দেশেই সম্ভব গ্লুকোমার আধুনিক চিকিৎসা, বিস্তারিত জানুন
গ্লুকোমা এমন একটি রোগ, যা চোখের অভ্যন্তরীণ চাপ বাড়িয়ে ধীরে ধীরে অপটিক নার্ভ নষ্ট করে। এর ফলে চিরতরে দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ফেলার ঝুঁকি তৈরি হয়। অনেক সময় ওষুধ, লেজার বা অস্ত্রোপচার করেও যখন চোখের চাপ নিয়ন্ত্রণে আসে না, তখন রোগীরা তীব্র ব্যথায় ভোগেন। এ ধরনের ‘পেইনফুল রিফ্র্যাকটরি গ্লুকোমা’ বা মাঝারি থেকে গুরুতর গ্লুকোমার চিকিৎসা দীর্ঘদিন ধরেই ছিল অত্যন্ত ব্যয়বহুল ও জটিল। কিন্তু বর্তমানে দেশে অত্যাধুনিক ডায়োড লেজার সাইক্লোফোটোকোঅ্যাগুলেশন পদ্ধতি সাশ্রয়ী মূল্যে চালু হয়েছে, যা সাধারণ মানুষের নাগালে এনে দিল গ্লুকোমা চিকিৎসার নতুন দিগন্ত।
ডায়োড লেজার সাইক্লোফোটোকোঅ্যাগুলেশন কী
এটি একটি আধুনিক, নিরাপদ ও স্বল্প সময়ের লেজার চিকিৎসা। এ পদ্ধতিতে চোখের সিলিয়ারি বডির ওপর লেজারের মাইক্রোপালস প্রয়োগ করে অতিরিক্ত তরল উৎপাদন বন্ধ করা হয়। ফলে চোখের ভেতরের চাপ কমে, ব্যথা উপশম হয় ও চোখের কার্যকারিতা বজায় থাকে।
এর সুবিধা
কাটাছেঁড়ার দরকার পড়ে না।
১০-১৫ মিনিটের বেশি সময় লাগে না।
রোগী দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠেন।
ব্যথাহীন ও নিরাপদ একটি পদ্ধতি।
দরকার পড়লে আবার করা যায়।
কারা এই চিকিৎসা নিতে পারবেন
মাঝারি থেকে গুরুতর গ্লুকোমা রোগী।
দীর্ঘদিন ওষুধ বা ড্রপ ব্যবহার করেও যাঁদের চোখের চাপ কমছে না।
যাঁদের আগে একাধিক অস্ত্রোপচার ব্যর্থ হয়েছে।
যাঁরা তীব্র চোখের ব্যথায় ভুগছেন।
যাঁদের দৃষ্টিশক্তি অনেকটাই কমে গেছে, কিন্তু ব্যথা দূর করা জরুরি।
সতর্কতা
গ্লুকোমা নীরবে দৃষ্টিশক্তি কেড়ে নেয়। গ্লুকোমা হলে সাধারণ চোখের সমস্যা ভেবে বসে থাকবেন না। যদি চোখে চাপ, ব্যথা, ঝাপসা দেখা, আলোতে কষ্ট হয় বা পরিবারের কারও গ্লুকোমার ইতিহাস থাকে, তাহলে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
অধ্যাপক ডা. ইফতেখার মো. মুনির, গ্লুকোমা বিশেষজ্ঞ, বাংলাদেশ আই হসপিটাল, মালিবাগ, ঢাকা