ফিটনেস ফ্যাশন

মডেল: দয়িতা, কৃতজ্ঞতা: কমব্যাট জিমছবি: প্রথম আলো

ইদানীং শরীরচর্চার জন্য জিমে যাওয়ার একটা ট্রেন্ড চলছে। সব বয়সের মানুষ স্বাস্থ্য ঠিক রাখার চেষ্টা করছেন। ফলে জিমগুলো সরব হয়ে উঠেছে বিভিন্ন বয়সী নারী-পুরুষের ভিড়ে। শরীরচর্চার সঙ্গে আবশ্যকীয় বিষয় হচ্ছে পোশাক। একসময় ট্রাউজার, থ্রি–কোয়ার্টার প্যান্ট, টি–শার্ট আর স্নিকার ছিল জিমে যাওয়ার মূল পোশাক। কিন্তু এখন সে পোশাকের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে হরেক রকমের অনুষঙ্গ।

শরীরচর্চার সঙ্গে আবশ্যকীয় বিষয় হচ্ছে পোশাক
ছবি: জোনাথন বোরবা, পেকজেলসডটকম

একটি বিষয় উল্লেখ করা ভালো, স্পোর্টস ওয়্যার আর অ্যাক্টিভ ওয়্যার বা ফিটনেস ওয়্যারের মধ্যে পার্থক্য আছে। বিভিন্ন খেলার জন্য নির্দিষ্ট ধরনের পোশাক আছে। কিন্তু ফিটনেস ওয়্যার একেবারে নিজের পছন্দের বিষয়। ফিটনেস বা অ্যাক্টিভ ওয়্যার লাইফস্টাইলের সঙ্গে যুক্ত, ব্যক্তিগত পছন্দ-অপছন্দের সঙ্গে যুক্ত। জিমে যাওয়ার জন্য মানুষ এখন বেছে নিচ্ছে নিজের পছন্দের ফিটনেস ওয়্যার বা অ্যাক্টিভ ওয়্যার।

চাহিদার কথা বিবেচনায় রেখে বিখ্যাত ও জনপ্রিয় ব্র্যান্ডের বাইরেও অনেক ভালো ভালো ফিটনেস ওয়্যার পাওয়া যাচ্ছে বাজারে। জিমের জন্য কোন ধরনের পোশাক প্রয়োজন, সে বিষয়ে আমাদের সবারই কিছু না কিছু ধারণা আছে।

পোশাক

থ্রি–কোয়ার্টার প্যান্ট অথবা ট্রাউজার, সঙ্গে স্নিকার আর গোল গলার টি–শার্ট। এই ছিল আমাদের আদি ফিটনেস ফ্যাশন। কিন্তু সময়ের হাত ধরে জিমনেসিয়ামের পোশাকে এসেছে পরিবর্তন।

জিমে ব্যায়াম করার জন্য আরামদায়ক অনেক পোশাক এসেছে বাজারে। মডেল: দয়িতা
ছবি: প্রথম আলো

‘জিমে যাব’ এ ভাবনা মাথায় এলেই খোঁজ পরে বিভিন্ন একটু নতুন ধরেনর পোশাকের। এখন আগের সেই ঢোলাঢালা ট্রাউজার পরে কেউ জিমে যেতে চান না। জিমে ব্যায়াম করার জন্য আরামদায়ক অনেক পোশাক এসেছে বাজারে। খুব আঁটসাঁট নয়, আবার অনেক ঢিলেঢালাও নয়, জিমের জন্য এমন পোশাক পাওয়া যাচ্ছে বিভিন্ন স্পোর্টস এক্সেসরিজের শোরুমে। নারী ও পুরুষ উভয়ের জন্যই পছন্দমতো আকারের ট্র্যাক প্যান্টস পাওয়া যায় কিনতে। কিছুটা আঁটসাঁট, কিন্তু আরামদায়ক এ ট্র্যাক প্যান্টস পরে জিমে সব ধরনের ব্যায়ামই করা সম্ভব।

একই ধরনের কাপড়ের টি–শার্ট এবং শর্টসও পাওয়া যায়। পাওয়া যায় স্লিভলেস গেঞ্জি। নিজের পছন্দমতো কিনতে পারেন সেগুলো।

যাঁরা জিমে ভারী যন্ত্রপাতি নিয়ে ব্যায়াম করেন, তাঁদের জন্য এই পোশাকগুলো খুবই কার্যকর এবং আরামদায়ক।

স্নিকার

আমরা সাধারণত যেগুলোকে কেডস বলে জানি, সেগুলো মূলত স্নিকার। কেডস একটি মার্কিন কোম্পানির নাম। পায়ের সুরক্ষায় স্নিকার ব্যবহার করা হয়। বিভিন্ন উপাদানের জন্য স্নিকারের দাম, মান ও কার্যকারিতায় পার্থক্য ঘটে। নারী ও পুরুষ উভয়ের জন্যই জিমে ব্যায়াম করার উপযোগী স্নিকার পাওয়া যায়। পছন্দ এবং আরাম অনুযায়ী কিনে নিতে পারেন। জিমের বাইরেও প্রতিদিনের চলাচলের জন্য স্নাকির ব্যবহার করা যায়।

