জন সিনা কেন রেসলিং থেকে বিদায় নিচ্ছেন
দুই দশকের বেশি সময় ডব্লিউডব্লিউই-র ‘পোস্টার বয়’ জন সিনা। ৪১তম রেসলম্যানিয়ার মেইন ইভেন্ট জিতে নিয়েছেন কোডি রোডসকে হারিয়ে। ১৭ বার ডব্লিউডব্লিউই ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপ জিতে করেছেন বিশ্ব রেকর্ড। শীর্ষে থেকেও রেসলিং ক্যারিয়ারের ইতি টানছেন কেন?
বেশ কয়েক বছর ধরেই হলিউডে অভিনয় করছেন জন সিনা। রেসলিং থেকে হলিউডে আসা তারকাদের মধ্যে জন সিনাই নজর কেড়েছেন আলাদাভাবে। বিশেষত কমেডি ঘরানার সিনেমায় জনপ্রিয়তায় নিজেকে ছাড়িয়ে যাচ্ছেন প্রতিনিয়ত। সামনেই মুক্তি পেতে যাচ্ছে তাঁর নতুন সিনেমা ‘হেডস অব স্টেট’। এই সিনেমার প্রচারণার জন্য সম্প্রতি ‘গুড মর্নিং আমেরিকা’ অনুষ্ঠানে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে কথা বলেছেন নিজের অবসর নিয়ে।
জন সিনা বলেছেন, ‘এত বছর যখন একটা খেলার মধ্যে থাকবেন, তখন আপনি নিজেই বুঝতে পারবেন, আপনার শরীর ছেড়ে দিচ্ছে। তখন নিজেই নিজেকে প্রশ্ন করবেন, এটার সঙ্গে ঠিক কত দিন লড়ব? আমার শরীর এখনো ভালোই আছে। চাইলে আরও কিছুদিন লড়তেও পারব। কিন্তু আমার কাছে মনে হয়, তরুণদের জন্য মঞ্চটা ছেড়ে দেওয়া উচিত।’
ভক্তদের যে কথা দিয়েছিলেন
তবে জন সিনা সিদ্ধান্তটা হুট করে নেননি। নিজের বিদায়ের গল্পটা লিখে রেখেছেন ছয় মাস আগেই। জন সিনার ভাষায়, ‘আগেই বলেছি, অন্তত ৩৬টি (যুক্তরাষ্ট্রের) রাজ্যে পারফর্ম করতে চাই। তখন অনেকেই বিশ্বাস করেনি। তবে আমার মনে হয়, বছরের অর্ধেক পথ পেরিয়ে আমি তার অনেকটাই শেষ করতে পেরেছি। ডিসেম্বরেই আমার রেসলিং ক্যারিয়ারে ইতি টানছি।’
তাই বলে জন সিনা যে ডব্লিউডব্লিউইতে ফেরার সব সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন, তা নয়। আবার ভক্তদের আশাও দিচ্ছেন না, ‘২৫ বছরের ক্যারিয়ারে ভক্তদের কাছ থেকে অনেক কিছু পেয়েছি। এখন আমি ওই দর্শকসারিতে বসে উপভোগ করতে চাই। নিজের লাভের খাতিরে ভক্তদের সঙ্গে এত বছরের সম্পর্ক নষ্ট করতে চাই না। যদিও রেসলিংয়ে কেউ কখনো “বিদায়” নেয় না, তবুও আমি আমার ইতি টানতে চাইছি ডিসেম্বরে।’
ডিসেম্বরে বিদায়ী ম্যাচ খেলার আগে আর মাত্র ১৫ বার রিংয়ে দেখা যাবে জন সিনাকে। তাঁর বক্তব্য, ‘আমি যখন শুরু করেছিলাম, তখন আমার বয়স ছিল মাত্র ২৩ বছর। আমার বয়স এখন ৪৮। ভক্তদের কথা দিয়েছিলাম, যদি নিজের সর্বোচ্চটা দিতে না পারি, তাহলে জোর করে থাকব না। আমি এখন জীবনের সে পর্যায়ে পৌঁছে গেছি।’
হলিউডে নিয়মিত হবেন
রেসলিং রিং ছাড়লেও হলিউডে জন সিনাকে দেখা যাবে নিয়মিতই। ২ জুলাই মুক্তি পেয়েছে তাঁর নতুন সিনেমা ‘হেডস অব স্টেট’। এ ছাড়া গত কয়েক বছরে প্রশংসা কুড়িয়েছেন ‘ট্রেইনরেক’, ‘বাম্বলবি’, ‘এফ৯’ ও ‘ফাস্ট এক্স’-এর মতো সিনেমায়। তবে সবচেয়ে বেশি প্রশংসা কুড়িয়েছেন ‘দ্য সুইসাইড স্কোয়াড’ সিনেমা ও ‘পিসমেকার’ টিভি সিরিজে অভিনয় করে।
একনজরে জন সিনা
পুরো নাম: জন ফেলিক্স অ্যান্থনি সিনা জুনিয়র
জন্ম: ২৩ এপ্রিল ১৯৭৭, ম্যাসাচুসেটস, যুক্তরাষ্ট্র
পেশা: পেশাদার রেসলার, অভিনেতা, টেলিভিশন উপস্থাপক, র্যাপার
উচ্চতা: ৬ ফুট ১ ইঞ্চি
ওজন: প্রায় ১১৪ কেজি
ক্যারিয়ারের গুরুত্বপূর্ণ দিক
জন সিনা ডব্লিউডব্লিউই–র ইতিহাসে সবচেয়ে জনপ্রিয় ও সফল রেসলারদের একজন।
ডব্লিউডব্লিউই ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপ জিতেছেন ১৭ বার, যা বিশ্ব রেকর্ড।রেসলিং ছাড়াও অভিনয় করেছেন ‘দ্য মেরিন’, ‘বাম্বলবি’, ‘এফ৯’, ‘পিসমেকার’–এর মতো জনপ্রিয় সিনেমা ও টিভি সিরিজে।
রিং পার্সোনালিটি ‘নেভার গিভ আপ’–এর জন্য বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় জন সিনা।
তাঁর বিখ্যাত ক্যাচফ্রেজ ‘ইউ কান্ট সি মি!’
জনসেবামূলক কাজ
সুযোগ পেলেই অসুস্থ শিশুদের জন্য কাজ করেন জন সিনা, বিশেষ করে ‘মেক আ উইশ ফাউন্ডেশন’–এর হয়ে সবচেয়ে বেশি (সাড়ে ছয় শর বেশি) শিশুর ইচ্ছা পূরণ করেছেন।
মানবিক ও প্রেরণাদায়ী ব্যক্তিত্বের কারণে ভক্তরা তাঁকে শুধু রেসলার নয়, রোল মডেল হিসেবেও দেখে।
সূত্র: ইটস রেসলিং, এন্টারটেইনমেন্ট উইকলি