পোশাকে ছিল ভ্যান গগের চিত্রকর্ম থেকে সমুদ্রের ঢেউ
বন্দরনগরী চট্টগ্রামে ঈদের আগে আয়োজন করা হয় পোশাক নিয়ে ফ্যাশন শো। এই অঞ্চলের ফ্যাশন ডিজাইনারদের সৃজনশীলতাকে তুলে ধরতেই প্রথম আলোর এ আয়োজন করে প্রতিবছর
১৮ মার্চ চট্টগ্রামে ‘বার্জার-প্রথম আলো ঈদ ফ্যাশন শো’তে তুলে ধরা হলো ঈদ পোশাকের সম্ভার। হোটেল র্যাডিসনে নিজেদের সৃষ্টিকর্ম নিয়ে হাজির হন বন্দরনগরীর আট ডিজাইনার। তাঁদের নকশা করা শাড়ি, পাঞ্জাবি-শেরওয়ানি, সালোয়ার-কামিজ, স্কার্ট, লেহেঙ্গা পরে মঞ্চে হাঁটেন মডেলরা। চিত্রশিল্পী ভিনসেন্ট ভ্যান গঘের আঁকা বিখ্যাত দ্য স্টারি নাইট–এর অনুসরণে করা শাড়ি কিংবা প্রাচীন মিসরের কোনো যুগলের মুখোমুখি বসে গল্প করার দৃশ্যগুলো যেন একেকটি গল্প বলছিল, আর তাতে মুগ্ধ হচ্ছিলেন দর্শক।
প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক বিশ্বজিৎ চৌধুরীর স্বাগত বক্তব্য দিয়ে শুরু হয় অনুষ্ঠান। তিনি বলেন, এই মঞ্চ এ অঞ্চলের ফ্যাশন ডিজাইনারদের সৃজনশীলতার মঞ্চ। দেশীয় ঐতিহ্যকে অক্ষুণ্ন রেখে নতুন কিছুর সন্ধান দিতেই প্রথম আলোর এ আয়োজন। অনুষ্ঠানের সহযোগী পৃষ্ঠপোষক ছিল জিপিএইচ ইস্পাত।
সন্ধ্যা ৭টায় ওঠে মঞ্চের পর্দা। ঝলমলে মঞ্চে ডিজাইনার আইভি হাসানের নকশা করা পোশাকে হাজির হন মডেলরা। ভ্যান গঘের দ্য স্টারি নাইট, মিসরীয় ও ফুলের মোটিফসহ নানা রকমের পোশাক দর্শকের সামনে উপস্থাপন করেন আইভি হাসান।
মসলিনের ওপর হ্যান্ডপেইন্টের কাজ করা শাড়ি ও পাঞ্জাবি নিয়ে মঞ্চে আসেন সুলতানা নুরজাহান। অ্যাপলিক, টাইডাই ও লেসের মিশেলে করা প্রতিটি ডিজাইন দর্শকের নজর কেড়েছে।
মসলিন, জর্জেট, সফুরা সিল্কের কাপড়ের ওপর কারচুপি নকশার মিশ্রণে ফিউশন করেছেন ডিজাইনার ফারজানা মালিক। ছেলেদের উৎসবের পোশাক শেরওয়ানি, পাঞ্জাবির পাশাপাশি লেহেঙ্গা উপস্থাপন করেন এইচ এম ইলিয়াছ। গরমের কথা মাথায় রেখে পোশাকগুলোতে ব্যবহার করা হয়েছে হালকা ধাঁচের রং। নকশায় ছিল ব্যতিক্রমী কারুকার্য।
সমুদ্রের বিস্তীর্ণ জলরাশি আর ঢেউয়ের মিতালি ফুটিয়ে তোলেন ডিজাইনার নাসরিন সরওয়ার। তাঁর নকশাতেও প্রাধান্য পেয়েছে বিখ্যাত চিত্রকর্ম আর ভাস্কর্য। মসলিন ও খাদি কাপড়ের ওপর করা হয়েছে নকশা। গরমের রং হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে সাদা-কালো। ডিজাইনার নূজহাত নূয়েরির পোশাকে দেখা গেছে হাতের কাজের নকশা। ঈদ মাথায় রেখে জমকালো এ ডিজাইনগুলো করা হয়েছে দেশীয় উপকরণ দিয়েই।
ডিজাইনার কাজী শাহ্তাজ পারভিন জামদানির ওপর নানা নকশায় তৈরি করেছেন একেকটি পোশাক। শাড়ি ছাড়াও পারভিনের সংগ্রহে ছিল কটিসহ সালোয়ার-কামিজ, জামদানি, কুর্তি। আরেক ডিজাইনার জান্নাতুল ফেরদৌস পোশাকে সিল্ক ও সফুরা সিল্কের কাপড়ে এরাবিয়ান মোটিফ ব্যবহার করেন। রঙের ক্ষেত্রে বেছে নেন নীল, বেগুনি, আকাশি।