কোলন ক্যানসারের সতর্কসংকেত

কারও সারা বছর কোষ্ঠকাঠিন্য লেগে থাকে। কারও আবার রোজ সকালে বাথরুম ভালো হওয়া চিরকালের অভ্যাস। কারও দিনে দু–তিনবার মলত্যাগ করা স্বাভাবিক। প্রত্যেক মানুষেরই নিজস্ব নির্দিষ্ট মলত্যাগের অভ্যাস থাকে। হঠাৎ করে এই অভ্যাসের আমূল পরিবর্তনকে চিকিৎসকেরা একটি গুরুত্বপূর্ণ সতর্কসংকেত হিসেবে দেখেন। কেননা বিশ্বজুড়ে কোলন ক্যানসারের প্রকোপ বাড়ছে। সাধারণত পঞ্চাশোর্ধ্ব ব্যক্তিরা এ রোগের শিকার। তরুণদের মধ্যেও হার কম নয়। এই পরিবর্তন হতে পারে—

• দিনে কয়েকবার মল ত্যাগ করা কিংবা দু–চার দিন পরপর করা।

• মলের আকার ফিতা বা পেনসিলের মতো সরু হয়ে যাওয়া।

• মলের রং গাঢ় লাল, খয়েরি বা কালো হওয়া।

• পায়খানার বেগ হওয়ার অনুভূতি সব সময় হতে থাকা, যেন পায়খানা জমে আছে।

• কিছুদিন খুব কোষ্ঠকাঠিন্য, আবার কিছুদিন পাতলা পায়খানা। কোষ্ঠকাঠিন্য যখন কিছুতেই সারছে না।

• একটানা কিছুদিন দুর্গন্ধযুক্ত পাতলা পায়খানা।

• পায়ুপথে রক্তক্ষরণ।

• তলপেটে কামড়ানো ব্যথা

• পেট ফুলে ওঠা বা ভারী বোধ হওয়া

• অরুচি, বমি ভাব, বমি হওয়া, ওজন হ্রাস, দুর্বলতা, রক্তশূন্যতা, জ্বর জ্বর ভাব ইত্যাদি

কোলন ক্যানসারের ঝুঁকিগুলো কী?

• বয়স পঞ্চাশের বেশি। ডায়াবেটিস থাকা। পরিবারে কোলন ও রেক্টাল ক্যানসারের ইতিহাস। এ ছাড়া অন্যান্য ক্যানসারের ইতিহাস যেমন ডিম্বাশয়ের ক্যানসার, জরায়ু ক্যানসার, স্তন ক্যানসার ইত্যাদি।

• পরিপাক নালির প্রদাহজনিত রোগ, যেমন আলসারেটিভ কোলাইটিস, ক্রন ডিজিজ।

• অতিমাত্রায় চর্বিজাতীয় খাবার, গরু, খাসির মাংস খাওয়ার অভ্যাস এবং আঁশজাতীয় খাবার যেমন শাকসবজি, তরকারি, ফল ইত্যাদি কম খাওয়া, ধূমপান, অলস জীবনযাপন ও মুটিয়ে যাওয়া।

প্রতিরোধ:

• কোলন ক্যানসারে ঝুঁকিগুলো সম্পর্কে সজাগ থাকুন। খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনুন। প্রতিদিন ৩০ মিনিট করে সপ্তাহে পাঁচ দিন ব্যায়াম করুন। ওজন স্বাভাবিক রাখুন।

• কোলন ও রেক্টামে কোনো পলিপ থাকলে তা দ্রুত অপসারণ করুন।

• বছরে একবার মলে রক্ত শনাক্ত করার পরীক্ষা করুন।

• পাঁচ বছরে একবার সিগমোয়ডস্কোপি ও দশ বছরে একবার কলোনোস্কোপি পরীক্ষা করা উচিত।

মেডিকেল অনকোলজিস্ট, সাবেক বিভাগীয় প্রধান, জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, ঢাকা

 আগামীকাল পড়ুন: সমস্যা যখন মেছতা

প্রশ্ন-উত্তর

প্রশ্ন: বয়স ২১ বছর। বেশির ভাগ সময় আমার মাথায় ব্যথা, চাপ বোধ হয়। এর জন্য আমি কী করতে পারি?

উত্তর: সম্ভবত আপনার মাথাব্যথাটি মানসিক চাপজনিত, যাকে টেনশন হেডেক বলা হয়। রিলাক্স থাকুন, অতিরিক্ত উদ্বেগ করবেন না। সুশৃঙ্খল জীবন যাপন করুন। স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস ও নিয়মিত ব্যায়াম চাপ কমাবে। যোগব্যায়াম করতে পারেন। তাতেও না কমলে একজন নিউরোলজি বা সাইকিয়াট্রি বিশেষজ্ঞ দেখাতে পারেন।

ডা. আফম হেলালউদ্দিন, মেডিসিন বিশেষজ্ঞ

আমাদের দৈনন্দিন জীবনে রয়েছে নানা স্বাস্থ্য সমস্যা। অনেক সময় ঘরে বসে কিংবা জীবনধারা পরিবর্তনের মাধ্যমে এসব সমস্যার সমাধান সম্ভব। আপনার সমস্যা নিয়ে প্রশ্ন পাঠান। উত্তর দেবেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা। বয়স লিখতে ভুলবেন না।

ই–মেইলে স্বাস্থ্য সমস্যা নিয়ে প্রশ্ন পাঠান: [email protected]