জলবসন্তের রোগী কী খাবেন, কী খাবেন না

বসন্ত ঋতুতে জলবসন্তসহ নানা রোগের প্রকোপ দেখা দেয়। এই রোগ প্রাণঘাতী রোগ না হলেও যথাযথ পুষ্টিকর খাবার না খেলে শরীর দুর্বল হয়ে পড়তে পারে। অনেকে কুসংস্কারের বসে জলবসন্তের রোগীকে প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার খেতে নিষেধ করেন, যা রোগীর শরীর আরও দুর্বল করে দেয়। জেনে নিন এ সময় কী খাওয়া যাবে আর কী খাওয়া যাবে না—

জলবসন্তের রোগীকে অনেক পুষ্টিকর খাবার দেওয়া প্রয়োজনছবি: পেক্সেলস

যা খাবেন

যেসব খাবার খাওয়া যাবে না, তার তালিকা জানার আগে জেনে নেওয়া যাক কী খাবেন। কম স্নেহযুক্ত আইসক্রিম, মিল্ক শেক, ঠান্ডা দই, মাছ, মাংস, ডিম, দুধ, স্যুপ, ফলের রস, ডালের পানি ইত্যাদি বেশি করে খেতে দিতে হবে রোগীকে। এ ছাড়া রোগীকে দিনে কমপক্ষে আট গ্লাস পানি খাওয়াবেন। মোটকথা এ সময় রোগীকে অনেক পুষ্টিকর খাবার দেওয়া প্রয়োজন। তবে খাবারের কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। মাছ, মাংস, দুধ, ডিম, সবজি—সবকিছুই খাওয়া যাবে। তবে কিছু নিয়ম মেনে চলা জরুরি।

জলবসন্তে আক্রান্ত রোগীর শরীরে প্রদাহ ও ব্যথা থাকে। অনেক সময় মুখে ও মুখগহ্বরে ক্ষত থাকতে পারে। এ কারণে খাবার হতে হবে সহজপাচ্য, কম মসলা ও লবণযুক্ত। খেয়াল রাখতে হবে খাবারে যেন বেশি পরিমাণ ভিটামিন, খনিজ পদার্থ ও ক্যালরি থাকে। একবারে রোগী বেশি খেতে পারবে না বলে বারবার খাওয়াতে হবে। এ ছাড়া অনেকে আক্রান্ত শিশুদের বুকের দুধ খাওয়ানো বন্ধ রাখেন, যা ঠিক নয়। শিশুকে অবশ্যই বুকের দুধ খাওয়াতে হবে।

যা খাওয়া যাবে না

চর্বিযুক্ত খাবার: চর্বিযুক্ত খাবার বিশেষ করে নারকেল, মাখন, চকলেট, বাদাম ও পনির শরীরের প্রদাহ বাড়ায়। এসব খাবারে খুব বেশি পরিমাণে সম্পৃক্ত চর্বি থাকে। এ ধরনের চর্বি জলবসন্তের গুটির জ্বালাপোড়া বাড়িয়ে দিতে পারে।

অতিরিক্ত মসলাদার খাবার: অতিরিক্ত ঝাল ও মসলাযুক্ত খাবার জলবসন্তের রোগীদের দেওয়া উচিত নয়। রোগীর মুখের ভেতরে ঘা থাকে বলে এ সময় এ ধরনের খাবার বাদ দেওয়া উচিত।

অতিরিক্ত লবণ: অতিরিক্ত লবণ শরীরের জন্য সব সময়ই ক্ষতিকর। জলবসন্তের সময় এ ধরনের খাবার মুখের ক্ষত বাড়িয়ে দেয়।

অরগিনিনসমৃদ্ধ খাবার: চীনাবাদাম, আখরোট, পিনাট বাটার, চকলেট, বীজ ও কিশমিশে প্রচুর পরিমাণ অরগিনিন নামক অ্যামিনো অ্যাসিড থাকে। অরগিনিন শরীরের উপকারী অ্যামিনো অ্যাসিড হলেও এই উপাদান জলবসন্তের জীবাণুর বংশ বিস্তার ঘটায়।

লেবু–জাতীয় ফল: জলবসন্তে আক্রান্ত শিশুকে ফলের রস দেওয়া যেতে পারে। ফলের রস দ্রুত পানি ও খনিজ উপাদানের ঘাটতি পূরণ করে। তবে লেবু–জাতীয় ফলের রস শিশুকে না খাওয়ানোই ভালো। কারণ, উচ্চমাত্রায় সাইট্রিক অ্যাসিডের কারণে লেবুর রস মুখের ভেতরে গেলে ক্ষতস্থানে ব্যথা ও জ্বালাপোড়া হয়।