এয়ারপোর্টের এই জনপ্রিয় ধারাগুলো কেন অনুসরণ করা উচিত নয়
টিকটক, ইনস্টাগ্রাম বা ইউটিউবে ইদানীং নানা রকম ‘ট্রাভেল হ্যাক’ দেখা যায়। কেউ বলেন বিমানবন্দরে পৌঁছাতে হবে একেবারে শেষ মুহূর্তে, কেউ আবার শিখিয়ে দেন কীভাবে অন্যের সিট দখল করা যায়, কেউবা পরামর্শ দেন দেরি করে চেক–ইন করলে নাকি বাড়তি আরামের সিট মিলবে। এসব দেখে অনেকেই উৎসাহিত হয়ে অনুসরণ করার চেষ্টা করেন, ভাগাভাগি করে নেন নিজেদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও। কিন্তু আসলেই কি কাজে দেয় এসব ‘হ্যাক’?
এয়ারপোর্ট থিওরি: সময় বাঁচাতে গিয়ে উল্টো ফ্লাইট মিস
সোশ্যাল মিডিয়ার বদৌলতে এখন ভ্রমণকারীদের মধ্যে আলোচিত বিষয় হলো ‘এয়ারপোর্ট থিওরি’। এর মোদ্দাকথা হলো, এয়ারপোর্টে যত কম সময় কাটানো যায়, ততই ভালো। অনেকেই তাই ফ্লাইটের নির্ধারিত সময়ের একেবারে শেষ মুহূর্তে পৌঁছানোর পরিকল্পনা করেন।
যদিও বলা হয়, বিদেশ গেলে অন্তত তিন ঘণ্টা আগে আর দেশের ভেতরে হলে দেড় থেকে দুই ঘণ্টা আগে বিমানবন্দর পৌঁছানো উচিত। তবে এয়ারপোর্ট থিওরি যাঁরা মেনে চলেন, বিমানবন্দরে তাঁরা প্রবেশ করেন বিমান ছাড়ার ১৫ থেকে ২০ মিনিট আগে। এতে ইমিগ্রেশনে লম্বা লাইনও থাকে না, যেহেতু অধিকাংশ যাত্রীদের কাজ আগেই শেষ হয়ে যায়।
কিন্তু বাস্তবতা হলো, এয়ারপোর্ট থিওরিতে ঝুঁকিই বেশি। চেক–ইন কাউন্টার কিংবা গেট ক্লোজ হয়ে গেলে যাত্রীদের আর ফ্লাইট ধরার সুযোগ থাকে না। এমনকি দেরিতে পৌঁছালে আপনার সিট অন্য কারও কাছে চলে যেতে পারে। আর একবার ফ্লাইট মিস করলে তৎক্ষণাৎ টিকিট পাওয়াও দুঃসাধ্য। তাই বিশেষজ্ঞদের মতে, এ ধরনের ট্রেন্ড বা ধারা এড়িয়ে চলাই ভালো।
সিট স্কোয়েটিং
হাস্যকর হলেও সত্যি, ভাইরাল এক ট্রেন্ড হলো ‘সিট স্কোয়েটিং’। ধরুন, বিমানে আপনি মাঝের সিটে বসেছেন, জানালার পাশের সিটটা দিব্যি খালি পড়ে আছে। ভাবলেন, চুপিচুপি সরে গিয়ে আরাম করে বসা যাক। হয়তো প্রথমে মনে হবে কৌশলটা দারুণ কাজ করেছে, যেহেতু আপনি আগেই দখল নিয়েছেন।
কিন্তু বাস্তবতা কিন্তু ভিন্ন। আসল যাত্রী এলেই আপনাকে সরে যেতে হবে, আর যদি না চান, তবে ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্ট এসে বাধ্য করবেন নিজের সিটে ফেরত আসতে। এতে কেবল বিব্রতকর পরিস্থিতিতেই পড়বেন না, কখনো কখনো বিমানবালারা এটিকে নিয়মভঙ্গ হিসেবে ধরতে পারেন।
তা ছাড়া বিমানে যাত্রীদের সঠিক সিটে বসানো হয় ওজন বণ্টনের হিসাব মেনেই। তাই বিমানে নিজের সিটে বসাই শ্রেয়, যদি বিব্রতকর পরিস্থিতি এড়িয়ে চলতে চান।
চেক–ইন চিকেন: লটারির মতো খেলা
এমনই আরেক অদ্ভুত আলোচিত ট্রাভেল হ্যাক ‘চেক–ইন চিকেন’। যত দেরিতে সম্ভব চেক–ইন করা। ধারণা করা হয়, শেষ মুহূর্তে হয়তো খালি থেকে যাওয়া ভালো কোনো সিট, আইল বা এক্সট্রা লেগরুমসহ সিট পেয়ে যাবেন। কারও কারও ক্ষেত্রে এটা সত্যি কাজও করে, হঠাৎই মিলতে পারে এক্সট্রা আরামদায়ক সিট।
অনেকে আবার আপগ্রেড হয়ে বিজনেস ক্লাসও পেয়ে যান। কিন্তু বেশির ভাগ সময় ভাগ্য সহায় হয় না। দেরিতে চেক–ইন করলে উল্টো সবচেয়ে খারাপ জায়গা, মাঝের সিট কিংবা একেবারে পেছনের সিটে পড়ে যাওয়ার আশঙ্কা বাড়ে। ফলে পুরো ভ্রমণটাই হয়ে ওঠে অস্বস্তিকর।
এককথায়, ‘চেক–ইন চিকেন’ আসলে লটারির মতো, কখনো জ্যাকপট, কখনো আবার ভ্রমণের শুরুতেই হতাশা।
সূত্র: ইউরো নিউজ