প্যাশন ফলের উপকারিতা
দক্ষিণ আমেরিকার প্যাশন ফল এখন বাংলাদেশেও চাষ হচ্ছে, পাওয়া যাচ্ছে বাজারে। তবে দামটা চড়া। এর স্বাদ বেশ আলাদা। পুষ্টিগুণে এই ফল কি দেশি ফলের চেয়ে এগিয়ে? এ বিষয়ে গভর্নমেন্ট কলেজ অব অ্যাপ্লাইড হিউম্যান সাইন্সের খাদ্য ও পুষ্টিবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক ফাতেমা আকতারের সঙ্গে কথা বলে লিখেছেন রাফিয়া আলম।
কী আছে প্যাশন ফলে
প্যাশন ফলে আছে ভিটামিন সি, ভিটামিন এ আর ভিটামিন বি কমপ্লেক্স। ভিটামিন বি কমপ্লেক্সের ভেতর আলাদাভাবে বলতে হয় নায়াসিন, রিবোফ্লাভিন এবং ফোলেটের কথা। এতে আরও আছে পটাশিয়াম, ফসফরাস, ম্যাগনেশিয়াম এবং খানিকটা আয়রন। প্যাশন ফলে অনেকটা আঁশ থাকায় ওজন কমাতে সহায়ক।
প্যাশন ফলে থাকা প্রতিটি উপাদানই সুস্থতার জন্য অপরিহার্য। এতে থাকা অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট উপাদানগুলো দেহের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে, প্রদাহ কমাতে, দেহকে ভেতর থেকে সতেজ রাখতে এবং রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখতে উপকারী এই ফল।
হৃৎপিণ্ড, চোখ, পেশি এবং স্নায়ু ভালো রাখতেও প্যাশন ফল খেতে পারেন। দেহে স্বাভাবিকভাবে রক্ত তৈরিতে, ত্বকের তারুণ্য ধরে রাখতে সাহায্য করে প্যাশন ফল। এ ধরনের ফল খেলে ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা স্বাভাবিক থাকে, বলিরেখা কম হয়।
ফলটি সহজে হজম হয়।
তাই এই ফল খেলে অ্যাসিডিটির ঝুঁকি নেই। প্যাশন ফলে থাকা আঁশ আমাদের অন্ত্রে থাকা উপকারী ব্যাকটেরিয়াদের জন্য পুষ্টির উৎস হিসেবে কাজ করে। তাই পরোক্ষভাবে পেটের সুস্থতায়ও ভূমিকা রাখে এই ফল।
দেশি ফলের তুলনায় কেমন
প্যাশন ফল পুষ্টিকর, তবে দেশে এর দাম অনেক। এ ছাড়া দেশের বাইরে থেকে আমদানি করা হলে এই ফল উৎপাদনের বহুদিন পর আমাদের হাতে পৌঁছাবে। এই দীর্ঘ সময়ে ফলটির পুষ্টি উপাদান কিছুটা কমেও যেতে পারে। অন্যদিকে নানা রকম দেশি ফল থেকে আপনি এসব পুষ্টি উপাদান পেতে পারেন খুব ভালোভাবে। কাজেই পুষ্টি উপাদান পেতে প্যাশন ফল যে খুব জরুরি, তা কিন্তু নয়। বরং কেবল স্বাদের বৈচিত্র্য আনতে মাঝেমধ্যে এই ফল খাওয়া যেতে পারে।
যেভাবে খেতে পারেন প্যাশন ফল
প্যাশন ফল বীজসহই খাওয়া যায়। কেউ সরাসরি খান এই ফল, কেউ খান দুধে মিশিয়ে। স্মুদিও তৈরি করা যায় প্যাশন ফল দিয়ে। টক দইয়ের সঙ্গে মিলিয়ে একটা ফলাহারও করা যেতে পারে।
তবে ডায়াবেটিস এবং কিডনির রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির জন্য এই ফল পুরোপুরি নিরাপদ না-ও হতে পারে। বিশেষজ্ঞের পরামর্শ ছাড়া তাঁদের এ ধরনের ফল খাওয়া উচিত নয়।