শীতকালের চর্মরোগ থেকে মুক্তির উপায়

শীত আসন্ন। শীতের শুষ্ক ও রুক্ষ আবহাওয়ায় অনেকেই ত্বকের বিভিন্ন সমস্যায় ভোগেন। আবার কিছু কিছু ত্বকের সমস্যা শীতের সময় তীব্র হয়ে ওঠে।

শীতের শুষ্ক ও রুক্ষ আবহাওয়ায় অনেকেই ত্বকের সমস্যায় ভোগেনমডেল: হৃদি। ছবি: সুমন ইউসুফ

ত্বক বা চামড়া মানবদেহের সর্ববৃহৎ অঙ্গ। তাই এর সমস্যা ও রোগও বেশি। ঋতু পরিবর্তনের চক্রে শীতকালেও ত্বকের কিছু সমস্যা ও রোগ দেখা যায়। এগুলো থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার উপায় জানা থাকলে রোগ থেকে সুরক্ষাও মেলে।

শীতকালে ত্বকে কী ধরনের সমস্যা হয়

  • ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়।

  • কোনো কারণ ছাড়াই চুলকানো।

  • ঠোঁট ও পা বেশি শুষ্ক হয়ে ফেটে যাওয়া এবং ফাটা চিড় দিয়ে সংক্রমণ।

  • মাথার ত্বকে খুশকি।

  • কিছু চর্মরোগ বেশি মাত্রায় দেখা দেওয়া, যেমন স্ক্যাবিস, অ্যালার্জি, একজিমা ইত্যাদি।

  • পুরোনো জামাকাপড়, উলের পোশাক, বিভিন্ন ক্রিম, লোশন ইত্যাদি ব্যবহারে চুলকানি ও ত্বকের প্রদাহ হতে পারে।

এ ছাড়া বিভিন্ন ক্রনিক ডিজিজ, ডায়াবেটিস, কিডনি, থাইরয়েডের রোগে বেশি মাত্রায় ত্বকের শুষ্কতা ও চুলকানি হয়।

আরও পড়ুন
সাধারণ কিছু নিয়মকানুন মেনে চললে শীতে ত্বকের সুরক্ষা দেওয়া সম্ভব
ছবি: প্রথম আলো

পরিত্রাণের উপায়

সাধারণ কিছু নিয়মকানুন মেনে চললে শীতে ত্বকের সুরক্ষা দেওয়া সম্ভব। বিশেষ করে যাঁরা বিভিন্ন অ্যালার্জি এবং ক্রনিক ডিজিজ, যেমন ডায়াবেটিস, ক্রনিক কিডনি ডিজিজ, থাইরয়েডের রোগে ভুগছেন, তাঁদের সতর্ক থাকতে হবে, ত্বকের যত্ন নিতে হবে।

  • অতিরিক্ত ঠান্ডা বাতাসে প্রয়োজন ছাড়া বের না হওয়া, বের হলেও ত্বক ঢেকে রাখা।

  • ত্বক আর্দ্র রাখতে বেশি বেশি পানি ও তরল খাবার খাওয়া।

  • বারবার ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা।

  • অলিভ অয়েল, নারকেল তেল, ভেসলিন, গ্লিসারিন ইত্যাদি ব্যবহার করা।

  • পুরোনো ও উলেন কাপড় ব্যবহারের আগে ধুয়ে নিন। যাঁদের উলেন কাপড়ে অ্যালার্জি আছে, তাঁরা এর ভেতরে সুতির কাপড় পরতে পারেন।

  • খুশকির জন্য কিটোকোনাজল, জিংক পাইরিথিওন ও সাইক্লোপিরক্সযুক্ত শ্যাম্পু সপ্তাহে ২ থেকে ৩ দিন ব্যবহার করতে পারেন।

  • অন্য কারও সঙ্গে নিজের কাপড়চোপড়, চাদর, গামছা, তোয়ালে, লেপ, কম্বল ইত্যাদি শেয়ার না করা।

  • স্ক্যাবিস বা সংক্রামক চর্মরোগ হলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শমতো পরিবারের সব সদস্যের চিকিৎসা নেওয়া উচিত।

  • ঠোঁট ও পায়ের চামড়া শুষ্ক হয়ে গেলে পেট্রোলিয়াম জেলি লাগানো যায়। পা ফাটা রোধে সুতি মোজা পরা ভালো। ঠোঁট বা পায়ের চামড়া খুঁটিয়ে ওঠাবেন না। ফাটা স্থানে ব্যথা ও সংক্রমণ হলে, বিশেষ করে ডায়াবেটিস ও কিডনির রোগীরা দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন।

সাধারণ নিয়মকানুন মানার পরও যাঁদের ত্বকের সমস্যা যাচ্ছে না, তাঁরা চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেবেন। l

ডা. মো. মোশাররফ হোসেন, চর্ম ও যৌনরোগ বিশেষজ্ঞ, সিনিয়র কনসালট্যান্ট, ঢাকা মেডিকেল কলেজ

আরও পড়ুন