কোন ব্র্যান্ডের স্কুটার কেমন দামে পাবেন?

ভেসপার এই স্কুটারটি বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয়। ছবি: আহাদ
ছবি: কবির হোসেন

ঢাকার একটি প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠানে কাজ করেন সুলতানা রাজিয়া। থাকেন ধানমন্ডিতে। অফিস করতে প্রতিদিন গুলশানে ছুটে যান। একসময় নিয়মিত ব্যবহার করতেন লোকাল বাস। পরে রাইড শেয়ারিং অ্যাপের বাইকে চড়া শুরু করেন। কিছুদিন ধরে ভাবছেন একটা স্কুটি হলে মন্দ হয় না। নারী-পুরুষ সকলেই সহজ বাহন হিসেবে স্কুটারে ঝুঁকছেন। বাজারে এখন কেমন স্কুটার আছে, চলুন সেটা জেনে নিই।

টিভিএস

টিভিএস অটো বাংলাদেশের আকর্ষণীয় বেশ কয়েকটি স্কুটার আছে। টিভিএস অটো বাংলাদেশের প্রধান বিপণন কর্মকর্তা আশরাফুল হাসান বলেন, ‘এখন শহরের মানুষেরা নিজেদের প্রয়োজনে স্কুটার কিনছেন। করোনা মহামারির পর থেকেই মানুষের মধ্যে স্কুটার কেনার আগ্রহ দেখা যাচ্ছে। আমরা ১২৫ সিসি সেগমেন্টে বাংলাদেশের সবচেয়ে অ্যাডভান্স ও স্বতন্ত্র টেকনোলজির স্কুটার টিভিএস এনটর্ক লঞ্চ করছি। এ ছাড়া টিভিএস উইগো ও জুপিটার বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। এনটর্ক স্কুটারটি বিভিন্ন দেশের জেনারেশন জেডের মধ্যে ইতিমধ্যে পারফরম্যান্স, স্টাইল এবং প্রযুক্তির কারণে জনপ্রিয়তা পেয়েছে। দেখা যাচ্ছে, তরুণ পেশাজীবীরাই এখন বেশি স্কুটার কিনছে। বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে কর্মজীবীরা নিরাপত্তার কারণে স্কুটার কিনছেন। একটা বিষয় দেখা যাচ্ছে, অভিভাবকেরা বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া ১৮ বছর বয়সী সন্তানদের জন্য প্রয়োজনে স্কুটার কিনছেন। সব মিলিয়ে নগরের মানুষের জীবনে গতিশীলতা আনছে এসব স্কুটার।

টিভিএস ব্যান্ডের একটি স্কুটার
ছবি: সংগৃহীত

এনটর্ক ১২৫ সিসি ব্র্যান্ডের স্কুটারটি সিঙ্গেল সিলিন্ডার, ফোর স্ট্রোক ও এয়ার কুলড, এতে আছে কানেক্টেড টেকনোলজি, যার মাধ্যমে আপনি মিটার কনসোলেইকে ফোন করলে বা টেক্সট এলে তা দেখতে পারবেন। এই স্কুটারের দাম ১ লাখ ৯৭ হাজার ৯৯৯ টাকা। রকজ ১২৫ সিসির স্কুটারে আছে একক সিলিন্ডারের ফোর স্ট্রোক এয়ার কুলড ইঞ্জিন। সর্বোচ্চ গতি প্রতি ঘণ্টায় ৮০ কিলোমিটার। এই স্কুটারের দাম পড়বে ১ লাখ ৫৩ হাজার ৯০০ টাকা। ওয়েগো ১১০ সিসি স্কুটারে আছে একক সিলিন্ডার, ফোর স্ট্রোক, এয়ার কুলড ইঞ্জিন। ঘণ্টায় সর্বোচ্চ গতি ৭৮ কিলোমিটার। দাম পড়বে ১ লাখ ৫৯ হাজার ৯৯৯ টাকা। এ ধরনের স্কুটার নগরজীবনে গতিশীলতা আনছে, একই সঙ্গে প্রয়োজনের বিষয়টিকে গুরুত্ব দিচ্ছে।’

