রাশিয়ায় পড়ালেখা আর পরীক্ষার ধরন আলাদা

উচ্চমাধ্যমিকের পরপরই বৃত্তি নিয়ে অনেকে উচ্চশিক্ষার জন্য দেশের বাইরে যান। হাসিব সিফাত যেমন রাশিয়ার মস্কো ইনস্টিটিউট অব ফিজিকস অ্যান্ড টেকনোলজিতে পড়ছেন। পড়ুন তাঁর অভিজ্ঞতা।

ভিন্ন পরিবেশ, ভিন্ন সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচয় হয় ভিনদেশে পড়তে গেলে
ছবি: সংগৃহীত

২০২০ সালে রুশ সরকারের বৃত্তি পাওয়ার মধ্য দিয়ে শুরু হয় আমার যাত্রা। পুরো এক বছর ধরে রুশ ভাষা ও সংস্কৃতির ওপর প্রস্তুতিমূলক কোর্স করে ২০২১ সাল থেকে স্নাতকের পড়ালেখা শুরু করি।

এই বৃত্তি পেতে হলে দুটি বিষয় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। প্রথমত, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকে ভালো ফল। দ্বিতীয়ত, যে বিষয়ে রাশিয়ায় পড়তে চান, সে বিষয়ে পড়ার পেছনে উল্লেখযোগ্য কারণ বা আগ্রহ। এ ছাড়া স্কুল-কলেজে সহশিক্ষা কার্যক্রমের অভিজ্ঞতাও ‍গুরুত্বপূর্ণ। আমি বেশ আগেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম, রাশিয়ায় পড়ব। তাই রাশিয়ান হাউস ইন ঢাকার ফেসবুক পেজে চোখ রাখছিলাম। এখানেই সাধারণত বৃত্তির নোটিশ ও বৃত্তি–সম্পর্কিত সেমিনারের হালনাগাদ তথ্য পাওয়া যায়। প্রয়োজনীয় সব নথি প্রস্তুত করা থেকে শুরু করে এডুকেশন ইন রাশিয়ার ওয়েবসাইটে আবেদন করাসহ প্রতিটি ধাপে তারা খুব ভালোভাবে সাহায্য করে। তারপর একটি নির্দিষ্ট দিনে ভাইভা দিতে হয়। বৃত্তি পাওয়ার ক্ষেত্রে এই ভাইভাটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। নিজের জীবনের লক্ষ্য, উদ্দেশ্যের পাশাপাশি বিষয় নির্বাচনের কারণ সাবলীলভাবে তুলে ধরতে পারলে বৃত্তি পাওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।

আরও পড়ুন

আমি এখানে রুশ ভাষায় পড়ছি। তবে অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি ভাষাতেও পড়ার সুযোগ আছে। আমার বিভাগে ৮০ জনের বেশি রুশ শিক্ষার্থীর মধ্যে একজন বিদেশি হিসেবে অভিজ্ঞতা বেশ ভালোই বলতে হয়। এখানে পড়ালেখা ও পরীক্ষার মূল্যায়ন পদ্ধতি অন্যান্য দেশের তুলনায় আলাদা আর কঠিন হলেও যে বিষয়টা আমাকে প্রতিনিয়ত উদ্বুদ্ধ করে, তা হলো এখানকার শিক্ষার্থীদের হার না মানা মনোভাব আর কঠোর পরিশ্রম। তৃতীয় বর্ষে ওঠার পর ক্যাম্পাসে তত্ত্বীয় পদার্থবিজ্ঞানের একটা সক্রিয় গবেষণাদলের সঙ্গে যুক্ত হয়েছি। খুবই বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশে আমরা পিএইচডি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তাঁদের গবেষণার বিষয় নিয়ে আলোচনা করি।

বৃত্তি নিয়ে নতুন দেশে নতুন ভাষায় পড়ালেখার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো বিভিন্ন মানুষের সঙ্গে পরিচিত হওয়া। নতুন পরিবেশ, নিয়মনীতির সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়া। এখানে শিক্ষাব্যবস্থা একটু আলাদা। সময় ব্যবস্থাপনার দিকে সব সময় খেয়াল রাখতে হয়। কেউ যদি শুরুতেই নেটওয়ার্কিংটা ভালো করতে পারে, তাহলে তাঁর জন্য অনেক কিছুই সহজ হয়ে যায়।

আরও পড়ুন