‘ওভারথিঙ্কার’দের সঙ্গে ডেট করার এত সুবিধা

‘ওভারথিঙ্কিং’ থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায় খুঁজতে গিয়েও কেউ কেউ অতিচিন্তিত হয়ে পড়েন। তবে ওভারথিঙ্কার হওয়া মানেই যে খারাপ, তা কিন্তু নয়। বরং এর আছে বেশ কিছু ইতিবাচক দিক। সমীক্ষা জানাচ্ছে, সঙ্গী হিসেবে ওভারথিঙ্কাররা অতুলনীয়। তাঁরা সাধারণত শক্তিশালী ও গভীর আবেগের অধিকারী। বিশ্লেষণধর্মী, অত্যন্ত সহানুভূতিশীল ও সমস্যা সমাধানে দক্ষ। চলুন, চট করে জেনে নেওয়া যাক, ওভারথিঙ্কারদের সঙ্গে ডেট করার কিছু সুবিধা।

সমীক্ষা জানাচ্ছে, সঙ্গী হিসেবে ওভারথিঙ্কাররা অতুলনীয়
ছবি ও গ্রাফিকস: প্রথম আলো

১. দারুণ বোঝাপড়া

ওভারথিঙ্কাররা কোনো কিছু বিভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখেন, আবেগ বিশ্লেষণ ও কল্পনায় প্রচুর সময় ব্যয় করেন। যেকোনো পরিস্থিতিতে নিজেকে কল্পনা করেন তাঁরা। তাই তাঁরা সাধারণত অত্যন্ত সহানুভূতিশীল হন। তাঁরা ভালো শ্রোতা, অন্যের চাপ বুঝতে পারেন এবং ইমোশনাল সাপোর্ট দেওয়ার বেলায় দারুণ। এসব কারণে এ রকম ব্যক্তির সঙ্গে আপনার বোঝাপড়াও দারুণ জমার সম্ভাবনা বেশি।

২. আগাম প্রস্তুতি থাকে

বিভিন্ন সম্ভাবনা ভেবে দেখা ওভারথিঙ্কারদের অভ্যাস। ফলে কোনো বেকায়দা অবস্থায় পড়ার আগেই সে অবস্থা কীভাবে কাটিয়ে ওঠা যায়, সবচেয়ে সুন্দরভাবে সামাল দেওয়া যাবে, সেসব ভাবনা তাঁরা আগেই ভেবে রাখেন। আর সেই প্রস্তুতিও তাঁদের থাকে। এ কারণেই ওভারথিঙ্কাররা সাধারণত সমস্যা সমাধানে অসাধারণ।

আরও পড়ুন

৩. সারপ্রাইজ

ওভারথিঙ্কাররা সাধারণত খুঁটিনাটি পরিকল্পনা করেন। সারপ্রাইজ দেওয়া তাঁদের খুবই পছন্দের কাজ। আপনি কিসে সবচেয়ে বেশি খুশি হবেন, প্রতিনিয়ত তাঁদের ভাবনায় সেটি থাকে। জন্মদিন বা আপনার পছন্দ (যেমন আপনি কেমন কফি পছন্দ করেন, কী রঙের শাড়ি বা শার্ট বেশি পরেন) মনে রাখেন।

৪. তাঁরা সম্পর্ককে সর্বোচ্চ প্রাধান্য দেন

ওভারথিঙ্কাররা আপনার সঙ্গে সম্পর্কে জড়ানোর আগে সম্ভাব্য নানা দিক ভেবে দেখেন। তাই একবার আপনাকে বেছে নিলে বা ‘হ্যাঁ’ বললে সেটাকে তাঁরা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেন। সাধারণত তাঁরা খুবই বিশ্বস্ত ও নিবেদিত সঙ্গী হয়ে ওঠেন। আপনার অনুভূতিকে অগ্রাধিকার দেন। আর সম্পর্কটিকে প্রতিনিয়ত শক্তিশালী করার চেষ্টা করেন।

৫. আপনাকে ‘স্পেশাল ফিল’ করান  

ওভারথিঙ্কাররা দারুণ পর্যবেক্ষক। আপনার মেজাজ বা দৈনন্দিন আচরণের ক্ষুদ্র পরিবর্তনও লক্ষ করেন। অনেক সময় আপনাকে সেসব আলাদা করে বলতেও হয় না। তাঁরা পর্যবেক্ষণ করে আর দুইয়ে দুইয়ে চার মিলিয়ে বুঝে নেন। এই মনোযোগ একজন সঙ্গীকে সত্যিই গুরুত্বপূর্ণ, মূল্যবান ও দৃশ্যমান বোধ করায়।‘

ওভারথিঙ্কাররা একবার সম্পর্কে জড়ানোর পর চট করে সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসেন না
ছবি: প্রথম আলো

৬. বস্তুগত উপহারের চেয়ে আবেগকে বেশি মূল্যায়ন করেন

ওভারথিঙ্কাররা সাধারণত আন্তরিক প্রচেষ্টা, স্থিরতা, ক্ষমতাশীলতা, গভীরতা, ভালোবাসাকে বস্তুগত উপহার বা বড় চমকের চেয়ে বেশি গুরুত্ব দেন। এই অর্থবহ আচরণ সম্পর্ককে আরও গভীর ও অর্থবহ করে তোলে।

৭. শেষ পর্যন্ত পরিষ্কার যোগাযোগ

ওভারথিঙ্কাররা বার্তা পাঠানোর আগে বারবার ভেবে দেখেন। একটা বার্তা পাওয়ার পরও বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে তা বিশ্লেষণ করেন। তাঁরা নিজের অনুভূতি সম্পর্কে পরিষ্কার ও খোলামেলা ধারণা রাখেন। এ কারণেই তাঁরা ‘ক্যাজুয়াল’ সম্পর্কে বা ‘সিচুয়েশনশিপে’ জড়ান না। তাঁরা একটা সম্পর্কের ভবিষ্যৎ ভালোভাবে যাচাই করে দেখেন। হুট করে সম্পর্কে জড়ানো তাঁদের ধাতে নেই।

আবার একবার সম্পর্কে জড়ানোর পর চট করে সম্পর্ক থেকে বেরিয়েও আসেন না। তাঁরা সম্পর্কের ব্যাপারে স্বচ্ছ ধারণা রাখেন। যেকোনো বিষয় নিয়ে খোলামেলা আলাপে বিশ্বাসী। এই অভ্যাস তাঁদের অনুমাননির্ভর পরিস্থিতি এড়াতে সাহায্য করে।
আর শেষ পর্যন্ত তাঁরা পরিষ্কার যোগাযোগ চালিয়ে যান। সম্পর্ক যদি শেষ করতেই হয়, সেটাও যৌক্তিক আলাপের মধ্য দিয়ে, বলেকয়ে তাঁর নিজের অবস্থান যথাসম্ভব পরিষ্কার করে শেষ করেন।

শেষ কথা

ওভারথিঙ্কারদের ‘অতিরিক্ত সক্রিয় মন’ আসলে সম্পর্কে গভীর যত্নশীলতারই পরিচয়। ধৈর্য ও আশ্বাসের সঙ্গে তাঁরা অত্যন্ত অর্থপূর্ণ, গভীর, পরিপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলতে পারেন। তাই এর পর থেকে ওভারথিঙ্কারদের ‘অবহেলা’ করবেন না! আর আপনি নিজেই যদি ওভারথিঙ্কার হয়ে থাকেন, তাহলে অন্তত সম্পর্কের বেলায় নিজের ওপর আস্থা রাখতে দ্বিধা করবেন না।

সূত্র: মিডিয়াম

আরও পড়ুন