করলার পাতা কি সত্যিই ডায়াবেটিসে উপকারী
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের সুবাদে নানান খাবার বা টোটকা জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। করলার পাতা তেমনই এক টোটকা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বিভিন্ন পোস্টে বলা হচ্ছে এর নানান উপকারিতার কথা, বিশেষত ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে নাকি এটি উপকারী। আদতে এই পাতা উপকারী কিংবা প্রয়োজনীয় কি না, তা নিয়ে রাফিয়া আলমকে জানালেন টাঙ্গাইলের কুমুদিনী সরকারি কলেজের গার্হস্থ্য অর্থনীতি বিভাগের প্রধান শম্পা শারমিন খান।
করলাপাতার পুষ্টিগুণ
করলার পাতায় অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট উপাদান আছে। আছে ফোলেট ও বিভিন্ন খনিজ উপাদান। আর আছে প্রচুর আঁশ। পুষ্টি উপাদান বিবেচনায় করলার পাতা ভালো।
কোষ্টকাঠিন্য এড়াতে, ত্বকের তারুণ্য ধরে রাখতে, হৃদ্রোগ ও ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমাতে এবং রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে করলার পাতা কাজে আসতে পারে।
তবে এসব উপকার পেতে করলার পাতাই কেন খেতে হবে, তা এক প্রশ্ন হয়ে দাঁড়াতে পারে।
করলার পাতা কি জরুরি
করলার পাতায় যেসব পুষ্টি উপাদান আছে, তার সবই আপনি পাবেন বিভিন্ন শাকসবজি থেকে। শাকসবজির সুস্বাদু নানান পদ খেতে পারেন রোজ। তাই এত সব উপকারিতা পেতে যে করলার পাতাই খেতে হবে, তা নয়।
এ ছাড়া অপ্রচলিত এই পাতার স্বাদ আপনার ভালো না-ও লাগতে পারে। বরং বিভিন্ন ধরনের মৌসুমি শাকসবজি খেতে সুস্বাদু, খুব সহজে পাবেন বিভিন্ন উপকার। এসব শাকসবজির তালিকায় করলা রাখুন, করলার পাতা রাখা জরুরি নয়।
মনে রাখবেন, সুস্থ থাকতে কখনোই কেবল একধরনের পুষ্টি উপাদানকে গুরুত্ব দিলে চলে না; বরং সামগ্রিক খাদ্যাভ্যাস ও শরীরচর্চার প্রতি যত্নশীল হতে হবে।
খেয়াল রাখুন
বিস্বাদ খাবার, যা গ্রহণে আপনি অভ্যস্ত নন, হুট করে তেমন কিছু খাওয়া শুরু করলে আপনার খাওয়ার রুচি কমে যেতে পারে। বমি ভাব কিংবা বমি হওয়াও বিচিত্র নয়।
লিভার বা কিডনির রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি, অন্তঃসত্ত্বা নারী এবং শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ান—এমন নারীর কখনোই এ ধরনের অপ্রচলিত খাবার গ্রহণ করা উচিত নয়।
অনেক অপ্রচলিত খাবারের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার বিষয়েই বিজ্ঞানীরা এখনো নিশ্চিত নন। তাই ঝুঁকি নেবেন না।
রক্তের কোলেস্টেরল ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। করলার পাতা কিংবা কোনো ভেষজ উপাদান খেলেই এসব সমস্যা নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে, এমন ভাবনা ঠিক নয়।
তিতকুটে স্বাদের খাবার খেলেই যে ডায়াবেটিস কমে, এমন ধারণারও ভিত্তি নেই।