কিম কার্দাশিয়ান–রহস্য

হলিউডের সাড়াজাগানো সুপারস্টার কিম কার্দাশিয়ান। মডেল হিসেবে ক্যারিয়ার শুরু করলেও অভিনয়জগতে বেশ সুনাম কুড়িয়েছেন তিনি। একজন সফল অভিনেত্রী, সমাজকর্মী, ব্যবসায়ী ও টেলিভিশন ব্যক্তিত্ব হিসেবে এখন সমাধিক পরিচিত। চলচ্চিত্রে অভিনয়ের পাশাপাশি তাঁকে দেখা যায় রিয়েলিটি শো ‘কিপিং আপ উইথ দ্য কার্দাশিয়ানস’–এ। এরপর তিনি আসেন ‘কোর্টনি অ্যান্ড কিম টেইক নিউইয়র্ক’ এবং ‘কোর্টনি অ্যান্ড কিম টেইক মায়ামি’তে। খুব অল্প সময়ের ব্যবধানেই এই মডেল সবার মন জয় করে নিয়েছেন। তাঁর বোল্ডনেস পারসোনালিটি আর কাজের প্রতি অনুরাগ তাঁকে সফল হতে সাহায্য করেছে। এর জন্য প্রচুর সময় ও শ্রম দিয়েছেন তিনি। তবে হাজার ব্যস্ততার মধ্যেও নিজেকে ফিট রাখার ব্যাপারে খুবই সচেতন কিম।

তাঁর কাছে ত্বক ও শারীরিক সৌন্দর্য ধরে রাখাও যেন একটি শিল্প। ত্বকের সৌন্দর্য রক্ষায় পান করেন প্রচুর পরিমাণ পানি, যা তাঁকে সব সময় সতেজ রাখে। তিনি মনে করেন, প্রতিটি মানুষেরই উচিত নিজেকে ভালোবাসা, সুস্থ ও সজীব রাখা। আর এর জন্য প্রয়োজন নির্দিষ্ট ডায়েট চার্ট মেনে চলা, যা একজন মানুষের শরীর–মনকে সুস্থ ও সবল রাখে। নিয়ম করে প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠেই তিনি গরম পানি পান করেন। এটি একদিকে যেমন শরীরের রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে, পাশাপাশি তাঁকে সারা দিন কর্মক্ষম এবং সুন্দর থাকতে সাহায্য করে। এ ছাড়া সকালে এক কাপ ধোঁয়া উঠা ব্ল্যাক কফি তাঁর পছন্দ। চিনি যতটা সম্ভব কম খাওয়া কিংবা পরিহার করার চেষ্টা করেন কিম। এ জন্য মাঝেমধ্যে গ্রিন টি পান করেন।

সৌন্দর্য-সচেতন এ শিল্পী নিজের জন্য উপযুক্ত ডায়েট প্ল্যান নির্ধারণ করে তা নিয়মিত মেনে চলেন। তিনি যথাসম্ভব স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ করেন। সাধারণত সকালের নাশতায় ডিম ও তার্কিশ সসেজ তাঁর পছন্দ। সঙ্গে ব্লুবেরি এবং অন্য আরও কয়েক ধরনের ফলও রাখেন। সকালে ডার্ক চকলেট চেরি ও নাটবারও খেতে ভালোবাসেন তিনি। এ ছাড়া আমন্ড ও পিনাট বাটার রয়েছে তাঁর পছন্দের তালিকায়। দুপুরের খাবারে সাধারণত গ্রিল্ড লাইম চিকেন উইথ স্প্যানিশ সালাদ কিংবা তার্কিশ বার্গার তাঁর প্রিয়। ত্বকের উজ্জ্বলতা ধরে রাখতে গ্রিন জুস ও অ্যালকালাইন–জাতীয় খাবার প্রচুর পরিমাণে গ্রহণ করেন। এ ছাড়া বিভিন্ন রকমের সবজি, বিশেষ করে সবুজ শাকসবজি খেতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন কিম।

যেকোনো ধরনের শস্যজাতীয় খাবার ও পনির খেতে খুব ভালোবাসেন এই মডেল। বিকেলের খুব হালকা স্ন্যাকস সারা দিনের ক্লান্তি দূর করে। তাই এ সময় তিনি গাজরের সঙ্গে ৪ টেবিল চামচ হাম্মাম, আপেল ও পনির খেয়ে থাকেন। তবে সাধারণ মানুষের মতো কিছু প্রচলিত কমফোর্ট ফুডও বেশ পছন্দ এই তারকা মডেলের। এই তালিকার ওপরের দিকে রয়েছে ভ্যানিলা কফি ফ্রেইপ, পুডিং ও পেস্ট্রি। রাতের খাবারে লেমন থাইম হ্যালিবাট উইথ গ্রিন বিনস এবং লেমন রোজমারি চিকেন খেতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন তিনি। এ ছাড়া অন্যান্য মিক্সড আইটেমও থাকে ডিনার টাইমে।

কখনো কখনো স্যুপও তাঁর কাছে বেশ উপদেয় মনে হয়। তিনি হৃদয় সুরক্ষাকারী খাবার খেতে বেশি পছন্দ করেন। আর যেহেতু অল্প মসলায় তৈরি খাবারে স্বাদ বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে শরীরের অতিরিক্ত মেদও জমতে দেয় না, তাই মসলাহীন বা অল্প মসলা দিয়ে তৈরি খাবারই বেশি দেখা যায় তাঁর পাতে। তাঁর ডায়াট চার্টও তৈরি সেভাবেই।
কিম কার্দাশিয়ান রাতের খাবার নিয়ে একটু যেন বেশি সচেতন। এ জন্য সাধারণত রাত আটটার মধ্যেই শেষ হয় তাঁর ডিনার টাইম। এরপর এক ঘণ্টা হাতে সময় নিয়ে কিছুক্ষণ হালকা ব্যায়াম ও অল্প বিশ্রাম নিয়ে বেশ তাড়াতাড়িই ঘুমিয়ে পড়েন। শরীর সুস্থ রাখার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে ওয়ার্কআউট করে ভারসাম্য বজায় রাখাটা খুব জরুরি, যা তিনি সব সময় মেনে চলেন।

নিয়মিত জিম, ব্যায়াম বা সাঁতারের মাধ্যমে তিনি নিজেকে সতেজ ও প্রাণবন্ত রাখেন। কিম জানেন, নিয়মমাফিক খাবার গ্রহণ, পাশাপাশি নিয়মিত শরীরচর্চা, ঘুম ও বিশ্রামেরও প্রয়োজন রয়েছে। তাই তিনি প্রতিদিন পর্যাপ্ত ঘুমের পাশাপাশি নিয়মিত ওয়ার্কআউট করতে ভুলেন না। কারণ, সারা দিনের কর্মব্যস্ততার ফলে শরীরে যেন কোনো প্রকার ঘাটতি না হয়, সেদিকে তাঁকে লক্ষ রাখতে হয়। তাই তিনি নিয়মমাফিক খাওয়া, ঘুম, ব্যায়াম ও পরিশ্রমের মাধ্যমে নিজেকে ফিট রাখেন।

ছবি: কিম কার্দাশিয়ানের ইনস্টগ্রাম হ্যান্ডল