চাকরির আবেদনের ক্ষেত্রে জনপ্রিয় হচ্ছে ‘ইউরোপাস সিভি’, কীভাবে তৈরি করবেন

ওয়েবসাইটে অনলাইন ‘টেমপ্লেট সিস্টেম’ রয়েছে, যা কাজে লাগিয়ে আপনি সহজেই নিজের সিভি তৈরি করে নিতে পারেনছবি: পেক্সেলস

হোক চাকরি বা বিদেশে উচ্চশিক্ষার আবেদন—একটি মানসম্পন্ন সিভি আপনাকে অনেকখানি এগিয়ে দেবে। অনেক সময় শিক্ষার্থীরা জানেন না, সিভি তৈরির কোন ফরম্যাটটি গ্রহণযোগ্য বা আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন কোনো ফরম্যাট (ধরন) আছে কি না। এমন বিভ্রান্তির সময় ইউরোপাস সিভি ফরম্যাট ব্যবহার করা যেতে পারে। নিজের যোগ্যতা তুলে ধরার এই ধরন এখন বাংলাদেশে তো বটেই, সারা বিশ্বেই বেশ প্রচলিত। অনেক সময় চাকরির ক্ষেত্রে নিয়োগদাতারা উল্লেখও করে দেন—সিভিটি ‘ইউরোপাস’ ফরম্যাটে তৈরি হতে হবে।

কেন ব্যবহার করবেন

ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশের নাগরিকদের দক্ষতা বিকাশের জন্য ইউরোপাস ওয়েবসাইট কাজ করছে। এই ওয়েবসাইট থেকেই সাধারণ সিভি ফরম্যাট ব্যবহার করে আকর্ষণীয় ও কার্যকর সিভি তৈরি করা যায়। ওয়েবসাইটে অনলাইন ‘টেমপ্লেট সিস্টেম’ রয়েছে, যা কাজে লাগিয়ে আপনি সহজেই নিজের সিভি তৈরি করে নিতে পারেন। ব্যবহারকারীদের জন্য পূর্বনির্ধারিত ঘর ও ফরম থাকায় আলাদা করে ডিজাইন নিয়ে চিন্তা করতে হয় না। প্রতিটি তথ্য সংযোজনের সময় ওয়েবসাইট প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেয়। কী ধরনের তথ্য দিতে হবে বা কীভাবে তা লিখতে হবে—এসব বিষয়ও উল্লেখ থাকে। সিভি তৈরি হয়ে যাওয়ার পর তা পিডিএফ হিসেবে ডাউনলোড করা যায়। আর এই পুরো কাজটিই করা যায় বিনা মূল্যে।

আরও পড়ুন

আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সিভি ফরম্যাট হওয়ায় ইউরোপের অধিকাংশ নিয়োগদাতা ও বিশ্ববিদ্যালয় ইউরোপাস সিভি গ্রহণ করে। সিভির লেআউট পেশাদারভাবে তৈরি হয় বলে যেকোনো কাজে ব্যবহার করা যায়। ইউরোপাস সিভি একবার তৈরি করার পর সেটি সহজেই সম্পাদনা ও হালনাগাদ করা যায়।

সিভি তৈরির ধাপ

১. প্রথমে ইউরোপাস ওয়েবসাইটে প্রবেশ করুন। নাম ও ই–মেইল দিয়ে নিবন্ধন করার পর সিভি তৈরি করতে পারবেন। তবে শুরুতে নিজের প্রোফাইল তৈরি করতে হবে।

২. যেসব ব্যক্তিগত তথ্য প্রয়োজন হবে, তা যুক্ত করুন। যেমন নাম, ই–মেইল, ফোন নম্বর, ঠিকানা (ঐচ্ছিক), লিংকডইন প্রোফাইলের লিংক, ইত্যাদি।

৩. ড্যাশবোর্ড থেকে সিভি তৈরির অপশনে ক্লিক করতে হবে। কোন উদ্দেশ্য সিভি তৈরি করছেন, লিখতে হবে। কোন চাকরির জন্য আবেদন করছেন, আপনার পেশাগত লক্ষ্য কী, তা-ও সংক্ষিপ্তভাবে লিখতে হবে।

আরও পড়ুন

৪. এরপরে কাজের অভিজ্ঞতার বিস্তারিত তথ্য দিন। এই অংশে আপনার পূর্ববর্তী চাকরি বা অভিজ্ঞতার বিস্তারিত লিখুন। প্রতিষ্ঠান বা সংস্থার নাম, চাকরির সময়কাল, দায়িত্ব ও অর্জন, ইত্যাদির পাশাপাশি যদি ইন্টার্নশিপ করে থাকেন, সেটিও যুক্ত করুন।

৫. শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের তথ্য আরেকটি মেন্যুতে যুক্ত করুন। বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম, বিষয় ও ডিগ্রি, সময়কাল ও ফলাফল সময়ক্রম অনুসারে লিখুন।

৬. ব্যক্তিগত দক্ষতার সব তথ্য উল্লেখ করুন। মাতৃভাষা ছাড়া অন্য কোনো ভাষায় যদি দক্ষতা থাকে, সেটিও উল্লেখ করতে হবে। ডিজিটাল দক্ষতা হিসেবে মাইক্রোসফট অফিস, ক্যানভা, ফটোশপ, ইত্যাদি উল্লেখ করতে পারেন। পরের মেন্যুতে সফট স্কিল হিসেবে টিমওয়ার্ক, নেতৃত্ব, সমস্যা সমাধান, সময় ব্যবস্থাপনাসহ নানা কিছু যোগ করতে পারেন।

৭. অতিরিক্ত তথ্য হিসেবে কোনো সনদপত্র বা প্রশিক্ষণ, সম্মাননা বা পুরস্কার, প্রকাশনা থাকলে লিখুন।

৮. সংযুক্তি হিসেবে রেফারেন্স, প্রশংসাপত্র, ইত্যাদি দেওয়া যেতে পারে।

৯. সবশেষে প্রিভিউ ও ডাউনলোড অপশন আসবে। সব তথ্য পূরণের পর Preview অপশনে ক্লিক করে সিভিটি কেমন হচ্ছে, দেখে নিন। Download as PDF অপশনে ক্লিক করে ফাইলটি সংরক্ষণ করুন। প্রয়োজন বুঝে বিভিন্ন চাকরির ধরন অনুযায়ী বিস্তারিত তথ্য পরিবর্তন করতে পারেন। এখান থেকে সিভি অনলাইনে শেয়ার করা যায়, তাই ই–মেইল না করে প্রয়োজনে ওয়েবসাইট লিংক দিয়েও সিভি পাঠাতে পারেন।

আরও পড়ুন