জিমে না গিয়েও তাঁরা কীভাবে পৃথিবীর সবচেয়ে স্বাস্থ্যবান মানুষ
সুস্থ থাকার জন্য আপনি হয়তো নিয়মিত জিমে যান। তবে হয়তো জেনে অবাক হবেন, পৃথিবীর সবচেয়ে স্বাস্থ্যবান মানুষেরা আদতে জিমেই যান না! তাহলে কীভাবে সুস্থ থাকেন তাঁরা?
পৃথিবীর যে অঞ্চলের মানুষের দীর্ঘমেয়াদি রোগবালাই কম হয় এবং যাঁদের গড় আয়ু অন্যান্য অঞ্চলের মানুষের চেয়ে বেশি, সেসব অঞ্চলকে বলা হয় ব্লু জোন। জাপান, ইতালি, গ্রিস, কোস্টারিকা ও যুক্তরাষ্ট্র—এসব দেশের কিছু অংশ পড়ছে এই ব্লু জোনে। বুঝতেই পারছেন, সেখানে সুস্থ অবস্থাতেই বার্ধক্যে পৌঁছান অধিকাংশ মানুষ। আর ৯০ পেরোনো মানুষের সংখ্যাও সেখানে অনেক বেশি। তবে এই সুস্থতার জন্য তাঁরা নির্দিষ্ট সময়ের জন্য জিমে গিয়ে ঘাম ঝরান না; বরং তাঁদের গোটা জীবনধারাই স্বাস্থ্যকর।
শরীরচর্চা জীবনেরই অংশ
এসব এলাকার মানুষ কর্মমুখর জীবনযাপন করেন। হাঁটাচলা, বাগান করা কিংবা ঘরের কাজ করার মাধ্যমেই তাঁদের কায়িক শ্রম হতে থাকে দিনভর। এক গবেষণার ফলাফল বলছে, যিনি যত বেশি দূরত্ব হাঁটেন কিংবা যত বেশি সিঁড়ি ভেঙে ওঠেন, তাঁর আয়ু তত বেশি হয়। দিনভর বসে কাজ করার চেয়ে হাঁটাচলা এবং অন্যান্য কায়িক শ্রম যে শরীরের জন্য বেশি প্রয়োজন, তা নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন এ থেকে।
ইতালির ব্লু জোনের মানুষদের নিয়ে করা এক গবেষণায় দেখা গেছে, যাঁরা খামারে প্রাণী লালনপালনের কাজ করেন, খাড়া পাহাড়ি ঢালে বসবাস করেন কিংবা অনেকটা পথ হেঁটে কাজে যান, তাঁরা বেশিদিন বাঁচেন। অন্যান্য গবেষণার ফলাফল থেকে জানা যায়, কায়িক শ্রম করলে ক্যানসার কিংবা হৃদ্রোগের মতো মারাত্মক রোগের ঝুঁকি কমে।
স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস
অতিরিক্ত ক্যালরি গ্রহণ থেকে সচেতনভাবেই নিজেদের বিরত রাখেন এসব এলাকার বহু মানুষ। ধীরে–সুস্থে মনোযোগ দিয়ে খাবার খান তাঁরা। মোটামুটিভাবে পাকস্থলীর ১০ ভাগের ৮ ভাগ পূর্ণ করেন, এর বেশি নয়। তাঁদের খাবারের ৯৫ শতাংশই আসে উদ্ভিজ্জ উৎস থেকে। মাছ-মাংস খান তুলনামূলক কম। মাংস খান কালেভদ্রে। লাল মাংস এবং প্রক্রিয়াজাত মাংস এড়িয়ে চলেন তাঁরা। গোটা শস্য (হোল গ্রেন), নানান ধরনের সবজি, বীজ, ডাল ও বাদাম খান নিয়মিত।
জীবনধারার অন্যান্য দিক
এসব এলাকার মানুষ পর্যাপ্ত ঘুমান। তবে সেটি ঠিক ঘড়ি ধরে ঘুম নয়। শরীরের প্রয়োজন বুঝেই ঘুমান তাঁরা।
তাঁরা জীবনে নির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে বাঁচেন। ফলে মানসিক দিক থেকেও সুস্থ থাকেন।
বয়োজ্যেষ্ঠ ও খুদে সদস্যরা একই সঙ্গে বসবাস করেন সেখানে। জীবনে থাকে আনন্দ।
সূত্র: হেলথলাইন