সিজারিয়ান সেকশনের কত দিন পর ব্যায়াম শুরু করা যায়?

অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সন্তানের জন্ম হলে ছয় সপ্তাহ পর থেকে হালকা ব্যায়াম শুরু করা যাবে।
ছবি : প্রথম আলো

সিজারিয়ান সেকশন, অর্থাৎ অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সন্তানের জন্ম হলে মায়েরা নিজেদের ফিটনেস নিয়ে বেশ দুশ্চিন্তায় থাকেন। বুঝতে পারেন না, ঠিক কোন সময় থেকে শরীরচর্চা শুরু করবেন। সাধারণত সিজারিয়ান সেকশনের ছয় সপ্তাহ পর থেকেই ব্যায়াম শুরু করা যায়। তবে এ সময় নির্দিষ্ট কিছু ব্যায়াম করা উচিত, যেগুলো প্রসবপরবর্তী সময়ে করার উপযোগী।

তাই চাইলেও কিন্তু সব ধরনের ব্যায়াম করার সুযোগ এ সময় নেই। ফিটনেস ফিরে পেতে হালকা ব্যায়াম দিয়ে শুরু করতে হবে। এ সময় হাঁটাহাঁটি বা খালি হাতের শরীরচর্চার মতো হালকা ব্যায়াম শুরু করা উচিত বলে জানান ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের স্ত্রীরোগ ও প্রসূতিবিদ্যা বিভাগের কনসালট্যান্ট লুবনা জাহান। ভারী ব্যায়াম, অর্থাৎ যেগুলো করলে পেটে টান পড়ে, সিজারিয়ান সেকশনের পর ছয় মাস সেসব ব্যায়াম থেকে বিরত থাকতে হবে। যোগব্যায়াম করতে চাইলেও এমন ব্যায়াম বেছে নিতে হবে, যাতে পেটে টান না পড়ে।

ধীরে ধীরে ব্যায়ামের মাত্রা বাড়াতে হবে।
ছবি : প্রথম আলো

দৌড়ঝাঁপ, দড়িলাফ, সাইক্লিং, পায়ের পেশির স্ট্রেচিং ও ওজন তোলা ভারী ব্যায়াম। ছয় মাস পেরোনোর পর এ ধরনের ব্যায়াম করতে পারবেন। তবে প্রথম কিছুদিন সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। গর্ভকালে এবং প্রসবপরবর্তী ছয় মাস মিলিয়ে বেশ লম্বা সময় চর্চা না করায় শরীর ভারী ব্যায়ামে অনভ্যস্ত হয়ে পড়ে। এমন অবস্থায় হুট করে ভারী ব্যায়াম শুরু করতে গেলে পেশিতে টান লাগার ঝুঁকি থাকে। তাই ভারী ব্যায়াম করতে চাইলেও অল্প অল্প করে শুরু করুন। ধীরে ধীরে ব্যায়ামের মাত্রা বাড়ান। তাহলে শরীর ব্যায়ামের ধকল সইতে পারবে সহজে।

এই ধরনের ব্যায়াম প্রসব পরবর্তী পিঠব্যথা দূর করে।
ছবি : প্রথম আলো

সিজারিয়ান সেকশনের পর জিমে যেতে হলে ছয় মাস পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। সেখানেও ব্যায়ামের মাত্রা বাড়াতে হবে ধীরে ধীরে। হুট করে অতিরিক্ত চাপ নেওয়া যাবে না।

চিকিৎসকের নির্দেশনা নিয়েই পোস্টপার্টাম এক্সারসাইজ বা প্রসবপরবর্তী ব্যায়াম শুরু করা ভালো। প্রসবের অন্তত তিন মাস পূর্ণ হওয়া পর্যন্ত হালকা ব্যায়াম করাই ভালো। এসব ব্যায়ামে ধীরে ধীরে পেটের গঠনে স্বাভাবিকতা ফিরে আসবে। ব্যায়ামের মাধ্যমে প্রসব–পরবর্তী পিঠব্যথাও প্রতিরোধ সম্ভব।

নিয়মিত শরীরচর্চা নতুন মাকে ভালো থাকতে সাহায্য করবে।
ছবি : প্রথম আলো

একজন মায়ের ভবিষ্যৎ জীবন স্বাভাবিক ও সুন্দর রাখার জন্য প্রসবপরবর্তী ব্যায়ামে তাঁকে উৎসাহ দেওয়া এবং সেগুলো নিয়মিতভাবে চর্চা করার সুযোগ করে দেওয়া তাঁর আপনজনদেরই দায়িত্ব।