আপনার শিশু কি আক্রমণাত্মক? চাইলেই কিন্তু তা নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন

শিশুরা বাস্তব জীবন সম্বন্ধে অনভিজ্ঞ, অনেক সময়ই তারা বুঝে উঠতে পারে না, জটিল আবেগ কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করবে
প্রতীকী ছবিতে মডেল হয়েছে আহিল, ছবি: সুমন ইউসুফ

পছন্দের জিনিস কিনে না দেওয়ায় রাগ করে আশপাশের জিনিসপত্র ছুড়ে মারছে শিশু—রেস্তোরাঁ বা শপিং মলে প্রায়ই এমন দৃশ্য চোখে পড়ে। অনেক সময় স্কুল থেকেও অভিযোগ আসে, অন্য বাচ্চাদের সঙ্গে মারামারি করে আপনার সন্তান। এমন অবস্থায় অভিভাবকেরা বুঝে উঠতে পারেন না, কী করবেন।

আপনার জন্য আমাদের প্রথম পরামর্শ হলো—অস্থির হবেন না। কারণ, অভিভাবক হিসেবে সামনে আরও অনেক পথ আপনাকে পাড়ি দিতে হবে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, বাচ্চারা প্রতিনিয়ত এমন কিছু না কিছুর মধ্যে দিয়ে যায়, যা তাদের উদ্বিগ্ন করে। শিশুরা বাস্তব জীবন সম্বন্ধে অনভিজ্ঞ, অনেক সময়ই তারা বুঝে উঠতে পারে না, জটিল আবেগ কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করবে। কোন প্রতিক্রিয়ার বহিঃপ্রকাশ কেমন হবে, বুঝতে পারে না। সে কারণে শিশুরা প্রায়ই আক্রমণাত্মক ব্যবহার করে। তবে শিশুদের আক্রমণাত্মক ব্যবহার জটিল কিছু নয়। চাইলেই এটা নিয়ন্ত্রণ করা যায়।

আরও পড়ুন

নিজের মানসিক যত্ন নিন

অফিসের কাজের চাপ, ঘরের কাজ—সব সামলে সন্তানের জেদ সামলানো কঠিন। সব সময় মনে রাখা জরুরি, সবকিছু একসঙ্গে সামলানো সম্ভব নয়। নিজের জন্য আলাদা করে সময় রাখুন। পারিপার্শ্বিক অবস্থা সন্তানের মানসিক বিকাশে অনেক সহায়তা করে। সে কারণে অভিভাবকদের উচিত নিজেকে প্রাণবন্ত রাখা।

প্রথমেই বকাঝকা নয়

সারা দিন কাজ শেষে বাসায় ফেরার পর সন্তানের নানা রকম চাওয়া-পাওয়া থাকে। সেই চাওয়াটা অনেক সময় জেদে রূপ নেয়। সন্তানের জেদের সঙ্গে যখন কোনোভাবেই পেরে উঠতে পারবেন না, তখন রাগ হওয়াটাই স্বাভাবিক। কিন্তু সেটা দেখানো যাবে না। সন্তানকে তিরস্কার, শাস্তি দেওয়া অথবা শারীরিকভাবে আঘাত করলে সে আরও জেদি হয়ে ওঠে; বরং সন্তানের সঙ্গে সরাসরি কথা বলুন, তাকে বোঝান। একবারেই সে বুঝবে, এমনটা আশা করবেন না। সময় নিয়ে বোঝাতে হবে। এ ধরনের ব্যবহার কেন কাম্য নয়, বুঝিয়ে বললে অনেক বেশি সফলতা পাওয়া যায়।

আরও পড়ুন

প্রশংসা করুন

সন্তানের আক্রমণাত্মক ব্যবহার রাতারাতি বদলানো যাবে না। এটা সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। আলাদাভাবে তার সঙ্গে কথা বলুন। সন্তান যেন নিজ থেকেই তার ভুল বুঝতে পারে, সেই সুযোগ দিন। অভিভাবকদের সব সময়ই খেয়াল রাখতে হবে, কোনো সন্তান নিজেকে যেন তুচ্ছ না ভাবে। অভিভাবকদের উচিত তার প্রশংসা করা, তার ভালো কাজগুলো তুলে ধরা। সন্তান যেন বুঝতে পারে, তার মধ্যে ভালো গুণাবলিও আছে। 

সন্তানকে সময় দিন

যতই কাজের চাপ থাকুক, দিন শেষে সন্তানদের জন্য সময় রাখুন। কিছুটা সময় তার পছন্দের কোনো খেলাধুলা করুন। সন্তানের জন্য রোজ রোজ নতুন খেলনা না কিনে, বরং পুরোনো খেলনা নিয়েই তার সঙ্গে খেলুন। সন্তানদের ভালো–মন্দ বিষয়গুলোর প্রতি যত্নবান হোন। এতে সন্তানও আপনার প্রতি আকর্ষণ বোধ করবে, আপনি কিছু বললে মেনে নেবে।

সূত্র: ফেমিনা