হেড ব্যান্ড

হেড ব্যান্ড দিয়ে সামনের চুলগুলোকে সামলে নিতে হয়
ছবি: প্রথম আলো

শরীরচর্চা করার সময় মুখের সামনে চুল চলে আসাটা বিরক্তিকর বটে। এর জন্য মনঃসংযোগে ব্যাঘাত ঘটে এবং কখনো কখনো দুর্ঘটনাও ঘটতে পারে। এ জন্য হেড ব্যান্ড দিয়ে সামনের চুলগুলোকে সামলে নিতে হয়, যাতে চোখের ওপর না পড়ে। রংবেরঙের বিভিন্ন ব্যান্ড পাবেন বিভিন্ন স্পোর্টস এক্সেসরিজের শোরুমে।

কোমরের বেল্ট

সাধারণত বেল্টের সহায়তা ছাড়াই শরীরচর্চা করার পক্ষে মত দেন বিশেষজ্ঞরা। তবে বিশেষ কিছু সময় বেল্ট পরা যেতে পারে। যেমন মা হওয়ার পর পেট একটু ঝুলে পড়ে, প্রাথমিক অবস্থায় শরীরচর্চার সময় কোমরে অবলম্বন পাওয়ার জন্য বেল্ট পরা যেতে পারে।

তা ছাড়া যাঁরা অ্যাডভান্স লেভেলের শরীরচর্চা করেন, তাঁদের জন্য বিশেষ প্রয়োজন হতে পারে বিভিন্ন ধরনের বেল্ট। সেগুলো এখন পাওয়া যায় একেবারেই হাতের নাগালে।

রিস্ট ব্যান্ড

সাধারণত ভারোত্তোলনের সময়, দৌড়ানোর সময় হাতে রিস্ট ব্যান্ড পরা হয়ে থাকে। এটি সুবিধামতো ঢিলে ও আঁটসাঁট করা যায়। প্রয়োজনে এটি দিয়ে কপালের ঘাম মুছে নেওয়া যায়।

গ্লাভস

ব্যায়ামের সময় হাতের সুরক্ষার জন্য গ্লাভস ব্যবহার করতে হয়
ছবি: প্রথম আলো

ব্যায়াম করতে গিয়ে যাতে হাতের তালুর চামড়া মোটা হয়ে না যায়, সে জন্য গ্লাভস ব্যবহার করা হয়। এ ছাড়া বিভিন্নভাবে গ্লাভস হাতের সুরক্ষা দেয়।

স্টপওয়াচ

কতক্ষণ শরীরচর্চা করলেন, তা হিসাব রাখতে স্টপওয়াচের প্রয়োজন। এ জন্য বিভিন্ন রকম স্টপওয়াচ পাওয়া যায় বাজারে। তবে এখন প্রায় প্রতিটি স্মার্টফোনে স্টপওয়াচ থাকে। আপনার স্মার্টফোনটি ব্যবহার করতে পারেন স্টপওয়াচ হিসেবে।

অ্যাক্টিভিটি ট্র্যাকার

স্টপওয়াচ ছাড়াও স্মার্টফোনগুলোতে থাকে অ্যাক্টিভিটি ট্র্যাকার। এটিকে ফিটনেস ট্র্যাকারও বলা হয়। অ্যাক্টিভিটি ট্র্যাকার হিসেবে স্মার্টফোন ব্যবহার করতে না চাইলে আলাদা করে সেটি কিনতেও পারেন। এটি ঘড়ির মতো হাতে পরে থাকা যায়। ব্যায়াম করার সময় এটি পরে থাকলে কতক্ষণ ব্যায়াম করলেন, কতটুকু ক্যালরি পুড়ল, এসব তথ্য এতে দেখতে পাবেন। সঙ্গে ঘড়ির সুবিধাও আছে।

ম্যাট

ফ্রি–হ্যান্ড কিছু ব্যায়াম কিংবা যোগব্যায়াম করার জন্য ম্যাটের প্রয়োজন পড়তে পারে। বিভিন্ন ধরনের উপাদানে তৈরি ম্যাট পাওয়া যায়। আপনার পছন্দের ম্যাট কিনতে পারেন বিভিন্ন স্পোর্টস এক্সেসরিজের শোরুম থেকে।

এ ছাড়া ব্যায়ামের সময় আরও প্রয়োজন তোয়ালে ছোট রুমাল, ওজন মাপার যন্ত্র। জিমে যাওয়ার সময় জিনিসপত্র বহন করার জন্য লাগবে ছোট ব্যাগ, পানির বোতল ইত্যাদি। এগুলো এখন ঢাকা শহরের বিভিন্ন জায়গায় পাওয়া যায়।