আপনার বাড়ির অন্দরে কি আছে ডোপামিন ডেকোর
আমরা যখন আনন্দে থাকি, তখন আমাদের দেহে বাড়ে ডোপামিনের নিঃসরণ। সহজভাবে বলা যায়, ডোপামিন হলো সুখের হরমোন। যে ধরনের অন্দরসজ্জায় আপনি আনন্দ বোধ করেন, সেটিই ডোপামিন ডেকোর। এ ধরনের অন্দরসজ্জায় আপনি প্রফুল্ল ও প্রাণবন্ত বোধ করবেন।
মজার ব্যাপার হলো, ডোপামিন ডেকোরকে আপনি কোনো নির্দিষ্ট সূত্রে ফেলতে পারবেন না। কারণ, কোনো ব্যক্তি ঠিক কিসে আনন্দ বোধ করবেন, তা তো আর নির্দিষ্ট করে বলা যায় না। একই পরিবারের একাধিক সদস্যের পছন্দেও তো ভিন্নতা থাকে। তাই ঘরের কোনো একটা অংশে কোনো একজন সদস্যের জন্য ডোপামিন ডেকোর করতে হলে তাঁর নিজস্ব পছন্দের কথাই ভাবতে হবে। পছন্দের সেই জায়গায় তিনি ধোঁয়া ওঠা এক কাপ চা হাতে অবসর কাটাতে পারেন, বই পড়তে পারেন, টেলিভিশন দেখতে পারেন, এমনকি উদ্দীপনার সঙ্গে আগামী দিনের প্রস্তুতিও নিতে পারেন। ডোপামিন ডেকোর প্রসঙ্গে এমনটাই বলছিলেন সৃষ্টি আর্কিটেকচার অ্যান্ড কনসালট্যান্সির প্রতিষ্ঠাতা স্থপতি তাসনিম তূর্যি।
যেমন রং ও বিন্যাস চাই
প্রচলিত অর্থে ডোপামিন ডেকোর মানেই উজ্জ্বল, প্রাণবন্ত রঙের ব্যবহার। হলুদ, কমলা, ম্যান্ডারিন, লাল, সবুজ, টিয়া, গাঢ় নীলের মতো রঙের প্রকট শেডগুলো থেকে বেছে নেওয়া হয় ডোপামিন ডেকোরের রং। এ রকম একটা রং ঘরের একটা দেয়ালে করে নেওয়া যায় কিংবা একাধিক হালকা, উজ্জ্বল রঙের সমন্বয়ও কাজে লাগানো যায়। এই যেমন গোলাপি, হলুদ আর নীলের হালকা শেড যদি একটা দেয়ালে শৈল্পিকভাবে ব্যবহার করা হয়, দারুণ দেখায়। নীল আর কমলা কিংবা ধূসর আর হলুদের সমন্বয়েও ধরা দিতে পারে আনন্দের অনুভব। অন্দরে বিভিন্ন জ্যামিতিক আকৃতি, গড়ন বা প্যাটার্নও ব্যবহৃত হতে পারে।
প্রিয় অনুষঙ্গ
প্রিয় কোনো একটা আসবাবও হতে পারে আনন্দের উৎস। এই যেমন একখানা আরামকেদারা কিংবা দোলনা। পছন্দের একটা আসবাব হতে পারে উজ্জ্বল কোনো রঙের কিংবা সাদামাটা রঙের আসবাবে থাকতে পারে রঙিন একখানা অনুষঙ্গ। কুশনের কভার, কাঁথা, কমফোর্টার কিংবা থ্রোস—যেকোনো কিছুই হতে পারে উজ্জ্বল রঙের। হালকা রঙের পর্দার সারিতে একটি বা দুটি পর্দা হতে পারে গাঢ় রঙের। ভিন্টেজ, অর্থাৎ পুরোনো দিনের কিংবা ক্ল্যাসিক্যাল, অর্থাৎ ধ্রুপদি ঘরানার অনুষঙ্গ পছন্দ হলে সেটিও রাখতে পারেন ঘরে। এই যেমন গ্রামোফোন কিংবা পুরোনো দিনের ফোন। দেয়ালে উজ্জ্বল ফ্রেম, টেবিলে উজ্জ্বল রঙের মোম—এমন নানা অনুষঙ্গই আপনার মন ভালো রাখার সহায়ক হতে পারে।
সজীবতায়, উজ্জ্বলতায়
সবুজের সজীবতায় মন হয় প্রফুল্ল। ঘরের একটা অংশে অন্দরের উপযোগী গাছ রাখতে পারেন কাঠের বা কংক্রিটের টবে। এই যেমন মনস্টেরা, মানিপ্ল্যান্ট, স্নেকপ্ল্যান্ট, ড্রাসিনা, ক্যাকটাস অন্দরে ভালো থাকে। অন্দরে উজ্জ্বল আভার উষ্ণ আলো ব্যবহারেও আসতে পারে সতেজ, আনন্দময় অনুভব।