আলঝেইমার কেন হয়, কীভাবে এই রোগ প্রতিরোধ করবেন
আলঝেইমার একধরনের স্নায়ুরোগ। এর কারণে ধীরে ধীরে আক্রান্ত ব্যক্তির স্মৃতি, চিন্তাশক্তি ও দৈনন্দিন কাজ করার স্বাভাবিক ক্ষমতা নষ্ট হয়ে যায়। যেসব কারণে ডিমেনশিয়া হয় অর্থাৎ স্মৃতিশক্তি কমে যায়, সেগুলোর মধ্যে আলঝেইমার অন্যতম। এ রোগ বয়স্ক মানুষদের মধ্যে বেশি দেখা যায়।
কারণ
আলঝেইমারের সঠিক কারণ এখনো পুরোপুরি জানা যায়নি। তবে এ রোগের পেছনে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ভূমিকা রাখে, যেমন—
মস্তিষ্কে অস্বাভাবিক প্রোটিন, যেমন অ্যামাইলয়েড প্ল্যাক ও টাউ ট্যাঙ্গল জমা হওয়া।
৬৫ বছর বয়সের পর সাধারণত এ রোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়।
পরিবারে কারও এই রোগ থাকলেও ঝুঁকি বাড়ে।
উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, উচ্চ মাত্রার কোলেস্টেরল ইত্যাদি দীর্ঘমেয়াদি সমস্যায় এ রোগের ঝুঁকি বাড়ে।
উপসর্গ
ধীরে ধীরে স্মৃতিশক্তি হ্রাস, নাম বা পরিচিত জায়গা ভুলে যাওয়া।
কথাবার্তায় অসংলগ্নতা
দৈনন্দিন কাজ করতে অক্ষমতা।
ব্যক্তিত্ব ও আচরণে পরিবর্তন।
চিকিৎসা
এখন পর্যন্ত আলঝেইমারের স্থায়ী চিকিৎসা নেই। তবে কিছু ওষুধ উপসর্গ কমাতে সাহায্য করে। এ রোগে আক্রান্ত মানুষের সঠিক যত্ন, মানসিক সমর্থন ও পারিবারিক সহযোগিতা খুব গুরুত্বপূর্ণ।
প্রতিরোধটাই গুরুত্বপূর্ণ
আলঝেইমার আক্রান্ত রোগীর জীবনযাপন খুব কষ্টকর হয়ে উঠতে পারে। তাই কম বয়স থেকেই এ ধরনের রোগ প্রতিরোধে সচেতনতা জরুরি। কীভাবে প্রতিরোধ করবেন?
নিয়মিত ব্যায়াম করা। শরীরচর্চার অভ্যাস মস্তিষ্ককে সতেজ রাখবে।
সুষম ও স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার অভ্যাস করা জরুরি। এ ক্ষেত্রে মেডিটারেনিয়ান ডায়েট উপকারী, যেখানে উদ্ভিজ্জ খাবারকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়।
পর্যাপ্ত ঘুম খুব জরুরি।ধূমপান ও অ্যালকোহল এড়ানো আবশ্যক।
মানসিকভাবে সক্রিয় থাকা। বই পড়া, খেলাধুলা, নতুন কিছু শেখার চেষ্টা করা উচিত সব বয়সেই।
রক্তচাপ, ডায়াবেটিস ও রক্তের খারাপ চর্বি নিয়ন্ত্রণে রাখা।
আলঝেইমার দিবস
আলঝেইমার দিবস প্রতিবছর ২১ সেপ্টেম্বর পালন করা হয়। আলঝেইমার এবং অন্যান্য কারণে ডিমেনশিয়া সম্পর্কে জনসচেতনতা বাড়ানো, আক্রান্ত ও তাঁদের যত্নকারীদের প্রতি সহানুভূতি ও সমর্থন প্রকাশ করা এবং রোগের উপসর্গ, প্রতিরোধ, ইত্যাদি বিষয়ে তথ্য দেওয়ার জন্যই এই দিবসের আয়োজন। আন্তর্জাতিকভাবে আলঝেইমারস ডিজিজ ইন্টারন্যাশনাল দিবসটির অন্যতম বড় আয়োজক। এ ছাড়া বিভিন্ন দেশে এই দিনে স্মরণসভা, আলোচনা সভা, র্যালি, সংবাদ প্রচার এবং অন্যান্য কার্যক্রম করা হয়। বাংলাদেশেও আলঝেইমার দিবস পালন করা হয়।
আলঝেইমার শুধু রোগীর নয়, পরিবার ও সমাজের জন্যও বড় চ্যালেঞ্জ। সময়মতো শনাক্ত, চিকিৎসা ও সঠিক যত্ন রোগীকে দীর্ঘ সময় ভালোভাবে বাঁচতে সাহায্য করতে পারে।