আঠারো বছর বয়সের নিচে সবাই শিশু। কিন্তু এই শিশু বিভিন্ন বয়সে নানা ধাপ পেরিয়ে পূর্ণ বয়সে এসে পৌঁছায়। বয়স অনুযায়ী শিশুর বৈশিষ্ট্যও একেক রকমের। বয়সের সঙ্গে বদলে যাওয়া আচরণ ও বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান থাকা দরকার প্রত্যেক মা-বাবার।
গর্ভস্থ শিশু: মায়ের গর্ভে যে এখনো রয়ে গেছে, সে-ও কিন্তু একজন ব্যক্তি। চিকিৎসাবিজ্ঞানে প্রথম ৮ সপ্তাহ পর্যন্ত তাকে বলা হয় এমব্রিও। তারপর থেকে ভূমিষ্ঠ হওয়া অবধি তার নাম ফিটাস। এই গর্ভস্থ শিশুরও কিন্তু আবেগ-অনুভূতি আছে। আছে বৃদ্ধি ও বিকাশের নানা ধাপ। এই পর্যায়গুলো সঠিক ও সমন্বিতভাবে হচ্ছে কি না, তা আলট্রাসনোগ্রাফির মাধ্যমে বোঝা যায়। তাই সম্পূর্ণ গর্ভকালে অন্তত তিনবার এই পরীক্ষা করে শিশুর বৃদ্ধি, বিকাশ, দৈহিক কোনো অসামঞ্জস্য ইত্যাদি দেখা হয়।
নবজাতক: ভূমিষ্ঠের ক্ষণ থেকে প্রথম ২৮ দিন সময় পর্যন্ত শিশুকে নবজাতক বলা হয়। একজন সুস্থ নবজাতকের লক্ষণ হলো সে ঘন ঘন মায়ের বুকের দুধ খায়, বেশি ঘুমায় এবং অনেকবার পায়খানা করে।
ইনফ্যান্ট: ১ মাস থেকে ১২ মাস বয়স পর্যন্ত শিশু ইনফ্যান্ট। এ সময়টাতে শিশু দ্রুত বাড়ে। ৪ মাস বয়সে জন্মের ওজনের দ্বিগুণ এবং ১২ মাস বয়সে জন্মের ওজনের তিন গুণ ওজন লাভ করে। জন্মকালীন দৈর্ঘ্য যদি ৫০ সেন্টিমিটার হয়, তবে তার সঙ্গে আরও ২৫ সেন্টিমিটার দৈর্ঘ্য সে অর্জন করে। ১২ মাসের দিকে দাঁড়াতে শেখে।
টোডলারস্ (১-৩ বছর): এ সময় শিশুরা দৌড়াতে শেখে, বাক্স্ফুটন হয়, টয়লেট ট্রেনিং পেয়ে যায় এবং নিজের পরিচয় জানাতে পারে।
প্রি স্কুল (৩-৬ বছর): ৪ বছর বয়সে শিশু দ্বিগুণ উচ্চতা লাভ করে, সূক্ষ্ম কাজে নৈপুণ্য দেখাতে পারে এবং দৌড়, লাফানো, আরোহণে সক্ষম হয়।
স্কুল বয়স (৬-১৫ বছর): সুযোগ দেওয়া হলে তারা নতুন কিছু উদ্ভাবন করতে পারে।
বয়ঃসন্ধিকাল (১০ থেকে ১৮ বছর): শৈশব পেরিয়ে বয়ঃপ্রাপ্তির সময়কালে মনোজগতে বিপুল পরিবর্তন ঘটে। প্রজননতন্ত্রের পরিপক্বতা হয়। এটা দ্রুত দৈহিক বৃদ্ধির বয়স। এ সময়ে শিশু তার পূর্ণ উচ্চতার ২০ শতাংশ প্রাপ্ত হয়।
বিভাগীয় প্রধান, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