আরও পড়ুন

 সুজুকি

সুজুকির স্কুটার
ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশে র৵নকন মোটরসাইকেল লিমিটেড সুজুকি ব্র্যান্ডের স্কুটার বাজারজাত করছে। সুজুকি অ্যাকসেস ১২৫ এফআই স্কুটারের স্টার্টার সিস্টেম ইলেকট্রিক ও সেলফ স্টার্ট, ইঞ্জিনটি এয়ার-কুলড ফোর স্ট্রোক, ১-সিলিন্ডার। হাইব্রিড ড্যাশবোর্ডের স্পিডোমিটারের এই স্কুটারের ইঞ্জিন বেশ শক্তিশালী। ফুয়েল ট্যাংকের ক্যাপাসিটি ৫ লিটার। দাম পড়বে ১ লাখ ৭৪ হাজার ৯৫০ টাকা। এই স্কুটারে চড়ে চাইলে সারা দেশ ঘুরে আসা যাবে। সুজুকি প্রিমিয়াম বারিধারা শোরুমের ব্রাঞ্চ ম্যানেজার রায়হান রাজু বলেন, ‘স্কুটার এখন নারী–পুরুষ সবাই চালাতে চায়। একদিক থেকে স্টাইল আবার অন্যদিক থেকে প্রয়োজনের জন্য স্কুটারের ব্যবহার অনেক বেড়েছে। একটা সময় স্কুটার ও মোটরসাইকেল পুরুষেরাই কিনত। গেল কয়েক বছরে এই চিত্র বদলেছে। বাইকের চেয়ে স্কুটার চালানো সহজ বলে স্কুটারে ঝুঁকছেন অনেক নারী। এখন শখে নয়, প্রয়োজনের থেকেই নারী-পুরুষনির্বিশেষে স্কুটার কেনার দিকে ঝুঁকছেন।’

আরও পড়ুন

হোন্ডা

হোন্ডা ডিও স্কুটার
ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ হোন্ডা প্রাইভেট লিমিটেডের স্কুটার হোন্ডা ডিও। আকর্ষণীয় স্পোর্টি গ্রাফিকস ডিজাইনের এই স্কুটার ১১০ সিসি। ঘণ্টায় সর্বোচ্চ গতি ৮৩ কিলোমিটার। এতে আছে ফ্যান কুলড, ফোর স্ট্রোক, বিএসএস-ফোর ইঞ্জিন ও কিক/সেলফ স্টার্ট। দাম পড়বে ১ লাখ ৮৫ হাজার ৫০০ টাকা। হোন্ডা বাংলাদেশের প্রধান মার্কেটিং কর্মকর্তা শাহ মুহাম্মদ আশেকুর রহমান জানান, স্কুটার এখনকার জীবনে অন্যতম বাহন। সাধারণ জীবনে গতিশীলতা আনছে স্কুটার। আগে স্কুটারের দাম বেশি ছিল, কিন্তু এখন মধ্যবিত্তেরাও স্কুটার কিনছেন। জ্বালানিসাশ্রয়ী ও রক্ষণাবেক্ষণে খরচ কম বলে স্কুটারের জনপ্রিয়তা বাড়ছে। প্রতিবেশী দেশ ভারত, থাইল্যান্ডের মতোই আমাদের দেশেও স্কুটারের চাহিদা অনেক বাড়ছে। প্রযুক্তিগত বিভিন্ন ফিচার ও নিরাপত্তার কারণে স্কুটারের ব্যবহার বাড়ছে। মধ্যবয়সীরাও চলাফেরায় স্বাধীনভাব আনতে স্কুটারে ঝুঁকছেন।

অন্যান্য ব্র্যান্ড

রানারের স্কুটার
ছবি: সংগৃহীত

বাজারে আছে অন্যান্য ব্র্যান্ডের নানা মডেলের স্কুটার। রানার বাংলাদেশের স্কুটি ১১০ মডেলে আছে সিঙ্গেল সিলিন্ডার ফোর স্ট্রোক এয়ার কুলড ইঞ্জিন। স্টার্টিং টাইপ কিক ও স্টার্টার। সর্বোচ্চ শক্তি ৫.২ কিলোওয়াট। ফুয়েল ট্যাংক ক্যাপাসিটি ৫ লিটার। ইয়ামাহা মোটরসাইকেল বাংলাদেশের বাজারে বিক্রি করছে আকর্ষণীয় স্টাইল ও নিরাপত্তা-সুবিধার স্কুটার। এরোক্স ১৫৫ নামের ম্যাক্সি-স্পোর্টস স্কুটার আকার, গতি ও ডিজাইনের জন্য নজর কেড়েছে। এই স্কুটারে আছে লিকুইড-কুলড, ফোর স্ট্রোক, ৪ ভালভের ইঞ্জিন। জ্বালানি ট্যাংকের ধারণক্ষমতা ৫.৫ লিটার। ইয়ামাহা রে-জেডআর স্ট্রিট র৵ালি ১২৫ এফআই স্কুটারে আছে এয়ার কুলড, ফোর স্ট্রোক, ২ ভালভের ইঞ্জিন। ৫২.৪ মিমি x ৫৭.৯ মিমি আকারের এই স্কুটারের আছে ৬ কিলোওয়াট হর্সপাওয়ার।

আরও পড়ুন