যান্য সৃজনশীল কাজ কিংবা খেলাধুলা করতে পারেন। নতুন কিছু শিখতে চেষ্টা করতে পারেন। শুনতে একটু অবাক লাগলেও এটা সত্যি যে ছুটির দিনে খানিকটা সময় নিয়ে ঘর গোছালেও প্রশান্তি পেতে পারেন আপনি।
বন্ধু ও প্রিয়জনদের সময় দিন। তাঁদের জন্য কিছু করুন। শখের যেকোনো কাজ করতে পারেন। বই পড়া, গান শোনা এমনকি রান্না করার মধ্যেও আপনি পেতে পারেন প্রশান্তি।
যিনি রোজ রান্না করেন, তাঁকে না হয় এভাবে একটু আরাম দিন। প্রিয়জনের জন্য ভিন্ন ধারার পদ তৈরি করাটা আপনার ছুটির দিনকে সুন্দর করে তুলতে পারে।
স্বেচ্ছাসেবামূলক কাজও করতে পারেন।
খেয়াল রাখুন
অল্প কয়েক দিনেই অনেক কিছু দেখতে হবে বা অনেক কিছু করতে হবে, এমন চাপ নেবেন না। অল্প সময়ে অতিরিক্ত কায়িক শ্রম হয়, এমন ভ্রমণে না যাওয়াই ভালো। তাতে আপনি বিধ্বস্ত হয়ে পড়তে পারেন।
পরিকল্পনামতো সব করতেই হবে, এমন চাপ নিয়ে ফেলবেন না। প্রয়োজনে পরিকল্পনা এদিক-ওদিক করুন।
গভীর রাত পর্যন্ত জেগে আড্ডা দেবেন না। বিশ্রাম নিন। আবার সারাটা সময় শুয়ে, বসে, ভিডিও দেখে বা মুঠোফোন স্ক্রল করে কাটিয়ে দেওয়াও ঠিক নয়। উঠুন, হাঁটুন।
শিথিলায়নের চর্চা করতে পারেন। ব্যায়াম, যোগব্যায়াম বা ধ্যান করতে পারেন। স্পা নিতে পারেন।
পানি খাবেন পর্যাপ্ত।
ফলমূল, বাদাম আর অন্যান্য স্বাস্থ্যকর স্ন্যাকস বেছে নিতে পারেন। দীর্ঘ সময় খালি পেটে থাকবেন না। ঘুরতে গেলে ভারী খাবার এড়িয়ে চলাই ভালো।
আরামদায়ক পোশাক বা অনুষঙ্গের অভাবে আপনার অস্বস্তি হতে পারে।