কম দামে ব্র্যান্ডের মতো আসবাব বানাতে চাইলে যেখানে যেতে পারেন

বাজেটের মধ্যেই আপনি আপনার পছন্দের আসবাব এখান থেকে তৈরি করতে পারবেন
ছবি: সাবিনা ইয়াসমিন

বছরখানেক আগের কথা, লালমাটিয়ার জেনেটিক প্লাজার পেছনের রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলাম। গলিতে হঠাৎ চোখে পড়ল ছোট একটি আসবাবের দোকান, নাম মা ফার্নিচার। দোকানটিতে ঢুকে আসবাবের নকশা দেখে বেশ অবাকই হলাম। কী সুন্দর নিখুঁত ফিনিশিং। এরপর যতবারই ওই রাস্তা দিয়ে গিয়েছি, ততবারই দোকানটি খেয়াল করতাম। প্রতিবারই চোখে পড়ত নতুন নকশার আসবাব। জানার আগ্রহ হলো, ছোট পরিসরের এই দোকানটিতে এই আসবাবগুলো তৈরি করে কে আর এই আসবাবের ক্রেতাই বা কারা।

গত ৮ নভেম্বর কথা হলো মা ফার্নিচারের স্বত্বাধিকারী মুহাম্মদ জামাল হোসেনের সঙ্গে। জানালেন, সাভার থাকেন তিনি। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পেছনেই রয়েছে তাঁর আসবাবের কারখানা। সেখানেই তিনি এসব আসবাব বানান। কখনো ক্রেতার পছন্দে আবার কখনো সমসাময়িক ধারা ধরে নিজের মনমতো আসবাব তৈরি করেন। এই কাজে আরেকজন কাঠমিস্ত্রি তাঁকে সহযোগিতা করেন।

আরও পড়ুন
কাস্টমাইজ আসবাব বানাতে চাইলে জামাল হোসেনের হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে ছবি পাঠাতে হবে
ছবি: সাবিনা ইয়াসমিন

মূলত মা ফার্নিচারের সাইনবোর্ডে থাকা নম্বরে জামাল হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করেন ক্রেতারা। দোকানে কোনো আসবাব পছন্দ হলে সরাসরি কিনতে পারবেন। আর কাস্টমাইজ আসবাব বানাতে চাইলে জামাল হোসেনের হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে ছবি পাঠাতে হবে। এরপর আসবাবের নকশা বা কী কাঠ ব্যবহার করা হবে তার ওপর নির্ভর করে দাম নির্ধারণ করা হয়।

জামাল হোসেন ১৯৮৬ সাল থেকে আসবাব তৈরির কাজ করছেন। বাংলাদেশের অনেক বড় বড় ব্র্যান্ডের সঙ্গে কাজ করেছেন। ডেলটা ফার্নিচারে পেশাগত কাজের শুরু। সবশেষে কাজ করেছেন বহু ফার্নিচারের সঙ্গে। একটা সময় ভাবলেন বয়স হয়েছে, এখন নিজের কিছু করা উচিত। এই ভাবনা থেকেই লালমাটিয়ার দোকানটি ভাড়া নেন। তিনি বলেন, ‘প্রথমে ভেবেছিলাম ডেকোরেটিভ জিনিসের দোকান দেব, পরে যেহেতু আসবাবের কাজের অভিজ্ঞতা আছে, ভাবনা পাল্টালাম। লালমাটিয়ায় তখন এই দোকানটি ভাড়া হচ্ছিল, দেখলাম ভাড়াও কম।’

মা ফার্নিচার দোকানটির বয়স এখন তিন বছর
ছবি: সাবিনা ইয়াসমিন

এভাবেই যাত্রা শুরু করে মা ফার্নিচার। দোকানটির বয়স এখন তিন বছর। আসবাবের মিনিমালিজম নকশা এখানকার বিশেষত্ব। রঙের ব্যবহার নজর কাড়বে। মূলত লালমাটিয়া ও ধানমন্ডির মানুষই এখানে আসবাব বানান। পাশাপাশি গুলশান-বনানী থেকেও আসে আসবাব তৈরির ফরমাশ। কেউ চাইলে বাসার অন্দরসজ্জার কাজও করিয়ে নিতে পারেন এখান থেকে।

বাজারে বড় বড় ব্র্যান্ডের আসবাবগুলোর আদলে আধুনিক নকশার আসবাব তৈরি করতে চাইলে এখানে দামটা অনেক কম পড়বে। কত কম জানতে চাইলে জামাল হোসেন বললেন, ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ দাম কমে আসবে। কারণ, তাঁর শোরুমভাড়া বা অন্যান্য খাতে খরচটা অনেক কম পড়ে। যে কারণে বাজেটের মধ্যেই আপনি আপনার পছন্দের আসবাব এখান থেকে তৈরি করতে পারবেন। আর এখান থেকে পছন্দের ফার্নিচার বানিয়ে নিতে চাইলে আপনাকে ১৫ দিনের মতো সময় অপেক্ষা করতে হবে।

আরও পড়ুন